সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি ৭.২৫%। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ১০.৮১%। সোমবার প্রকাশিত জুনের মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে ধরা পড়ল এই বৈপরীত্যই।
শাক-সব্জি, আলু-চাল-গমের চড়া দামের জেরে মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা। তা সত্ত্বেও জ্বালানি ও শিল্পপণ্যের দর কমার জেরে পাঁচ মাসের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নামল পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি। আর, এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ মাসের শেষে তার ঋণনীতি ফিরে দেখতে গিয়ে সুদ কমানোর পথে হাঁটবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাও নিজেই। তিনি বলেন, “নিরাপদ সীমার অনেকটাই উপরে মূল্যবৃদ্ধির হার।”
আগামী দু’এক সপ্তাহে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত না-হলে খাদ্য সামগ্রীর দাম আরও বাড়তে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্র। তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাবে কি না, সেই চাবিকাঠি আপাতত বর্ষার হাতেই বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। অর্থ প্রতিমন্ত্রী নমো নারায়ণ মীনাও সেই ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, “বর্ষার হাত ধরে খাদ্যের জোগান বাড়লে দাম কমবে।” সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি কমার এই প্রবণতা বজায় থাকবে বলেও তিনি মনে করেন। তবে, যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ার মতে, ‘পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগের’। তা সত্ত্বেও শিল্পের ঋণের খরচ কমাতে সুদ কমানোর দাবি জানিয়েছেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা।
মূলত বর্ষা এখনও প্রত্যাশা পূরণ না-করা এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক শেষ পর্যন্ত সুদ কমাবে না এই আশঙ্কা ১১০ পয়েন্ট টেনে নামায় সেনসেক্সকেও। টানা চার দিনে ৫১০ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স ছুঁয়েছে ১৭,১০৩.৩১। তার জেরে ডলারে টাকাও ১৬ পয়সা পড়ে যায়। দিনের শেষে ১ ডলারের দাম ছিল ৫৫.৩১ টাকা। যদিও লেনদেনের শুরুতে টাকা বেড়ে গিয়েছিল ৪০ পয়সা।
মে মাসে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৭.৫৫%। গত বছরের হার ৯.৫১%। সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি হিসাবে খাদ্য সামগ্রীর গুরুত্ব ১৪.৩%। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মে মাসের ১০.৭৪% থেকে বেড়ে ছুঁয়েছে ১০.৮১%। গত বছরের হার ৭.৬৪%। বার্ষিক ভিত্তিতে চাল বেড়েছে ৬.৭০%, গম ৭.৪৬%, ডাল ৬.৮২%, শাক-সব্জি ২০.৪৮%। তবে শিল্পপণ্যের দর কমেছে ২.৯%, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ২.৫৮%। |