মনমোহনের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে প্রণবই অস্ত্র বিজেপির
প্রণব মুখোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রীর ‘মতান্তর’কে উস্কে দিয়ে মনমোহন সিংহের কর্তৃত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলল বিজেপি।
রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রী পদ থেকে সদ্য ইস্তফা দিয়েছেন প্রণববাবু। তার পর অর্থ মন্ত্রকটি সামলাচ্ছেন মনমোহনই। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা ও তাকে সংস্কারের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য মনমোহন এমন সব বার্তা দিচ্ছেন, তাতে মনে হচ্ছে প্রণববাবুর সঙ্গে তাঁর মতের অনেক ফারাক ছিল। প্রণববাবু অর্থমন্ত্রী থাকার সময় যে সব সিদ্ধান্ত তিনি নিতে পারেননি, এখন মনমোহন সেই ’৯১-এর সংস্কারমুখী অর্থনীতি ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। আজ এক দৈনিকে মনমোহন সিংহের সাক্ষাৎকারে বিষয়টি ফুটে উঠেছে। সেখানে অর্থনীতির বেহাল দশার জন্য বিজেপিকেও দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মনমোহনের এই মনোভাবের সমালোচনা করেই আজ তাঁকে আক্রমণের পথে নামে বিজেপি। তারা যে প্রণববাবুকে সমর্থন করছে, এমন নয়। কিন্তু প্রণববাবুর প্রসঙ্গ টেনে মনমোহনের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলারই কৌশল নিয়েছে তারা। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং বিজেপির ঘাড়ে যাবতীয় দায় চাপিয়ে যে ভাবে প্রধানমন্ত্রী নিজের দোষ ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন, তা করে তিনি পার পাবেন না। অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সময়ে যদি কোনও ভুলও হয়, তার দায়ও এড়াতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী। সরকারের কোনও নীতি অর্থমন্ত্রী একা নিতে পারেন না। এমনকী, প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণ সম্মতির পরেই অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করতে পারেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী এমন ভাব করছেন, যেন প্রণববাবু অর্থ মন্ত্রক ছাড়ার পর একটি নতুন সরকার তৈরি হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে গোটা অর্থনীতির হালই বদলে দেবে সেই সরকার। বিজেপির প্রশ্ন, তা হলে কি প্রণববাবু থাকার সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর কর্তৃত্ব কায়েম করতে পারেননি? তিনি চলে যাওয়ার পর এখন সেই চেষ্টা করছেন? প্রধানমন্ত্রীর যদি কর্তৃত্ব না থাকে, তা হলে এখনও কাজটি তিনি করতে পারবেন না।
প্রণব-মনমোহনের মধ্যে এই মতান্তরের বার্তা নিয়ে খোদ কংগ্রেসও উদ্বিগ্ন। ঘরোয়া স্তরে কংগ্রেস নেতারা স্বীকার করছেন, যে ভাবে প্রণববাবু চলে যাওয়ার পর মনমোহন আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে শিল্পক্ষেত্রের আস্থা অর্জনের চেষ্টায় নেমেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটি জরুরি। কিন্তু প্রণববাবু থাকার সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েও যদি সেই সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন, তা হলে তাঁর কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাও স্বাভাবিক। আর একটি আশঙ্কাও রয়েছে। যে ভাবে মনমোহন গত ক’দিন ধরে সংস্কার নিয়ে হইচই করছেন, শেষ পর্যন্ত তা যদি তিনি বাস্তবায়িত করতে না পারেন, তা হলে সরকারেরই মুখ পুড়বে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে তাই কংগ্রেসও আসরে নেমেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর মধ্যে যে মতান্তরের কথা বলা হচ্ছে, তা একেবারেই মনগড়া। এর ভিত্তি নেই।”
কিন্তু বিজেপি শুধু প্রণব-মনমোহন মতান্তর উস্কে দিয়েই থামতে চাইছে না। প্রধানমন্ত্রীর বিজেপিকে আক্রমণের প্রেক্ষিতে যশবন্ত আজ হুমকি দেন, “এর পরে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের কাছ থেকে আর কোনও সহযোগিতা প্রত্যাশা করবেন না।” তাঁর মতে, যে সংস্কারের দোহাই দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, তার মধ্যে বিজেপি না থাকলে পেনশন বিল সংসদে আনতেই পারত না সরকার। বরং শরিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতেই সরকার তা পাশ করাতে পারেনি। বিজেপির এক নেতার কথায়, “প্রণববাবু থাকার সময় তা-ও তিনি সব দলের মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্টা করতেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে কারও পরোয়া না করে এগোতে চাইছেন, তার ফল তাঁকে ভোগ করতেই হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.