খাঁচায় ঢুকে বাঘের সঙ্গে করমর্দন করতে গিয়েছিলেন বছর তিরিশের মহম্মদ আসিফ। রয়্যাল বেঙ্গলের থাবায় গুরুতর জখম হয়ে এই যুবক এখন জামশেদপুরের এমজিএম হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আজ ভোরে এই কাণ্ড ঘটে জামশেদপুরে টাটার চিড়িয়াখানায়। নব্বইয়ের দশকে কলকাতায় আলিপুর চিড়িয়াখানায় বাঘকে মালা পরাতে যান এক অত্যুৎসাহী। জামশেদপুরের ঘটনা সেই স্মৃতি উস্কে দিল। নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ এড়িয়ে যুবকটি কী করে খাঁচায় ঢুকলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সন্ধ্যায় আসিফের জ্ঞান ফেরে। প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ, মানসিক ভারসাম্যের অভাব আছে যুবকটির।
পুলিশ সূত্রের খবর, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, অনেক দিন ধরেই বাঘের সঙ্গে করমর্দনের ইচ্ছা নিয়ে ঘুরছিলেন তিনি। গভীর রাতে কানে আসছিল বাঘের গর্জন। কাল গভীর রাত থেকে বার কয়েক চেষ্টা চালিয়ে আজ কাকভোরে চিড়িয়াখানায় ঢুকতে সফল হন তিনি। যখন তিনি খাঁচার ভিতরে যান, তখন ছোট খাঁচার ভিতরে ছিল পাঁচ বছর বয়সী বাঘটি। ছোট খাঁচার লোহার দরজা তুলে করমর্দনের জন্য হাত বাড়াতেই বাঘটি তেড়ে এসে থাবা বসায়। হাতে-পায়ে থাবা মারার পর মাথায় বাঘের কামড় খেয়ে খাঁচার মধ্যে লুটিয়ে পড়েন আসিফ। বাঘের গর্জন শুনে নিরাপত্তা রক্ষীরা ছুটে গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। |
বাঘের থাবায় জখম মহম্মদ আসিফ। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী |
চিড়িয়াখানার অধিকর্তা বিপুল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটে আজ ভোর সওয়া পাঁচটা নাগাদ। জখম যুবকের নাম মহম্মদ আসিফ (৩০)। জামশেদপুরের মানগো থানার জওহর নগরের বাসিন্দা। এ দিনের ঘটনায় স্বাভাবিক কারণেই চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চিড়িয়াখানার অধিকর্তা বিপুল চক্রবর্তী বলেন, “প্রথম প্রশ্ন, মূল ফটক বন্ধ থাকা অবস্থায় নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ এড়িয়ে ওই যুবক কী ভাবে চিড়িয়াখানার ভিতরে চলে এলেন। দ্বিতীয় প্রশ্ন, চিড়িখানার ভিতরে এসে ওই যুবক অবাধে বাঘের খাঁচায় ঢুকল কী ভাবে। এই ধরনের ঘটনা এখানে এই প্রথম ঘটল।” ঘটনাটি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিড়িয়াখানার অধিকর্তা জানিয়েছেন, বাঘটি বছর দুয়েক আগে অসম থেকে জামশেদপুর আনা হয়েছিল। গত দু’বছরে কখনওই তাকে হিংস্র হয়ে উঠতে দেখা যায়নি। আজ বাঘটি কেন ওই রকম হিংস্র হয়ে উঠল, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে খাঁচার মধ্যে ওই যুবকের হাতে কোনও রকম অস্ত্র ছিল না। তাই চোরাশিকারির আক্রমণের কোনও প্রশ্নই উঠছে না। |