|
|
|
|
পিটিয়ে পুলিশে দিলেন ক্লাবের ছেলেরা |
যৌনপল্লিতে বোন ও পাঁচ স্ত্রীকে বেচে হাজতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হাসনাবাদ |
কাজের প্রলোভন দেখিয়ে গত বছর বোনকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দিয়েছিল হাড়োয়ার হাফিজুল গাজি।
সেই শুরু। একে একে পাঁচ স্ত্রী এবং আরও কিছু মহিলা-কিশোরীকে ভিন্ রাজ্যের যৌনপল্লিতে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। হাতে টাকা আসছিল ভালই। কিন্তু, হাসনাবাদের পার ভবানীপুরের এক কিশোরীকে বিক্রি করে ফেঁসে গেল বছর পঁয়ত্রিশের হাফিজুল। বারাসতের দক্ষিণ কাজিপাড়া এলাকায় ষষ্ঠ স্ত্রীকে নিয়ে ঘর বেঁধেছিল ওই যুবক। পাড়ার ক্লাবের ছেলেরা শনিবার হাফিজুলকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেন।
পুলিশের দাবি, জেরায় তাদের কাছে হাফিজুল অপরাধের কথা কবুল করেছে। এমনকী, তার বাবাও ছেলের নামে
|
ধৃত হাফিজুল
—নিজস্ব চিত্র |
অভিযোগ করেছেন। রবিবার হাফিজুলকে বসিরহাট এসিজেএমের এজলাসে তোলা হলে তার ৬ দিন পুলিশ হেফাজত হয়। ষষ্ঠ স্ত্রীকেও সে বিক্রির করার ছকে ছিল বলে পুলিশের ধারণা। এ দিন আদালত চত্বরে হাফিজুল অবশ্য দাবি করে, “সংসারে খুব অভাব ছিল। কোনও কাজ ছিল না। স্বামী পরিত্যক্তা বোনকে নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছিলাম। অনেকে ওকে উত্ত্যক্ত করত। বন্ধুর পরামর্শে ওকে বেঙ্গালুরু নিয়ে যাই। বন্ধু ৮০ হাজার টাকায় বোনকে বিক্রি করে আমাকে ৩ হাজার টাকা দিয়েছিল। পরে দেখি, মেয়েদের অন্য রাজ্যে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে পারলেই সহজে টাকা পাওয়া যায়। তাই এই ব্যবসায় লেগে যাই।” তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, হাফিজুল নারী পাচার চক্রে জড়িত। সেই চক্রের বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, হাড়োয়ার পুকুরিয়া গ্রাম থেকে কয়েক বছর আগে পার ভবানীপুরে ডেরা বাঁধে হাফিজুল। কিছু দিনের মধ্যে তার সঙ্গে আলাপ হয় দত্তপুকুরের বাসিন্দা চন্দন ধরের। পুলিশের দাবি, জেরায় হাফিজুল জানিয়েছে, চন্দনের পরামর্শ মতোই বোনকে কাজের টোপ দিয়ে সে বেঙ্গালুরুতে বিক্রি করে। ফিরে এসে সে বসিরহাট, হাবরা, দত্তপুকুর, বারাসত ও বনগাঁয় বিয়ে করে। তবে, কোনও স্ত্রীকেই সে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেত না। কিছু দিন সংসার করে তাঁদের যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দিত।
গত বছর ১২ নভেম্বর পার ভবানীপুরের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী নিখোঁজ হয়। একই সঙ্গে নিখোঁজ হয় ওই গ্রামের এক মহিলা ও তাঁর মেয়ে। এর কিছু দিনের মধ্যে বেঙ্গালুরু থেকে মেয়ের ফোন পান হাফিজুলের বাবা। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে আনেন তিনি। ছেলের নামে থানায় অভিযোগও করেন। বেগতিক বুঝে হাফিজুল পার ভবানীপুর ছাড়ে। তার বাবা বা বোনের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
মাস তিনেক আগে সপ্তম শ্রেণির সেই ছাত্রী বাড়িতে ফোন করে জানায়, গুজরাতে তাকে আটকে অত্যাচার চালানো হচ্ছে। তাকে উদ্ধার করে পুলিশ জানতে পারে, এই ঘটনায় হাফিজুল এবং পার ভবানীপুরের সেই মা-মেয়ে যুক্ত। এর পরেই উত্তর ২৪ পরগনার এসপি চম্পক ভট্টাচার্য হাফিজুলকে ধরার নির্দেশ দেন। |
|
|
|
|
|