টোলগে ওজবেকে নিয়ে দু’মাস ধরে চলা বিতর্কের রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই বের করার প্রতিশ্রুতি দিল আই এফ এ। এবং নতুন প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির সভার মনোভাব যা, তাতে টোলগের ‘ইচ্ছা’-তেই সম্ভবত সিলমোহর পড়তে চলেছে। চূড়ান্ত রায় দেওয়ার আগে অবশ্য দু’জন আইনজীবী-সহ পাঁচ জনের একটি কোর কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য ফুটবল সংস্থা। আইনগত দিকগুলি খতিয়ে দেখার জন্য। শনিবার এয়ারলাইন্স তাঁবুতে কমিটির সিদ্ধান্ত শোনার পর অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার বললেন, “আই এফ এ-র উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। মোহনবাগানের অনুশীলনে নেমেছি। আশা করছি মরসুমের প্রথম ম্যাচ থেকেই সবুজ-মেরুন জার্সি পরেই মাঠে নামতে পারব।”
প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির প্রথম দু’টি সভায় শুধু সময় নষ্ট করার জন্য ব্যয় হয়েছিল। দুই প্রধানের চাপান-উতোর, চিঠি-পাল্টা চিঠি, আদালতে চলে যাওয়া দেখে আই এফ এ কর্তারা চাইছিলেন সভার বাইরে দু’পক্ষকে মুখোমুখি আলোচনায় বসিয়ে ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলতে। কিন্তু টোলগে-ইস্টবেঙ্গল মুখোমুখি বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর কর্তারা আর সময় নষ্ট করতে চাইছেন না। আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় সভার পর বলেও দিলেন, “বুধবার কোর কমিটির রিপোর্ট পেয়ে যাব। তারপর সভা ডেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।” তিনি ইঙ্গিত দেন, আদালতে টোলগে সংক্রান্ত মামলা চললেও আই এফ এ-র সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই।
এ দিনের সভার শুরুতে টোলগে এবং ইস্টবেঙ্গলের কিছু চিঠি পড়া হয়। আদালতের কাগজপত্রও তুলে দেওয়া হয় সদস্যদের হাতে। এক প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির এক সদস্য কী বলবেন কাগজে লিখে এনেছিলেন। তিনি বলেন, “চুক্তিপত্র, ভাউচার, টোকেন থাকলেই সেই ফুটবলারকে অন্য ক্লাবে সই করতে দেওয়া উচিত।” তাঁকে থামিয়ে দেন এক প্রবীণ সদস্য। বলেন, “ভাউচারের সঙ্গে চুক্তিপত্র না থাকলে তার কোনও গুরুত্বই নেই। চুক্তি না করে কাউকে কেউ টাকা দেয়?” আরও কিছু প্রস্তাব-পাল্টা প্রস্তাব আসে। এক সদস্য জানতে চান, “১৪ মে কলকাতা লিগ শেষ হওয়ার পর টোলগে কি মুক্ত প্লেয়ার হয়ে গিয়েছিল? আমাদের নিয়মে কী আছে?” এই অবস্থায় হস্তক্ষেপ করেন আই এফ এ সচিব। তিনি বলে দেন, “বারবার ১৯ জনকে নিয়ে সভা করা কঠিন। তার চেয়ে বরং পাঁচ সদস্যের একটি কোর কমিটি গড়া হোক। সেই কমিটি যে পরামর্শ দেবে তা দেখে সিদ্ধান্ত নিক প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি।” সবাই একমত হন।
আই এফ এ সচিব ছাড়াও সেই কমিটিতে আছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির চেয়ারম্যান জয়দেব ঘোষ এবং কমিটির দুই সদস্য তমাল মুখোপাধ্যায় ও দিলীপ রায়। সোমবারই কোর কমিটির সভা বসছে দক্ষিণ কলকাতার এক ক্লাবে। উৎপলবাবু বলেন, “পেশাদার ফুটবলারের ক্ষেত্রে ফিফা এবং ফেডারেশনের কিছু নিয়ম কানুন আছে সেগুলি দেখা হবে। তবে টোলগে বা ইস্টবেঙ্গলকে আর ডাকা হবে না। ডাকা হচ্ছে না কোনও সই পরীক্ষককেও।” বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, আই এফ এ-কে এড়িয়ে আদালতে যাওয়ার জন্য দুই প্রধানকে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হতে পারে। তবে সেটি আলোচিত হবে অন্য সভায়।
এ দিকে বাতিল হয়ে যাওয়া পি এল এস নভেম্বরে করার কথা ভাবছে আই এফ এ। বিশ্বের বিভিন্ন নামী ফুটবলারকে এনে জেলায় জেলায় এই টুর্নামেন্ট করার কথা ছিল মার্চ-এপ্রিল মাসে। কিন্তু জেলায় মাঠ না পাওয়ায় তা আটকে যায়। আই এফ এ সচিব এ দিন বলেন, “আমরা পি এল এস নভেম্বরে করার চেষ্টা করছি।” |