শহরের প্রাণকেন্দ্রে কৃষ্ণনগরের প্রধান ডাকঘরের পাঁচিলের দেওয়াল ঘেঁসে নির্মিয়মাণ ১১০টি দোকানঘরকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই এলাকায় ফুটপাথের উপরে ছিল বেশ কয়েকটি অস্থায়ী দোকানঘর। সম্প্রতি সেগুলি ভেঙে স্থায়ী দোকানঘর তৈরি করছে কৃষ্ণনগর পুরসভা। নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে ওই পাকা দোকানঘরগুলি ওই অস্থায়ী দোকানগুলির মালিকদের হাতেই তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা। ডাকঘর কর্তৃপক্ষ অবশ্য সেই নির্মাণের কাচে আপত্তি তুলেছেন। তাঁরা জেলাশাসক ও পুরপ্রধানকে সেই মর্মে চিঠিও দিয়েছেন। তারপরেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার জেলাশাসক ওই নির্মাণকাজ বন্ধ করতে ও পাশাপাশি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরবিন্দ ঘোষ বলেন, “ডাকঘর কর্তৃপক্ষ ওই নির্মাণ কাজে আপত্তি জানিয়ে আমাদের চিঠি দিয়েছেন। পুরো বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মহকুমাশাসককে বলা হয়েছে ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিতে।” মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, “সোমবারেই আমি পুরপ্রধানকে লিখিত ভাবে কাজ বন্ধ করতে বলব। তারপরেও যদি কাজ চলে তা হলে ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হব। পাশাপাশি পূর্ত দফতরকেও চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হবে।” |
ডাক বিভাগের নদিয়া উত্তর ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের পাঁচিল ঘেঁসে ওই দোকান ঘর তৈরি করা হলে বাইরে থেকে আমাদের দফতরটি আর দেখাই যাবে না। তাতে আমাদের গ্রাহকেরা বিপাকে পড়বেন। তাঁদের হয়রানি বন্ধ করতেই আমরা ওই নির্মাণকাজে বাধা দিয়েছি।” তিনি বলেন, “তা ছাড়া, আমাদের পাঁচিলের সঙ্গে একটুও ফাঁক না রেখে ওই নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। তাতে আমাদের পাঁচিলের ক্ষতি হবে। জেলাশাসক ও পুরপ্রধানকে সে কথা জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।” তবে পুরসভা ডাক বিভাগের এই দাবি মানতে নারাজ। কংগ্রেসের পুরপ্রধান অসীম সাহা বলেন, “কাজ বন্ধের কোনও নির্দেশ এখনও আমরা পাইনি। ফলে সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে এইটুকু বলব যে, ওই নির্মাণে বাধা দেওয়ার কোনও এক্তিয়ারই নেই ডাক বিভাগের। কারণ জমিটা তাদের নয়।” অসীমবাবুর বক্তব্য, “ডাক বিভাগ যে কথা বলছে, তা যদি মানতে হয় তা হলে কোনও কে তলা বাড়ির সামনেই দোতলা বাড়ি করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। এমনটা কী সম্ভব? কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই ১১০টি পরিবারকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে এই কাজে বাধা দিচ্ছে।” জেলার পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ অফিসার বিজন দাসের বক্তব্য, “প্রাথমিক ভাবে আমরা জেনেছি, রাস্তাটি আমাদের হলেও যে জমিতে নির্মাণ কাজ হচ্ছে সেটা পুরসভারই জমি। তবে নিশ্চিত হতে আরও ভাল ভাবে সব দিক খতিয়ে দেখতে হবে।” |