আগামী ৪ অগস্ট ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) গঠন হবে ধরে নিয়ে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তবে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ জিটিএ-র প্রথম চেয়ারপার্সন হবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সরকারি সূত্রের খবর, জিটিএ ভোটের ফল প্রকাশ হবে ২ অগস্ট। তার পরে জিটিএ গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার কথা। সাধারণত, এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি হতে সপ্তাহখানেক লাগে। কিন্তু মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, জিটিএ গঠনের কাজে যাতে দেরি না হয়। সে জন্য ফল প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারির চেষ্টা করছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। ইতিমধ্যে জিটিএ-গঠন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণও জানিয়ে রেখেছেন মোর্চা নেতারা।
প্রাথমিক ভাবে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো উদ্বোধনের জন্য ১৮ অগস্ট ফের উত্তরবঙ্গে যাবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মহাকরণ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীই অগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জিটিএ গঠনের কাজ সেরে ফেলতে চান এবং জিটিএ গঠনের অনুষ্ঠানেও হাজির থাকতে চান। প্রশাসনিক বাধ্যবাধ্যকতার কারণেই পর পর দু’সপ্তাহে মহাকরণ ছেড়ে উত্তরবঙ্গে সফরে যাওয়া হয়তো সম্ভব হবে না মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে। সব দিক বিবেচনা করেই ৪ অগস্ট যাতে জিটিএ-র শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়, সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র দফতরকে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো কাজও চলছে। পাশাপাশি, স্থির করা হয়েছে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো উদ্বোধন করা হবে ১ সেপ্টেম্বর। দার্জিলিঙের জেলাশাসক তথা জিটিএ-র নির্বাচন অফিসার সৌমিত্র মোহন বলেছেন, “জিটিএ ভোটের ফল প্রকাশ হবে ২ অগস্ট। সঙ্গে সঙ্গেই জিটিএ গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। সব ঠিক থাকলে, ৪ অগস্ট জিটিএ গঠন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।”
জিটিএ গঠন নিয়ে তৎপরতা রয়েছে মোর্চার অন্দরেও। দলের সাধারণ সমর্থক এবং নেতাদের বড় অংশ চান, দলের মতোই জিটিএ-রও প্রধান হিসেবে হাল ধরুন গুরুঙ্গ। যদিও মোর্চার একাংশ মনে করছেন, দলের জন্য বেশি সময় দেওয়ার কথা মাথায় রেখে গুরুঙ্গ তাঁর স্ত্রী আশা দেবীকেও জিটিএ-র প্রথম চেয়ারপার্সন করতে পারেন। মোর্চা সূত্রের খবর, শীঘ্রই কেন্দ্রীয় কমিটির সভা ডেকে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দল।
পাশাপাশি, জিটিএ-র সদর দফতর কোথায় হবে, তা নিয়েও মোর্চার মধ্যে চলছে আলোচনা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, লালকুঠিতে জিটিএ-র অফিস থাকলেও মূল অফিস অন্যত্র হবে। কারণ, গোর্খা পাবর্ত্য পরিষদের (ডিজিএইচসি) তুলনায় জিটিএ-র সদস্য সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। মোর্চার প্রচার সচিব তথা কালিম্পঙের বিধায়ক হরকাবাহদুর ছেত্রীর কথায়, “জিটিএ-এর মূল অফিস কোথায় হবে তা শীঘ্রই ঠিক হয়ে যাবে। লালকুঠিতে ওই অফিস হবে বলে মনে হয় না। সে জন্য দার্জিলিং শহরে ডিজিএইচসি-র আওতায় থাকা লুই জুবিলি ভিলার কথা ভাবা হচ্ছে।” মোর্চা সূত্রের খবর, দলের শীর্ষ নেতারা চান শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হোক দার্জিলিঙের ‘গোর্খা রঙ্গমঞ্চ’-এ। |