নেপালে ঢুকে পড়া বুনো হাতির পাল ফেরাতে বনকর্তাদের সে দেশে পাঠাতে চায় রাজ্য সরকার। ১১ জুলাই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের উপস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ ও নেপালের বন দফতরের অফিসারদের বৈঠক হওয়ার কথা। বৈঠকেই বিষয়টি উত্থাপন করে বিষয়টি চূড়ান্ত করতে চান বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। সোমবার বনমন্ত্রী বলেন, “যেভাবে হাতির পাল নেপালে রয়েছে তাতে চিন্তিত। কয়েকটি শাবকও রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। হাতির পাল যাতে সুস্থ ভাবে ফিরিয়ে আনা যায় সে জন্য দিল্লির বৈঠকে প্রস্তাব দেব যাতে নেপালে আমাদের রাজ্যের অফিসারদের পাঠানো সম্ভব হয়। না-হলে হাতির পাল ফেরানো সহজ হবে না বলে মনে হচ্ছে।” ২৮ জুন নকশালবাড়ি লাগোয়া নেপালের কলাবাড়ির জঙ্গল থেকে অন্তত ৩৫টি বুনো হাতির একটি দল মেচি নদী পেরিয়ে নেপালে ঢুকে পড়ে। এক সপ্তাহের মধ্যে ফের খান পয়ত্রিশ হাতির অন্য একটি দলও ঢোকে। প্রথম দলটি স্থানীয় বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে নেপালের গভীরে কোশি নদীর দিকে চলে যায়। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং নেপালের বন দফতরের উদ্যোগে হাতির পালটিকে ঝাপা জেলার বহুবন জঙ্গলে ফিরিয়ে আনা হলেও লাগোয়া শান্তিনগর গ্রাম ঢুকে মারা যায় একটি হাতি। তার পরেই হাতির পাল ছোট ছোট কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। মে মাসে কলাবাড়ির জঙ্গলে প্রায় দেড়শো হাতি জমা হয়েছিল। পরে জুন মাসের শেষের দিকে ৫০টির বেশি হাতির একটি দল ফেরে বামনপোখরির জঙ্গলে। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, এ দিন ওই দলটিকে বেঙডুবির জঙ্গলে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। ওই দলটিও নেপালে ঢোকার চেষ্টা করছে বলে অনুমান। এই পরিস্থিতিতে কার্যত দিশেহারা অবশ্য নকশালবাড়ি এলাকার বনকর্মীদের। দিশেহারা এই পরিস্থিতির জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি অবশ্য বন দফতরকেই দায়ী করেছে। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “কাদের উদাসীনতায় এ বার নজরদারি রাখা গেল না সেটা অবিলম্বে খতিয়ে দেখা দরকার।” নকশালবাড়ি বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক প্রাণগোপাল নাগ বলেন, “হাতির পাল অবিলম্বে নেপাল থেকে ফেরানো দরকার। না-হলে চোরাশিকারীদের হাতে মারা পড়বে। এই ব্যাপারে বন দফতর উদ্যোগী না-হলে আমাদেরই রাস্তায় নামার কথা ভাবতে হবে।” |