|
|
|
|
তিন বছরেও রাস্তা পাকা হয়নি দুবরাজপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
পাকা রাস্তার দাবি আদায় করতে গিয়ে প্রায় তিন বছর ধরে এ ভাবে ভুগতে হবে তা সম্ভবত ভাবেননি এলাকাবাসী। তাঁরা চেয়েছিলেন দুবরাজপুর থেকে খয়রাশোলের লোকপুর (বালিজুড়ি গ্রাম হয়ে) পর্যন্ত মাটির রাস্তাটি পাকা হোক। ২০০৯ সালের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ওই রাস্তাটি পাকা করার কাজ শুরু হয়। কিন্তু প্রায় তিন বছর হতে চললেও কাজ শেষ না হওয়ায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাস্তায় পিচের কাজ প্রায় শেষ। কিন্তুএখনও পর্যন্ত ওই রাস্তার উপরে থাকা ছোট ছোট সেতু বা কালভার্টগুলির কাজও সম্পূর্ণ হয়নি। কোথাও কালভার্ট তৈরির জন্য সবে মাটি কাটা হয়েছে, কোথাও এক বছর আগে তৈরি হওয়া সেতু সংযোগকারী রাস্তায় পাথর-বোল্ডার পড়ে আছে। কোথাও আবার সদ্য শেষ হওয়া সেতু সংযোগকারী রাস্তাই তৈরিই হয়নি। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা দুষ্কর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। বিশেষ করে দু’চাকা বা চার চাকার গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করতে আরও অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। |
|
ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত। |
এই রাস্তার উপরে নির্ভরশীল দুবরাজপুরের মঙ্গলপুর, বালিজুড়ি, আগয়া, কাপাসতোড় এবং খয়রাশোলের ডেমুড়িয়া, ছোড়া, লোকপুর-সহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের ক্ষোভ, “বছরের পর বছর লেগে যাচ্ছে একটা রাস্তা পাকা করতে। এ ভাবে কতদিন দূর্ভোগ পোহাতে হবে কে জানে।”
রাস্তার কাজ কবে শেষ হবে বলতে পারেননি দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি প্রিয়ঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “কবে যে শেষ হবে, সত্যি জানি না! যদিও বা এতদিন পরে পিচ পড়ল কিন্তু ছোট সেতু বা কালভার্টগুলির কাজও সম্পূর্ণ না হওয়ায় এই বর্ষাতেও এলাকার বাসিন্দাদের দূর্ভোগ অপেক্ষা করছে। ওই রাস্তার দায়়িত্বে থাকা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে এ ব্যাপারে বহুবার জিজ্ঞাসা করেও কোনও স্পষ্ট উত্তর পাইনি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুরের রঞ্জনবাজার থেকে লোকপুর পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের কথা প্রথমে ঠিক থাকলেও দু’দিকেরই তিন কিলোমিটার করে অংশের কাজ আগেই হয় রয়েছে। লোকপুর থেকে ওই রাস্তাটির মানকরা গ্রামের দুর্গামন্দির পর্যন্ত অংশ আগেই পাকা ছিল। অন্য দিকে, রঞ্জনবাজার থেকে দাঁতিনপুকুরের কিছুটা আগে পর্যন্ত রাস্তার কাজ বছর তিনেক আগে জেলা পরিষদের টাকায় সম্পন্ন হয়েছে। মাঝের ৮ কিলোমিটার অংশের সংস্কারকাজ বর্তমান প্রকল্পের আওতায় হওয়ার কথা। মোট ২ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
রাস্তার এই অংশটি সংস্কারে এত বিলম্ব হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষজন। লোকপুর গ্রামের বাঁকা দত্ত, ডেমুড়িয়ার দয়াময় ঘোষ, ছোড়া গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল ঘোষ কিংবা ফুলবেড়িয়া গ্রামের সমীর বন্দ্যোপাধ্যায় সকলেই এক সুরে বলছেন, “শুধু কাজ শেষ হতে দেরি হচ্ছে তা নয়, রাস্তার কাজের মানও খারাপ। তবে এই মূহুর্তে একটাই চাওয়াকাজ শেষ হোক। তা না হলে আমাদের দূর্ভোগের শেষ নেই।”
কাজ যে অনেক আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিল, সে কথা এই রাস্তার দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জীব হালদারও স্বীকার করে নিয়েছেন। বিলম্ব কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যে ঠিকাদার রাস্তার কাজ করছেন, তাঁকে শো-কজ করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁকে বরখাস্ত করা হবে জানিয়ে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শীঘ্রই রাস্তার কাজ শুরু করে জুলাই মাসের মধ্যে তা অবশ্যই শেষ করতে হবে।” |
|
|
|
|
|