বিয়ের পিঁড়ি থেকে এক নাবালিকাকে উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার সকালে কালনার রুকুসপুর গ্রামের ঘটনা। বিয়ের আসর থেকেই বর ও তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা উত্তরপ্রদেশের মুরাদাবাদ জেলার ফজলপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুকুসপুর গ্রামের বাসিন্দা পরেশ মালিকের মেয়ে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। সোমবার সকালে মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন পেশায় খেতমজুর পরেশ। পাত্র উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বীর সিংহ। বাবা রাজেশ্বর সিংহের সঙ্গে বিয়ের আসরে হাজির হন বীর। বিয়েও শুরু হয়ে যায়। এমন সময়ে সেখানে এসে পৌঁছয় পুলিশ। নাবালিকা বিবাহ আইনবিরুদ্ধ জানিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় বীর ও রাজেশ্বরকে।
পরেশবাবু জানান, তাঁর মেয়ের বয়স ১৫ বছর। পুলিশের অবশ্য দাবি, চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীর বয়স বছর বারো। পুলিশ উদ্ধার করার পরে মেয়েটি জানায়, এ দিন যে তার বিয়ে, তা সে আগে জানত না। তার কথায়, “সকালে স্কুলে যেতে চাইলে মা আটকায়। বলে, বিয়ে হবে।” পুলিশের কাছে এই নাবালিকার দাবি, স্কুলে পড়তে চায় সে। |
পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, পাশের গ্রাম জয়পুরের এক তরুণীর বিয়ে হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। তার মারফতই এই বিয়ের কথাবার্তা পাকা হয়। কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়ের অভিযোগ, “সকালে দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে খবর পাই, প্রাথমিক স্কুলের একটি ছাত্রীর জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর বিনিময়ে তার পরিবারকে পাত্রপক্ষ কয়েক হাজার টাকাও দিচ্ছে বলে জানতে পারি। তার পরেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়।” প্রণববাবুর মতে, “আমাদের অনুমান, অসৎ উদ্দেশেই মেয়েটিকে বিয়ে করে নিজেদের এলাকায় নিয়ে যেতে চাইছিল ওই যুবক ও তার পরিবার।” পরেশবাবুরা অবশ্য পাত্রপক্ষের কাছে টাকা নেওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি। পুলিশের কাছে তাঁরা দাবি করেন, ভাল পাত্র পাওয়ায় মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছিলেন।
কালনা মহকুমার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তার বাবা-মাকেও ধরা হবে।” ধৃত দু’জনকে মঙ্গলবার কালনা আদালতে তোলা হবে। |