|
|
|
|
|
|
|
রবীন্দ্রনাথের ‘নিজের বাড়ি’ |
জোড়াসাঁকোয় পদ্মা বোট |
পদ্মাবোটে বাবা থাকতে খুব ভালোবাসতেন। সুযোগ পেলেই চলে যেতেন তাঁর প্রিয় পদ্মাবোটে। বাড়িতে বাস করার চেয়ে বোটে থাকতে ভালো লাগত, তার কারণ সম্ভবত বোটে তিনি নির্জনতা পেতেন, ভাবতে এবং লিখতে এমন সুযোগ আর কোথাও পেতেন না। তাছাড়া ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াতে পারতেন। পরিবেশের অহরহ পরিবর্তন তাঁর কল্পনাপ্রিয় মনকে খোরাক জোগাত। সম্পূর্ণ নির্জনতা যখন চাইতেন, শিলাইদহের কর্মচারীদের আদেশ দিতেন কেউ যেন তাঁর কাছে না আসে।’ পিতৃস্মৃতি-তে লিখেছেন রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। |
|
রবীন্দ্রসাহিত্যে শিলাইদহের অবদান যতটা তার অধিকাংশই বোধহয় এই পদ্মাবোটের। কলকাতা শহর ছাড়িয়ে পুরাতন শ্যামল পৃথিবীর এক জন হয়ে ওঠার তাগিদে রবীন্দ্রনাথ চলে যেতেন এই বোটে বাস করতে। ছিন্নপত্রাবলী-তে লিখেছেন, ‘এই যেন আমার নিজের বাড়ি। এখানে আমিই একমাত্র কর্তা, এখানে আমার উপরে, আমার সময়ের উপরে, আর কারও কোনো অধিকার নেই। যেমন ইচ্ছা ভাবি, যেমন ইচ্ছা কল্পনা করি, যত খুশি পড়ি, যত খুশি লিখি, এবং যত খুশি নদীর দিকে চেয়ে টেবিলের উপর পা তুলে দিয়ে আপনমনে এই আকাশপূর্ণ আলোকপূর্ণ আলস্যপূর্ণ দিনের মধ্যে নিমগ্ন হয়ে থাকি ...’। সেই স্মৃতি-জড়ানো মূল বোটটি এখন আছে কুষ্টিয়ায়। তারই একটি রেপ্লিকা এ বার এল এই শহরে। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতজন্মবর্ষ উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে পদ্মাবোটের রেপ্লিকাটি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে উপহার দিয়েছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রক। |
|
চম্বল টিক কাঠের চার ফুট বাই এক ফুট তিন ইঞ্চির রেপ্লিকা। |
চম্বল টিক কাঠের চার ফুট বাই এক ফুট তিন ইঞ্চির রেপ্লিকাটি এখন রাখা আছে বিচিত্রা ভবনে রবীন্দ্রভারতী সংগ্রহশালায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিন্ময় গুহ জানালেন, বোটটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে শীঘ্রই। এ দিকে ‘পদ্মা’ এবং ‘চপলা’ দুটি বোটেরই রেপ্লিকা বিশ্বভারতী-কেও উপহার দিয়েছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রক। সঙ্গে বাঁ দিকে উপরে পদ্মায় বোটটির আলোকচিত্র, নীচে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা বোটের ছবি, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রহ থেকে।
|
রোমাঞ্চকর |
শৈশবের রোমাঞ্চ যেন ফিরে এল আবার। ময়ূখ চৌধুরী, প্রসাদ রায়ের সাহিত্যজগতে আবির্ভাবের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে ‘বিষয় কার্টুন’ পত্রিকার ময়ূখ চৌধুরী সংখ্যা। রোমাঞ্চকর, ঐতিহাসিক কিংবা, জলজঙ্গলের গল্প নিয়ে কমিকস তৈরি করতেন ময়ূখ চৌধুরী, নিজেই লিখতেন, নিজেই ছবি আঁকতেন। তবে দুই নামে। আসল নাম শক্তিপ্রসাদ রায়চৌধুরী। পরে কাটছাঁট করে নামটাকে করেছিলেন প্রসাদ রায়। প্রসাদ রায় ছবি আঁকতেন, লিখতেন ময়ূখ চৌধুরী। ‘ঋণশোধ’, ‘মবোগো’, ‘দ্বৈরথ’, ‘অপরাধী কে?’, ‘অরণ্যের অন্তরালে’-র মতো স্মৃতি-জাগানো কমিকস তো বটেই, সঙ্গে ময়ূখ চৌধুরীর বেশ কয়েকটি দুর্লভ লেখা সংকলিত হয়েছে এই সংখ্যায়। স্মৃতিচারণ করেছেন মঞ্জিল সেন, নির্বেদ রায়, সন্দীপ রায় প্রমুখ। বিশ্বদেব গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় সুমুদ্রিত পত্রিকাটি বাংলা কমিকসের এক স্বর্ণযুগকে ধরে রাখল, আনন্দের কথা বইকী। |
একা জয় |
কবিজীবনের এই ধুলোওড়া বিকেলবেলায় তোমার খেলাটি দ্যাখো আমার এই অবসাদ-দীপ্ত খেলাটিকে...। ‘খেলা’ নামের এক প্রেমের কবিতায় কবিজীবনের ধুলোওড়া বিকেলবেলার কথা লিখেছিলেন জয় গোস্বামী। কবিকে তার জীবনচরিতে যেমন পাওয়া যায় না, কবিতায়ও তেমনই কবির জীবন অন্তত এ ক্ষেত্রে সত্য না হোক, চাইবে নিশ্চয় এ শহর। বহু জনতার মাঝে অ-পূর্ব একা যে কবি শহরের হৃদি এক দিন ভাসিয়েছিলেন অলকানন্দা জলে তিনিই রবিবার ১৫ জুলাই বাংলা আকাদেমিতে বহু দিন পরে আবার একক পাঠে। পড়বেন গদ্য আর পদ্য দুইই। বহু দিন পরে পাঠকের মুখোমুখি বসে মেলে ধরবেন বজ্র-বিদ্যুৎ কিংবা মেঘলা বিষাদভর্তি তাঁর খাতা। আয়োজনে শহরের আরও এক সবুজ পত্র, ‘দেবভাষা’। |
নব রূপে |
রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষের সমাপ্তির মুখে পাঠকদের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছনোর লক্ষ্যে বিশেষ ছাড়ে বই-বিক্রির ব্যবস্থা করল বিশ্বভারতী গ্রন্থন-বিভাগ। ৬ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের ঐতিহ্যবাহী বাড়িটিতেই এখন চলছে পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ে বই-বিক্রি। কেন এমন আয়োজন? গ্রন্থন-বিভাগের অধ্যক্ষ রামকুমার মুখোপাধ্যায় জানালেন, পাঠকদের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছনো একটা কারণ। আর একটা কারণ প্রচারের অভাবে প্রায় সাড়ে আটশো বইয়ের বহু কপি অবিক্রীত থাকা। সম্প্রতি সাহিত্য অকাদেমির সভাপতি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় উদ্বোধন করলেন এই বিশেষ গ্রন্থমেলার। সভাপতি ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। মেলা চলবে ১১ জুলাই পর্যন্ত (২-৮টা)। শুধু এই নয়, গ্রন্থন-বিভাগের একটি ওয়েবসাইটও বাইশে শ্রাবণ থেকে দেখা যাবে বলে জানালেন অধ্যক্ষ। সেখানে থাকবে বিশ্বভারতী প্রকাশিত বইয়ের বিবরণ, গ্রন্থন-বিভাগ সংক্রান্ত নানা সংবাদ।
|
আমন্ত্রণ |
ক্লাস নাইনেই মৌলিক লেখালেখির শুরু। পুরস্কৃত হয়েছে জাভেদ আখতারের কাছ থেকে। সেই মেয়েই টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমন্ত্রণ পেল সামাজিক উদ্যোগ বিষয়ে তিন সপ্তাহের এক কর্মশালায়। সতেরোটি দেশের মাত্র কুড়ি জন আমন্ত্রিতের মধ্যে রয়েছেন শ্রীরূপা চৌধুরী। আইন পড়তে পড়তেই শ্রীরূপা ও বন্ধু আবিরা নাথ শিক্ষক তিলোত্তমা রায়চৌধুরীর সহযোগিতায় তৈরি করেছেন কনজিউমার অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড সলিউশন এন্টারপ্রাইজ (সিএএসই)। সাধারণ মানুষের সামনে পাহাড়ের মতো প্রশাসনিক কাঠামো, যার মোকাবিলা করতে নানা লড়াই করতে হয়। পড়তে হয় দুর্নীতির কোপে। এই সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার পাঠ নিতেই শ্রীরূপাদের এই অভিযান।
|
পরম্পরা |
লোকগানই বাঙালির জীবনের গান। এ গানই সম্পর্ক গড়ে তোলে এক অঞ্চলের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের। ক্রমে তা ছড়িয়ে যায় দেশ-দেশান্তরে। লৌকিক হয়ে ওঠে উচ্চাঙ্গ, মার্গীয়। অর্থাৎ উচ্চাঙ্গ গানের গোড়াতেও লৌকিক সুর ও ব্যঞ্জনা। বাংলার লোকগান বাঙালির জীবনে এখনও এক অক্ষয় বৃত্তান্তমালা রচনা করে। সেই গানেরই নানা চরিত্র, নানা সুর ও বিস্তার নিয়ে প্রায় সারাটা জীবনই কাজে লাগিয়েছেন শিরোমণি লোকশিল্পী অমর পাল। সেই ধারায় নবীন প্রজন্মের আর এক শিল্পী তপন রায়। ওঁরা দুই জনই এ বার লোকগানের পরম্পরা গেয়ে শোনাবেন ১৩ জুলাই আশুতোষ শতবার্ষিকী হলে। সূত্রধর শংকরলাল ভট্টাচার্য, আয়োজনে ভারতীয় জাদুঘর।
|
প্রথম ইতিহাস |
দুশো বছরেরও বেশি আগের কথা। ভারতে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার শুরু হল চেন্নাই এর কাছে গিন্ডি সার্ভে স্কুলে। ১৭৯৪-এ সেই সূচনার পরে বিংশ শতকের শুরুতে ব্রিটিশদের প্রয়োজনে স্থাপিত হল রুড়কি কলেজ। আর এই শহরে জাতীয় শিক্ষার চিন্তাভাবনা থেকে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ, ১৯০৬-এ। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই পরে জন্ম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু ভারতে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার ধারাবাহিক ইতিহাস সে ভাবে লেখা হয়নি কোনও দিন। সেই অভাব কিছুটা দূর করতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক সমীরকুমার সাহা লিখেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং এডুকেশন ইন ইন্ডিয়া: পাস্ট,প্রেজেন্ট অ্যান্ড ফিউচার (সাহিত্য সংসদ)। সম্প্রতি বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করলেন বিকাশ সিংহ।
|
আপনজন |
‘সে এক অস্থির সময়। আধা ফ্যাসিস্ত বাহিনী তখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পশ্চিমবাংলায়... সেই আধা ফ্যাসিস্ত বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন চোদ্দশ’ বা তার বেশি মানুষ।’ বহু বছর পর সে সব শহিদদের কিছু পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ক্ষোভ, যন্ত্রণা আর অভিমানের কথা তুলে ধরেছেন সুকান্ত ঘোষ ৭০-এর আপনজন-এ। ছাত্রাবস্থা থেকেই বামপন্থী ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত যাদবপুরের এই তরুণ। রাজনীতির গণ্ডি এড়াতে প্রথমে দিল্লি ও পরে আমেরিকায় যান ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার সুকান্ত। সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষটি গত ১৪ বছর ধরে আমেরিকা ও কলকাতা থেকে প্রকাশ করে আসছেন ‘উৎসব’ দ্বিমাসিক সাহিত্য পত্রিকা। কিন্তু ছোটবেলার বন্ধু ও পরিচিত জনের আকস্মিক মৃত্যু আজও ব্যথিত করে তাঁকে। সম্প্রতি সেই শহিদদের স্মৃতিতেই রবীন্দ্রসদনের বিপরীতে মোহরকুঞ্জে সুকান্তবাবু গড়ে তুলেছেন ২০ ফুট উঁচু পাথরের স্মৃতিফলক ‘৭০-এর আপনজন’।
|
বয়স বাধা নয় |
বয়স কোনও বাধা নয় আরও এক বার প্রমাণ করলেন ইন্ডিয়ান ডিফেন্স এস্টেটস সার্ভিস (আইডিইএস)-এর অধিকর্তা অশোকরঞ্জন দত্ত। আগামী জানুয়ারিতে অবসর নেবেন। সম্প্রতি তিনি মার্শাল আর্ট ক্যারাটেতে ব্ল্যাকবেল্ট হয়েছেন। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কোফুকান শিতো-রিয়ো ক্যারাটে স্কুল-এ ক্যারাটের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন ২০০৯-তে । কঠিন অনুশীলনের মধ্য দিয়ে ক্যারাটের সব কটি ধাপ পেরিয়ে তিনি ফার্স্ট ডিগ্রি ব্ল্যাকবেল্ট হন। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডিগ্রি হওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছেন।
|
অন্য রবীন্দ্রনাথ |
বারোটি গানে অন্য এক রবীন্দ্রনাথ। অ-চেনা, কারণ এক অর্থে অশ্রুত। ‘বাউল-ফকিরের রবীন্দ্রনাথ’ অ্যালবামে (ওরিয়ন এন্টারটেনমেন্ট) রবীন্দ্রনাথের গান গেয়েছেন পূর্ণদাস বাউল, মনসুর ফকির, বাসুদেব দাস বাউল, পার্বতী বাউল, তরুণ খ্যাপা এবং গঙ্গাধর-তুলিকা। গেয়েছেন নিজস্ব চলনে। সঙ্গে কথাও বলেছেন। কথা বলেছেন সনাতন দাস বাউলও। ‘বাউল পরম্পরার সঙ্গে সংলাপ চালিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। সেই বাউলদের কণ্ঠেই তাঁর গানে অন্য মাত্রা’, জানালেন প্রকল্পের পরিচালক কালিকাপ্রসাদ, ‘কী গাব আমি কী শুনাব’ তো তথাকথিত লোকসুরের গান নয়, কিন্তু সেই গানও এখানে অন্য ভাবে এসেছে!’ ‘না-ই বা থাকল স্বরলিপির কড়াকড়ি, গানে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হচ্ছে কি না, সেটাই দেখতে চেয়েছিলাম’, বলছেন ওরিয়ন-এর সি ই ও শুভজিৎ রায়। একদা সঙ্গীতগুরু সুচিত্রা মিত্র তাঁকে রবীন্দ্রগানকে অন্য মাত্রায় ভাবার সাহস দিয়েছিলেন। সেই স্বপ্ন থেকেই এই অ্যালবাম। রবি ঠাকুর, অন্য বিভঙ্গে।
|
বন্দনা |
|
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কত ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে দেশে-বিদেশে? তথ্য-পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে অনেক জায়গাতেই। কিন্তু তার অধিকাংশের ছবি সুলভ নয়। মূলত এই ডাকটিকিট-সংগ্রহের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি চিঠিপত্রের প্রতিলিপি এবং বহু ছবি নিয়ে প্রকাশিত হল একটি সুশোভন অ্যালবাম, সম্প্রতি সায়েন্স সিটিতে। অরিজিৎ মৈত্রের সংগ্রহ, সংকলন ও সম্পাদনায় বন্দনা বইটি প্রকাশ করেছে ‘ইন্ডিয়া গ্রিন রিয়্যালিটি’। গীতিকার অমিয় বাগচীকে লেখা ‘রক্তকরবী’ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের অপ্রকাশিত চিঠি এ বইয়ের বড় সম্পদ। সংস্থার পরিচালক অমিতাভ সামন্ত জানালেন, এ বই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ করা হবে। ‘মানুষের বসতির সঙ্গে পরিবেশের যে সামঞ্জস্যের কথা ভেবেছিলেন রবীন্দ্রনাথ তার প্রতিই আমাদের এই শ্রদ্ধা নিবেদন,” বললেন তিনি।
|
একাত্ম |
নব্বই দশকের গোড়ায় জন্ম। সেই থেকে গ্রামেগঞ্জে এবং বস্তি এলাকায় স্বাস্থ্য সচেতনতা ও কম খরচে পুষ্টিকর খাবার বিষয়ে পরামর্শ দেয় ‘ক্যালকাটা একাত্ম’। পরে শুরু হয় স্তন ক্যানসার ও জরায়ু মুখের ক্যানসার নির্ণয়ের কাজ। ১২১/৭ মনোহরপুকুর রোডের ক্লিনিকে প্রতি শুক্রবার বিকেল চারটে থেকে দ্য বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স সেন্টারের চিকিৎসকদের সহায়তায় ও বিশিষ্ট ক্যানসার চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চলে বিনামূল্যে পরীক্ষা। এ কাজ প্রত্যন্ত গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এদের রয়েছে মোবাইল ইউনিটের পরিকল্পনা। এই কাজে আর্থিক সহায়তার জন্য সম্প্রতি সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হল এক নাচের অনুষ্ঠান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুজাতা ভিঞ্জামুড়ি ও সহশিল্পীরা এসে কুচিপুড়ি নাচ প্রদর্শন করেন। |
সেই নায়ক |
মধ্য বিশ শতকের কর্নওয়ালিস স্ট্রিট। বিবেকানন্দ রোডের কাছে বাঙালির হোটেল মহৎ আশ্রম। দুপুরবেলা। তেতলায় রাস্তার দিকের ঘরে দীর্ঘদেহী এক পুরুষ যাওয়া-আসা করছেন চরিত্র থেকে চরিত্রে। আয়নামোড়া ঘরে সে অভিনয় ছড়িয়ে যাচ্ছে সবখানে। মহলা দিচ্ছেন দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শতকের প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে বাংলার মঞ্চ আর বঙ্গললনাদের হৃদয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এই নায়ক, কেউ কেউ যাঁকে বলতেন বাংলার ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্কস। শুরুটা নব্বই বছর আগে। অপরেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ‘কর্ণার্জুন’-এর মহলায় এক সন্ধ্যায় ‘শকুনি’ নরেশচন্দ্র মিত্র নিয়ে এলেন ২৯ বছরের দুর্গাদাসকে। দক্ষিণ গড়িয়ার জমিদারবংশের ছেলে দুর্গাদাস গ্রামে শখের অভিনয় ছাড়া কিছু করেননি। কিন্তু নাটকের সব পার্ট তখন বিলি হয়ে গিয়েছে। পড়ে আছে শুধু অকিঞ্চিৎকর বিকর্ণ। দুর্গাদাস তাতেই রাজি হলেন, বললেন, ‘যে পার্টই করি না কেন, নাটকে আমি সাপ খেলিয়ে দেব।’ স্টার-এ ১৯২৩-এর ৩০ জুন বিকর্ণ চরিত্রে প্রথম পেশাদার অভিনয় দুর্গাদাসের। তারই স্মরণে তিনটি বই প্রকাশ করল প্রতিভাস। সুধীরঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের সেই নায়ক দুর্গাদাস, শচীন দাশের স্বয়ং কন্দর্প দুর্গাদাস আর অভীক চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত চিরনবীন নায়ক দুর্গাদাস। প্রথম দুটি কাছ থেকে দেখার স্মৃতি, শেষেরটি মূল্যায়ন। সঙ্গে পরিমল গোস্বামীর তোলা ছবি।
|
|
|
|
নতুন করে |
উত্তমকুমারের লিপে মান্না দে প্রথম গান গেয়েছিলেন কোন ছবিতে? অনেকেই বলেন ‘শঙ্খবেলা’ (১৯৬৬)। কিন্তু না, তারও সাত সাতটি বছর আগে ‘গলি থেকে রাজপথ’ ছবিতে উত্তমকুমারের লিপে গান ছিল ‘লাগ লাগ ভেল্কির খেলা’। কথা সুবীর হাজরা, সুর সুধীন দাশগুপ্ত। দুর্লভ সেই গান, আরও অনেক দুর্লভের সঙ্গে সুলভ হল এ বার। ১৯৫৮-’৮৩, বাংলা গানের সেই নবীন শিল্পী প্রবোধ দে (মানা) থেকে তারকা-গায়ক মান্না দে হয়ে ওঠার পর্বটির অনেক হারিয়ে যাওয়া বাঁক ধরা থাকল সারেগামা প্রকাশিত তিনটি সিডি-র অ্যালবাম ‘বেস্ট অব মান্না দে’-তে। সৌজন্য এই শহরের কিছু মান্না-পাগল। পুরোভাগে অশোক ভট্টাচার্য, প্রথম উত্তম-লিপের গানটি-সহ পঁচিশটি দুর্লভ গান তাঁর রেকর্ডসংগ্রহ থেকে। আছেন অমিতা মুখোপাধ্যায়, সঞ্জয় সেনগুপ্ত, পিয়াল বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রদীপ্ত রায়। আর এই সূত্রেই বহু যুগের ও পার থেকে উঠে এল মান্না দে-র শিল্পীজীবনের পুরনো তথ্য। মান্না দে’র প্রথম বাংলা বেসিক গানের রেকর্ড ১৯৫৩-তে। ‘কত দূরে আর নিয়ে যাবে বলো’, ‘হায় হায় গো রাত যায় গো’। লতা মঙ্গেশকর তিন বার ডেট মিস করাতে নিজের সুরে নিজেই গেয়েছিলেন গানটি। কথা গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের। ১৯৫২-য় গেয়েছেন বিখ্যাত মরাঠি কবি বালাজি হোনা-র জীবনী নিয়ে তৈরি বাংলা ও মরাঠি ভাষার ডবল ভার্সন ছবি ‘অমর ভূপালি’-তে। এই ছবিতেই লতা ও আশা-র সঙ্গে ডুয়েট গেয়েছেন মান্না দে। রেকর্ডে নাম ছিল প্রবোধ দে (মানা)। ‘অমর ভূপালি’ (১৯৫২) মান্না দে’র গান-সহ প্রথম বাংলা ছবি। এর পরে বাংলা ছবিতে প্রথম একক গান ‘গৃহপ্রবেশ’-এ, ১৯৫৪-য়। সুর মুকুল রায়, কথা রাজকৃষ্ণ রায়। গানটি ছিল ‘খেলার ছলে হরিঠাকুর’, লিপ দেন পাহাড়ী সান্যাল। এর কোনও রেকর্ড বেরোয়নি, সিনেমা ট্র্যাকেই আছে। বিস্মৃতি থেকে যেন জেগে উঠলেন আর এক মান্না, এই আশ্চর্য অ্যালবামে। |
|
|
|
|
|
|
|