কূটনীতির ক্রিকেট
ভারতের কাছে ‘ঘরের মাঠ’ চাইল পাকিস্তান
ভারতের কাছে মোহালির ক্রিকেট স্টেডিয়াম ‘চাইল’ পাকিস্তান!
সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছে এই আবেদন করেছেন পাক বোর্ডের চেয়ারম্যান মহম্মদ জাকা আশরফ। তিনি জানিয়েছেন, কোনও দেশ যদি পাকিস্তান সফরে যেতে ‘নিরাপত্তার অভাব’ বোধ করে, তা হলে কূটনীতির খাতিরে ভারতের কোনও একটি মাঠ (মোহালি) কিছু দিনের জন্য পাক ক্রিকেট বোর্ডকে ব্যবহার করতে দেওয়া হোক। যেখানে ভারত তো বটেই, অন্য যে কোনও দেশের সঙ্গে খেলতে পারবে পাকিস্তান। ঘরোয়া শিবিরে আশরফ জানিয়েছেন, বিসিসিআই রাজি হলে ‘ভারত বা অন্য কোনও দেশ’ যত দিন না পাকিস্তানে খেলতে ‘নিরাপদ’ বোধ করবে, তত দিন ভারতের মাঠটিকেই ‘ঘরের মাঠ’ হিসেবে গণ্য করবে পাকিস্তান।
তিন বছর আগে লাহৌরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামের কাছে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হন শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার। তার পর থেকেই সমস্ত ক্রিকেট-খেলিয়ে দেশ পাক-সফর বন্ধ করে দিয়েছে। আর্থিক দিকের পাশাপাশি ভাবমূর্তি উদ্ধারের জন্যও নিজেদের দেশে ক্রিকেট চালু করা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছে পাক নেতৃত্ব। সম্প্রতি পাক বিদেশসচিব জলিল আব্বাস জিলানির ভারত সফরে বিষয়টি তুলেছিল ইসলামাবাদ। জাকা আশরফও ঘরোয়া মহলে বলেছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জে যেমন আমেরিকা, আইসিসিতে ভারতের অবস্থান তেমনই। সেই মর্যাদার অবস্থান থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট-সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে উদ্যোগী হোক ভারত।
মাঠ দিতে নীতিগত ভাবে ভারতের আপত্তি নেই। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ তো চাইছেনই, দু’দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারস্পরিক আদানপ্রদান বাড়ুক। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে একটি মাঠ ‘দিয়ে দেওয়া’ যে চমকপ্রদ এবং অভিনব আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ হবে সে ব্যাপারেও সন্দেহ নেই। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ক্রিকেট-কূটনীতির ব্যবহার বার বারই করেছেন দু’দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব। ২০১১ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল দেখতে মোহালিতে পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মনমোহন। গিলানি এসেওছিলেন। আবার দুই প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক বা পারভেজ মুশারফ ক্রিকেট কূটনীতিকে কাজে লাগিয়েছিলেন সাফল্যের সঙ্গে।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, মোহালি স্টেডিয়াম চাওয়ার পিছনে পাক সরকারের নির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা কাজ করছে। মোহালিতে খেলা হলে দু’পারের পঞ্জাবের মধ্যে আদানপ্রদান বাড়বে। পঞ্জাব সীমান্ত বরাবর বাণিজ্য বাড়ানোর যে চেষ্টা চলছে, ক্রিকেট-কূটনীতির ফলে তা আরও জোরদার হবে বলেই মনে করছেন পাক নেতৃত্ব। মোহালিতে ম্যাচ হলে স্পনসরশিপ বাবদ পাওয়া অর্থের একটা অংশ ভারত পাবে। পাকিস্তানও যাতে একটি বড় অংশ পায় সে ব্যাপারেও (যদি আদৌ বিসিসিআই অনুমতি দেয়, তার পর) আলোচনা করবে পাক বোর্ড।
পাকিস্তান সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে অন্য দেশের সঙ্গে খেলেছে। অগস্টে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সীমিত ওভারের ক্রিকেট সিরিজ রয়েছে পাকিস্তানের। প্রাথমিক ভাবে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা বা জিম্বাবোয়েতে এই সিরিজ করার কথা ভেবেছে পাক বোর্ড। তবে ভারত রাজি হলে, মোহালিতেই এই প্রতিযোগিতা করতে আগ্রহী তারা। তবে নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা থেকেই যাচ্ছে। তাই এখনও আশরফের আবেদনের জবাব দেয়নি বিসিসিআই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বোর্ড কর্তাদের আলোচনা চলছে। এ প্রসঙ্গে বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই বলেন, “বিষয়টি দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ডের ব্যাপার। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই প্রাধান্য পাবে।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.