আট বছর পর অলিম্পিক মঞ্চে নামার আগে একটা ব্যাপারের উপর সব থেকে বেশি জোর দিচ্ছে ভারতীয় হকি দল। মানসিক কাঠিন্য। সেই মানসিক কাঠিন্য বাড়ানোর উদ্দেশে ভারতীয় হকি খেলোয়াড়দের অস্ত্র এখন যোগ ব্যায়াম এবং ধ্যান।
এই মুহূর্তে স্পেনে রয়েছে ভারতীয় হকি দল। সেখান থেকে অধিনায়ক ভরত ছেত্রী বলেছেন, “অলিম্পিক হল গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। আট বছর বাদে আমরা এখানে খেলতে নামছি। স্বাভাবিক ভাবেই খেলোয়াড়দের উপর বাড়তি চাপ থাকবে। সে জন্য আমরা দিনে ৪০ মিনিট করে যোগ ব্যায়াম করছি যাতে আমাদের মানসিক শক্তি বাড়ে।” শুধু যোগই নয়, কী ভাবে অলিম্পিকের জন্য তৈরি হচ্ছে ভারতীয় হকি দল, তারও একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন ভরত। বলেছেন, “আমরা রোজ কোচ মাইকেল নবস এবং ট্রেনার ডেভিড জনের সঙ্গে বসছি। সেখানে ওরা ওদের অভিজ্ঞতার কথা আমাদের বলছে। জন আরও একটা জিনিস শুরু করেছে। মেন্টাল ভিসুয়ালাইজেশন সেশন। সেখানে আমরা ম্যাচের কিছু বিশেষ দৃশ্য কল্পনা করে নিচ্ছি। ব্যাপারটা অনেকটা ধ্যানের মতো।”
এই ‘মেন্টাল ভিসুয়ালাইজেশন সেশন’ গত এক মাস ধরে চলছে। “প্রতি ম্যাচের আগে আমরা এটা করছি। সবাই শুয়ে পড়ছি প্রথমে। তারপর জাগতিক ব্যাপার থেকে নিজেদের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে নিচ্ছি। তারপর জন আমাদের ম্যাচ পরিস্থিতির দৃশ্য কল্পনা করতে বলছে। প্রতিপক্ষ অনুযায়ী সেই ছবি বদলে যাচ্ছে। ব্যাপারটা দারুণ কাজে দিচ্ছে। কল্পিত পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হচ্ছে, সেটার উপর ভিত্তি করে আমরা স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছি, টিম গড়াও হচ্ছে,” ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভরত।
অধিনায়ক জানেন, মিশন লন্ডন তাঁদের কাছে অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। তবে সেই চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত হকি দল। যে দলের নতুন মন্ত্র হল: ‘তোমার দুর্বলতাকে তোমার শক্তিতে বদলে নাও’। যে মন্ত্র ভারত ছাড়ার আগে ভরতকে দিয়েছেন দুই সোনাজয়ী প্রাক্তন হকি প্লেয়ার লেসলি ক্লডিয়াস এবং কেশব দত্ত। “দেশ ছাড়ার আগে আমার সঙ্গে ক্লডিয়াস, কেশব দত্তের দেখা হয়েছিল। ওঁরা আমাকে বলেন, দুর্বলতাকে শক্তিতে বদলে নিতে। যখনই আমাদের মাঠে খারাপ সময় যায়, তখনই এই মন্ত্রটা আমাকে শক্তি জোগায়,” বলেছেন ভরত। নিজেদের দলের দুর্বলতা নিয়ে তিনি বলেছেন, “আমাদের পাসিংটা আরও ভাল করতে হবে। ইউরোপ সফরে আমরা কয়েকটা ম্যাচে ভাল খেলেছি। কিন্তু ধারাবাহিকতা দেখাতে পারিনি।” এ দিকে, অলিম্পিকের আগে অবশ্য ভারত ধাক্কা খেল স্পেনে ওয়ার্ম আপ ম্যাচে গ্রেট ব্রিটেনের কাছে ১-৩ হেরে। ভারতের গোলটি করেন শিবেন্দ্র সিংহ। |