ভোটের আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল মোর্চা
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) ভোটের এখনও ঢের দেরি। তার আগেই মোট ৪৫টি আসনের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৮টিই জিতে গিয়ে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানাতে চান তাঁরা।
জিটিএ ভোট হবে ২৯ জুলাই। সরকারি ভাবে ফল প্রকাশ হবে ২ অগস্ট। বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। তারপরেই দেখা যায়, মোর্চাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ফেলেছে। তবে বাকি ১৭টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীরাও লড়ছেন। তা নিয়ে মোর্চা নেতৃত্বের ক্ষোভও রয়েছে। তবে তৃণমূলও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় জিটিও ভোট যে ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশে’ই হচ্ছে তার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করেছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। গুরুঙ্গ বলেন, “তৃণমূল প্রার্থী দেবে না বলেই ভেবেছিলাম। যাই হোক, তাঁরাও প্রার্থী দেওয়ায় পাহাড়ে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশই রয়েছে, তা প্রমাণ হল।”
সাংবাদিক বৈঠকে বিমল গুরুঙ্গ। বৃহস্পতিবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।
মোর্চা সূত্রের খবর, দলের শীর্ষ নেতারা নানা ভাবে ‘বার্তা’ পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাব আঁচ করার চেষ্টা করছেন। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, “সরকারি ভাবে ভোট পর্ব মিটবে ২ অগস্ট। তার পরে বিজ্ঞপ্তি জারি হলে শপথগ্রহণ হবে। পাহাড়ে নতুন ইতিহাসের সূচনা হবে। আমরা সেই অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মানিত অতিথি হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকে পেতে চাইব। ভোট পর্ব মিটলে দলীয় ভাবে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।”
ঘটনাচক্রে, এদিনই দার্জিলিঙের তাকদায় পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “পাহাড়কে আমি ভালবাসি। পাহাড়ের মানুষের পাশে সবসময়ে থাকার চেষ্টা করি। জিটিএকে সামনে রেখে দার্জিলিং নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। স্বপ্ন দেখছে। পাহাড় হাসছে। জিটিএ গঠন হওয়াটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। যদিও ১৮ অগস্ট আমার ডুয়ার্সে আসতে হবে। তা সত্ত্বেও তার আগে ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হতে পাহাড়ে আসার ইচ্ছে আমারও রয়েছে।”
অবশ্য পাহাড় ও সমতলের মোর্চা বিরোধী একাধিক দলের অনেকেই ‘জিটিএ ভোট’ নিয়ে নানা কটাক্ষ করেছেন। অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ, জিএনএলএফ, সিপিআরএম ভোটে অংশ নেয়নি। সিপিএম সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে তাদের ১৩ প্রার্থীই প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এদিনই ভাঙড়ে সিপিএমের সভায় রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন পাহাড় নাকি হাসছে। আমরাও পাহাড়ে শান্তি চাই, জিটিএ নির্বাচন চাই। কিন্তু ওখানে নির্বাচন করছে কে? কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন করছে না, নির্বাচন করছে রাজ্য সরকার।” তাঁর দাবি, “আমাদের প্রার্থীদের উপর হামলা হচ্ছে বলে প্রার্থীদের নাম প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছি। ওখানে কি তা হলে একমাত্র মোর্চা লড়াই করবে? মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলের এক মন্ত্রীকে তৃণমূলের ১৩ প্রার্থীকে লুকিয়ে রাখার দায়িত্ব দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়ে দেখুন ওখানে তাঁর প্রার্থীরা হাসছে কি না!” তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “পাহাড়ে আমাদের সংগঠন সে ভাবে নেই। তবু তো ১৭টা আসনে লড়ছি। হার-জিৎটা বড় কথা নয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফেরানোর রাস্তা মসৃণ করতেই প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। এটা সকলে বুঝলে কবেই তো পাহাড়ের অবস্থা ভাল হয়ে যেত।” সাধারণ পাহাড়বাসী কিংবা লাগোয়া সমতলের বাসিন্দাদের অনেকেই কিন্তু রাজনৈতিক চাপানউতোরে যেতে চাইছেন না। বরং, প্রায় ৫ বছর ধরে কার্যত অভিভাবকহীন দার্জিলিং পাহাড় স্বাভাবিক ছন্দে থাকবে ভেবেই তাঁরা আশ্বস্ত। পাশাপাশি, পাহাড়-সমতলের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই মত, মোর্চা জিটিএ গড়লে আগামী দিনে আমজনতার কাছে তাঁদের প্রশাসনিক দায়বদ্ধতাও তৈরি হবে। ফলে পাহাড় ও সমতলের মেলবন্ধনের দিকেও নজর দিতে বাধ্য হবেন তাঁরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.