অবৈধ কাঠ উদ্ধারে জোর দিতে বন দফতরের কর্তাদের আহ্বান জানালেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। শনিবার মেদিনীপুরে বনমহোৎসবের অনুষ্ঠানে এসে তিনি বলেন, “গত ৩৪ বছরে প্রচুর গাছ কাটা হয়েছে। কাঠ পাচার করা হয়েছে। এ বার অবৈধ কাঠ উদ্ধারে জোর দিন। যে ডিএফও বেশি অবৈধ কাঠ উদ্ধার করবেন, তাঁকে পুরস্কৃত করার জন্য আমি বনমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব।” পাশাপাশি, ক্যানাল, খাল, নদী পাড়ে গাছ লাগানোর জন্যও তিনি সেচ দফতরের কর্তাদের নির্দেশ দেন।
শনিবার মেদিনীপুর ডিএফও’র অফিস প্রাঙ্গণে ছিল বনমহোৎসবের আয়োজন। সেচমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি, শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। জঙ্গল রক্ষার প্রশ্নেও বামফ্রন্ট সরকারের সমালোচনা করেন সেচমন্ত্রী। বলেন, “গত ৩৪ বছরে কাঠ চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। ফলে, জঙ্গল সাফ হয়ে গিয়েছে। আমাদের সরকার নতুন গাছ লাগানোর উপর গুরুত্ব দিয়েছে।” |
মানস ভুঁইয়ার বৃক্ষরোপণ। পাশে মৃগেন মাইতি। ছবি: সৌমেশ্বর মন্ডল।
|
পশ্চিম মেদিনীপুরের একটা অংশে রয়েছে জঙ্গলমহল। বন দফতরের মতে, অশান্তির পর্বে জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন সুরক্ষা কমিটি কাজ করতে পারেনি। নজরদারি চালানো যায়নি। এখন অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টেছে। গ্রামবাসীদের অবশ্য অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বন বিভাগের একাংশ কর্মীর যোগসাজশ রয়েছে। ফলে এখনও বিভিন্ন এলাকায় গাছ কাটা চলছে। শাল, ইউক্যালিপটাসের সংখ্যা কমছে। ধ্বংস হচ্ছে সবুজ।
রাজ্যে পালাবদলের নতুন সরকার জঙ্গলমহলকে তার পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে জানিয়ে সেচমন্ত্রী বলেন, “প্রতিটি এলাকায় গাছ লাগাতে হবে। এ জন্য জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করে, প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদক্ষেপ করতে হবে।” অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “অরণ্যের অধিকার জঙ্গলমহলের মানুষের হাতেই থাকবে।” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ওই দিন এক পদযাত্রা বেরোয়।
বনমহোৎসব পালিত হল ঘাটালেও। মহকুমা প্রশাসন ও এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে শনিবার মহকুমাশাসকের দফতর থেকে বেরোয় পদযাত্রা। পা মেলান মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী, ওই সংস্থার সম্পাদক প্রবীর মাইতি, বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দুলাল কর প্রমুখ। সামিল হয় স্থানীয় বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও। বিভিন্ন এলাকায় বৃক্ষরোপণ করা হয়। |