জমি বা বাড়ি দেবে রাজ্য সরকার। বেসরকারি সংস্থা সেখানে গড়ে তুলবে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
পশ্চিমবঙ্গে পরিকাঠামো ও পরিষেবা উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্য সম্প্রতি সরকারি-বেসরকারি (পিপিপি) যৌথ প্রকল্পের ‘নীতি’ প্রণয়ন করেছে। তাকে সামনে রেখে সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার সাব কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ‘পিপিপি মডেল’ কার্যকর করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এবং সরকারি জায়গায় বেসরকারি উদ্যোগে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকেই। মহাকরণের এক মুখপাত্রের কথায়, “রাজ্যে নতুন সরকারের আমলে পিপিপি মডেল কার্যকর করার এটাই প্রথম ফলপ্রসূ উদ্যোগ বলা যায়।”
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা এখন মাত্র একটি যাদবপুরের কেপিসি। অথচ কর্নাটকে পিপিপি-ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে ৪১টি মেডিক্যাল কলেজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মনে করছে, যত বেশি মেডিক্যাল কলেজ হবে, তত বেশি সংখ্যায় চিকিৎসক পাবে রাজ্য। পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সংখ্যা বাড়লে রাজ্যের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থারও উন্নতি হবে বলে সরকার আশাবাদী। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ গড়তে আগ্রহী বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় জমি বা বাড়ি মিলবে কোথা থেকে?
দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বেশ কিছু সরকারি হাসপাতাল রয়েছে, যেগুলো কার্যত পরিত্যক্ত। কিছু হাসপাতাল সাকুল্যে ১০-১৫টি শয্যা নিয়ে প্রায় মৃতপ্রায়। কোথাও আবার ধুঁকতে থাকা হাসপাতালের লাগোয়া জমি অবহেলায় পড়ে আছে। স্বাস্থ্য দফতর ঠিক করেছে, নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরির জন্য ওই সব বন্ধ-রুগ্ণ হাসপাতাল ও তার জমি যতটা সম্ভব কাজে লাগানো হবে। এমন ধরনের জায়গা খোঁজা হবে খাস কলকাতাতেও। সেগুলোকে চিহ্নিত করে সেখানে নতুন মেডিক্যাল কলেজ গড়ার ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতর বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) বানাবে। তার পরে প্রকল্প নির্মাণের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগ চেয়ে (এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট) বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। যারা সাড়া দেবে, তাদের মধ্যে থেকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই হবে নিলামের মাধ্যমে।
প্রকল্প নির্মাণ-পরিচালনার মূল দায়িত্ব দিয়ে তাদের হাতেই ওই জমি-বাড়ি তুলে দেবে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং এ দিনের বৈঠকে পৌরহিত্য করেন। ছিলেন শিল্পমন্ত্রী, পঞ্চায়েতমন্ত্রী, বিদ্যুৎমন্ত্রী-সহ সাব কমিটির অন্যান্য মন্ত্রী-সদস্য ও সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবেরা। |