উইম্বলডনে মেয়েদের ফাইনালটা আনন্দদায়ক হবে। যেহেতু এক দিকে থাকছে মেয়েদের সার্কিটের সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত প্লেয়ার। আর উল্টো দিকে মেয়েদের টেনিসে সর্বকালের পাওয়ারফুল প্লেয়ার। আমি খুবই অবাক হব যদি শনিবারের খেতাবি ম্যাচে শক্তিশালী সেরেনা রাদোয়ানস্কার বিরুদ্ধে ততটাই দাপট দেখায়, যতটা ও সেমিফাইনালে আজারেঙ্কার বিপক্ষে দেখিয়েছিল। তেইশ বছরের পোলিশ মেয়ে রাদোয়ানস্কা খুব চিন্তাশীল প্লেয়ার। ওর টেনিসে যেটার অভাব তার নাম পাওয়ার। কিন্তু সেই অভাবটা রাদোয়ানস্কা মেটায় ওর ঝকঝকে কোর্ট প্লে-র মাধ্যমে। রাদোয়ানস্কা অনেকটা মার্টিনা হিঙ্গিস ধরনের প্লেয়ার। হিঙ্গিস ওর বুদ্ধি দিয়ে ফর্মের মধ্যগগনে বিরাজ করা উইলিয়ামস বোনেদের অনেক বার হারিয়েছে। সে রকমই আজ পোলিশ তরুণীকেও খুব তীক্ষ্ম আর ধূর্ত হয়ে উঠতে হবে কোর্টে। এবং আমার ধারণা, রাদোয়ানস্কাকে হারাতে সেরেনাকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে। ফাইনাল মোটেও একপেশে হবে না। |
আগের রাউন্ডে সেরেনা বর্তমান অস্ট্রেলীয় ওপেন চ্যাম্পিয়ন আজারেঙ্কার বিরুদ্ধে নিঁখুত খেলেছে। মাত্র দু’টো সেটে ২৪টা ‘এস’ মেরেছে। অবিশ্বাস্য! আমি মনে করি, আজ ফাইনালে রাদোয়ানস্কাকে হারাতে হলে সেরেনাকে ও রকমই দুর্ধর্ষ সার্ভিস করে যেতে হবে ধারাবাহিক ভাবে। আজারেঙ্কা কখনই সেরেনার বিরুদ্ধে তেমন ভাল কিছু করতে পারেনি। বিশেষ করে প্রথম সেটে। যেটা সেরেনাকে সেমিফাইনালে দারুণ উজ্জ্বল দেখানোর একটা বড় কারণও। আজারেঙ্কার মতো রাদোয়ানস্কাও র্যাঙ্কিংয়ে একেবারের ওপরের দিকের মেয়ে। তবে বিশ্বের তিন নম্বর খুব গোছানো, জমাট প্লেয়ার। ও হয়তো সেরেনার পরীক্ষা সে ভাবেই নেবে, যে ভাবে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনালে সামান্থা স্তোসুর নিয়েছিল। সেই ম্যাচেও সেরেনা হট ফেভারিট ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্ট্রেট সেটে হেরে যায়। সে জন্য বলব, সেরেনা আরও একটু বেশি সার্কিটে খেলুক। কারণ, শারাপোভা আর সেরেনা এখনও বিশ্বের দু’জন সর্বোচ্চ সারির প্লেয়ার। অথচ এখানে বারো নম্বর বাছাইয়ের মর্যাদা পেয়েছে, আবার ফাইনালে তাকেই তৃতীয় বাছাইয়ের বিরুদ্ধে হট ফেভারিটের তকমা দেওয়া হচ্ছে। তার মানে, কোথাও কোনও গোলমাল আছে।
আমার অবশ্য সেরেনা-মারিয়া ফাইনাল দেখতে আরও ভাল লাগত। যদিও সতীর্থ জার্মান লিসিকির হাতে মারিয়া শারপোভার প্রি-কোয়ার্টারে বিদায় আর কোয়ার্টারে দুই জার্মান মেয়ের মধ্যে লড়াই আমাকে খুব গর্বিতও করেছে। জাত্যভিমান ইস্যুতেই এটাও কি বলা যায়, গ্র্যান্ড স্লামের ইতিহাসে প্রথম পোলিশ প্লেয়ার হিসেবে রাদোয়ানস্কা যখন এত দূর পৌঁছেছে, তা হলে শেষ ধাপটাও টপকে যাক? কে বলতে পারে, ও যদি নিজের স্নায়ুকে বশে রেখে বুদ্ধিদীপ্ত টেনিস খেলে, তা হলে বিখ্যাত প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধেই ইতিহাস গড়বে না? |