এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে বিভ্রাট
অ্যালার্মের ভুলে নেমে মিলল পাক সহযোগিতা
তঙ্ক নিয়ে নেমেছিলেন। কিন্তু পেলেন সহযোগিতা। রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা পাকিস্তানে কাটিয়ে এটাই অভিজ্ঞতা এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-৯৪০ উড়ানের যাত্রীদের।
ঘটনার মূল ‘অপরাধী’ বিমানের অ্যালার্ম। রাত সাড়ে তিনটে। আবু ধাবি থেকে দিল্লি আসার পথে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি তখন পাকিস্তানের আকাশে। ককপিটে হঠাৎই লাল আলো। সঙ্গে ‘বিপ বিপ’। অ্যালার্মের শব্দে হাইড্রোলিক সিস্টেমে বড়সড় একটা গণ্ডগোলের আঁচ পান বিমানচালক। নিয়ে ফেলেন জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত। পাকিস্তানের দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশের নবাব শাহ বিমানবন্দরে নামে বিমানটি। দিল্লি থেকে প্রায় আট ঘণ্টা পরে সেখানে পৌঁছন ইঞ্জিনিয়াররা। ভাল করে পরীক্ষা করে তাঁরা বিধান দিলেন, ‘রোগীর’ কিছুই হয়নি। হাইড্রোলিক সিস্টেমে নয়, ত্রুটি ছিল অ্যালার্মে। জানান, হাইড্রোলিক সিস্টেম ঠিকঠাকই কাজ করছিল। আসলে বেঁকে বসেছিল বিমানের কম্পিউটারটাই। তাই কম্পিউটার দেখাতে শুরু করে তিনটি হাইড্রোলিক সিস্টেমই প্রচণ্ড গরম হয়ে উঠেছে। আর তারই জেরে বাজতে শুরু করে অ্যালার্ম।
কিন্তু এই ‘দুর্ঘটনা’ই যেন দুই পড়শি রাষ্ট্রের মধ্যে আস্থা বাড়ানোর সুযোগ করে দিল।
স্বস্তি। দিল্লি পৌঁছনোর পরে এয়ার ইন্ডিয়ার এক যাত্রীকে আদর তাঁর আত্মীয়ের। সোমবার। ছবি: এ এফ পি।
বিমানের জরুরি অবতরণের পর খবর যায় দিল্লিতে। বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেন পাকিস্তানে ভারতের হাইকমিশনার শরৎ সভরওয়ালের সঙ্গে। পরে পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র পারভেজ জর্জ জানান, তাঁরা যাত্রীদের বিমান থেকে নেমে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু রাজি হননি পাইলট। তিনি বলেন ‘শুধু জল পাঠালেই চলবে’। তত ক্ষণে পাক প্রতিরক্ষাসচিব নার্গিস শেঠি স্থানীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটিকে যেন জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য দেওয়া হয়। যাত্রী ও বিমানকর্মীদের যখন যা দরকার, যেন হাতে হাতে জোগান দেওয়া হয়। বিমানটিতে জ্বালানি ভরার দায়িত্ব নেয় পাকিস্তানের সরকারি বিমান সংস্থা পিআইএ।
যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে বিশেষ বিমান পাঠানোর ব্যবস্থা করতেও বেশ কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। বেলা বারোটা নাগাদ ইঞ্জিনিয়ার ও যন্ত্রপাতি নিয়ে রওনা দেয় এয়ারবাস-৩২০। যাত্রীদের জন্য খাবারও নিয়ে যায় তারা। পরে ওই বিশেষ বিমানে চেপেই পাঁচটা নাগাদ দিল্লি নামেন ১২২ জন যাত্রী ও ছয় বিমানকর্মী। তার পরই তাঁদের মুখ থেকে শোনা যায় আতঙ্কের অভিজ্ঞতা। ১৫ থেকে ৬৫, বিমানের আচমকা গোলযোগে সকলেই যে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন, সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। ৬৫ বছরের রাধাকৃষ্ণন জানান, পাক বিমানবন্দরটি ছোট এবং পরিষেবারও যথেষ্টই অভাব। তাই দিল্লি থেকে বিমান যেতে দেরি হচ্ছে দেখে এক সময় রেগে যান যাত্রীরা। ১৫ বছরের মুশকান শর্মা জানাল, যখন বিমানে গোলযোগের কথা শুনলাম, সত্যি ভয় পেয়েছিলাম।
কিন্তু একটা কথা সকলেই বলছেন, এই সুযোগে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে আস্থা বাড়ানোরই চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। তবে আবু জিন্দল পর্বের পরে এই প্রচেষ্টা দু’দেশের সম্পর্ককে সহজ করতে কতটা সাহায্য করবে, তা ভবিষ্যৎই বলবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.