দিঘায় বাতিল কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন প্রকল্প
নফোসিসের লগ্নি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরে ফের ধাক্কা খেল রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। বাতিল হয়ে গেল দিঘায় প্রস্তাবিত কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন প্রকল্প। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, প্রকল্পটি লাভজনক না হওয়ার আশঙ্কাতেই পিছিয়ে গিয়েছে টেলিকম মন্ত্রক। সম্প্রতি এ কথা রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়েও দিয়েছে তারা।
চার বছর আগে এই কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরির সবুজ সঙ্কেত দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কখনও কেন্দ্র ও রাজ্যের গড়িমসি, কখনও বা অর্থাভাব, কখনও আবার জমি সমস্যা একের পর এক জটে বারে বারেই আটকে গিয়েছে ১,৬০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প। তবে রাজ্যে পট পরিবর্তনের পরে কিছুটা নড়েচড়ে বসে সরকার। এ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে তদ্বির করার কথাও জানান শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া শুরুর মুখেই জল ঢেলে দিল কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত।
দুই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা এমটিএনএল এবং বিএসএনএল-এর যৌথ সংস্থা মিলেনিয়াম টেলিকম (এমটিএল) কেব্ল স্টেশনটি গড়ার দায়িত্ব পায়। দিঘা থেকে সিঙ্গাপুর পর্যন্ত কেব্ল লাইন পাতার পরিকল্পনা হয়। নিযুক্ত হয় বিদেশি উপদেষ্টা সংস্থা। প্রকল্প তৈরির জন্য ডাকা হয় টেন্ডারও। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, প্রকল্প গড়ার জন্য টেন্ডারে সংস্থাগুলি যে দর হাঁকছে, তাতে বাণিজ্যিক লাভের আশা দেখছে না এমটিএল। আর সেই কারণেই প্রকল্প তৈরি সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা। প্রসঙ্গত, সরকারি টেলিকম সংস্থা এমটিএনএল, বিএসএনএল-এর আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই অবস্থায় নতুন করে লোকসানের বোঝা ঘাড়ে নিতে রাজি নয় তারা। সেই কারণেই প্রকল্প থেকে সরে আসার এই সিদ্ধান্ত।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ থেকেই প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মাঝে তিন বার কেন্দ্রে নতুন সরকার এসেছে। তিন জমানার টেলিকম মন্ত্রীই এ নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন। প্রথমে এনডিএ আমলে অরুণ শৌরি কলকাতায় এসে জানান হলদিয়ায় কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনার কথা। পরবর্তী সরকারের আমলে অবশ্য দয়ানিধি মারান চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় ল্যান্ডিং স্টেশনের প্রস্তাব তুলে কার্যত এ রাজ্যের ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরির আশায় জল ঢেলে দেন। তার পরে আবার এ রাজা জানান, কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন হবে পশ্চিমবঙ্গেই।
বস্তুত, রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নির নতুন চুম্বক হতে পারত এই কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি হলে চওড়া ‘ব্যান্ডউইড্থ’-এর দৌলতে দ্রুত তথ্য পরিবহণের সুবিধা মিলত আরও কম খরচে। আর তার টানে আসতে পারত টেলিকম, ব্যাঙ্কিং, থ্রি-ডি ইমেজিং-সহ বিভিন্ন পরিষেবার উন্নতমানের কাজকর্ম। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায় প্রচুর তথ্য এক সঙ্গে পাঠাতে হয়। ‘ব্যান্ডউইড্থ’ না থাকলে তা সম্ভব হয় না। ফলে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা প্রাথমিক স্তর পেরনোর ক্ষেত্রে এই অভাবও অন্যতম বাধা। বর্তমান যে পরিকাঠামো রয়েছে, তাতে চেন্নাই ও মুম্বইয়ের কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে তথ্য পাঠানো হয়। রাজ্যে এই স্টেশন তৈরি হলে তথ্য পরিবহণের গতি এক লাফে বিশ্বমানে পৌঁছে যেত। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে সে আশা দূর অস্ৎ।
রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের মতে প্রকল্প নিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য কেন্দ্রের দ্বারস্থ হওয়া জরুরি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে রাজ্যের প্রধান শাসক দল ও কেন্দ্রের সম্পর্ক যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে, তাতে তদ্বিরের ফল নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.