|
|
|
|
সম্পত্তি মামলা খারিজ, মায়াকে ছাড় সুপ্রিম কোর্টের |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে বড়সড় স্বস্তি পেলেন বহুজন সমাজ পার্টি প্রধান মায়াবতী। তাঁর বিরুদ্ধে ন’বছরের পুরনো মামলাটি এ দিন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ঘটনাচক্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ঠিক দুই সপ্তাহ আগে এই স্বস্তি জুটল উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।
আদালতের রায়ের প্রকাশ্য সমালোচনার পথে হাঁটছে না কোনও দলই। তবে রাষ্ট্রপতি ভোটে ইউপিএ প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থনের সঙ্গে এ ঘটনার যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে বিজেপি। এ দিন মায়াবতীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য সিবিআইকে ভর্ৎসনাও করেছে আদালত। বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের মতে, তাজ করিডর মামলায় ২০০২ সালে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বুঝতে পারেনি সিবিআই। ওই মামলায় অভিযুক্ত সরকারি অফিসারদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে বলা হয়েছিল। কখনওই মায়াবতীর বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগে এফআইআর করতে বলা হয়নি। আদালতের মতে, সিবিআইয়ের এ ধরনের কাজ অনভিপ্রেত। এই মামলা দায়ের করে ‘অধিকারের সীমা’ ছাড়িয়েছে তারা। আইনজীবী মহলের একাংশ অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের আগের কিছু নির্দেশ দেখিয়েই আজকের রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, ২০০৩ সালে ১৮ সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতেই সিবিআই তাজ করিডর এবং আয় বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ প্রশ্নে দু’টি আলাদা আলাদা এফআই আর দায়ের করে। এবং সিবিআই আদালতে জানায়, তাজ করিডর মামলার সঙ্গে সম্পত্তি মামলার কোনও যোগ নেই। তার ভিত্তিতে ২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট দু’টি মামলাকে আলাদা করে দেয়। সেই রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অধিকার সিবিআইয়ের আছে। অর্থাৎ শীর্ষ আদালতের নির্দেশেই আলাদা ভাবে মায়াবতীর বিরুদ্ধে সম্পত্তি তদন্ত করেছিল সিবিআই।
সিবিআইয়ের প্রশ্ন ছিল, ২০০৩ সালে মায়াবতীর ঘোষিত সম্পত্তি যেখানে ১ কোটি টাকা ছিল, তা ২০০৭ সালে ৫০ কোটি হল কী করে? এবং মায়াবতীর সম্পত্তি যে তাঁর আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন, তার প্রচুর প্রমাণ আছে। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি ছিল, তাঁর আয়ে যে বেআইনি কিছু নেই, তা কেন্দ্রীয় আয়কর ট্রাইব্যুনালই জানিয়ে দিয়েছিল। সিবিআই তা গ্রাহ্য করেনি। আর শীর্ষ আদালত আজ বলেছে, ২০০৮-এ সিবিআই একটি ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দিয়েছিল। কিন্তু মায়াবতী ১৯৯৫ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন বিপুল সম্পত্তি করেছেন তার প্রমাণ ওই রিপোর্টে ছিল না।
সিবিআইয়ের এই মামলা নাকচ করার জন্য ২০০৮ সালে আবেদন করেছিলেন মায়াবতী। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা সাজানো হয়েছে। আজ তাঁর আবেদন আদালত মেনে নেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি মায়াবতী. এ দিন তিনি বলেন, “সমর্থকরা এই ন’বছর আমার পাশে ছিলেন। কারণ তাঁরা তাঁদের বহেনজীকে চেনেন।” একই সঙ্গে মায়াবতী এনডিএ আমলে তাঁকে এই মামলায় ‘ফাঁসানো’র জন্য বিজেপিকেই দায়ী করেন। কিন্তু বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভির বক্তব্য, “২০০৩ সালে অল্প সময়ের জন্য বিজেপি ক্ষমতায় ছিল। মায়াবতী যে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করছেন, তা সত্য নয়। বরং তার পর আট বছর ধরে কেন্দ্রে কংগ্রেসই ক্ষমতায় রয়েছে। যে সরকারকে মায়াবতী সমর্থন দিয়ে আসছেন।” বিজেপির মুখপাত্র তরুণ বিজয়ের অভিযোগ, “আদালতের আজকের মনোভাবই প্রমাণ করছে, সরকার তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কী ভাবে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে।” কংগ্রেস স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চাইছে। আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বলেন, “সুপ্রিম কোটর্র্ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করে। তাদের মতামত সকলেরই মেনে নেওয়া উচিত। এর সঙ্গে রাজনীতি যুক্ত করার অর্থ নেই।” |
|
|
|
|
|