ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের বেশি দেরি নেই। ২০১৩ সালের নভেম্বরেই ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। তার আগে জঙ্গি ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ নিয়ে শাসক সিপিএম ও বিরোধী কংগ্রেস-আইএনপিটি জোটের কাদা ছোড়াছুড়িতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকের পরে কংগ্রেস-আইএনপিটি জোটের বিরুদ্ধে জঙ্গি যোগসাজশের অভিযোগ আনেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর। সম্প্রতি দু’জন প্রাক্তন জঙ্গি-সহ পাঁচ জন এনএলএফটি (বিএম) সদস্য ধরা পড়েছে। বিজনবাবুর বক্তব্য, “ধৃত জঙ্গিরা একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। সেই ষড়যন্ত্রে এনএলএফটি’র বিশ্বমোহন দেববর্মা, রাজ্য কংগ্রেসের উপজাতি সেলের এক নেতা এবং কয়েক জন আত্মসমর্পণকারী জঙ্গি জড়িত।” তাঁর অভিযোগ, ২০০৮ সালের ধাঁচে আগরতলায় ধারাবাহিক বিষ্ফোরণের ছক কষছে এনএলএফটি। ২০১৩ সালের ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস এবং আইএনপিটির সাহায্যে এ রাজ্যে জঙ্গি কার্যকলাপ বৃদ্ধির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিজনবাবুর দাবি, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের গ্রেফতার করা হোক। বিষয়টি নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের ব্যাখ্যাও চান তিনি।
এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। উল্টে সিপিএমের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মণ। তাঁর বক্তব্য, জঙ্গি ঘনিষ্ঠতার অভিযোগের তদন্ত সিবিআই বা এনআইএ-র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে করানো হোক। আত্মসমর্পণকারীদের একাংশের সঙ্গে কে বা কারা যোগাযোগ রাখছে, এনএলএফটিকে কারা মদত দিচ্ছে, সব কিছু নিয়েই তদন্ত করতে হবে। কংগ্রেসের বক্তব্য, গত তিনটি বিধানসভা ভোটেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে শাসক দলের এই ধরনের অভিযোগ ত্রিপুরাবাসী শুনেছেন। অথচ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ত্রিপুরায় কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগ নেই। সুদীপবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “সম্প্রতি ত্রিপুরার গোমতী জেলার অমরপুর মহকুমায় একদল আত্মসমর্পণকারী জঙ্গির সঙ্গে সিপিএম নেতৃত্ব গোপন বৈঠক করেছেন।” তাঁর আরও বক্তব্য, রাজ্যের আইন দফতর সব পিপি-দের নোট পাঠিয়ে বলেছে, ৭৩৬ জন আত্মসমর্পণকারী জঙ্গির বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা মামলা তুলে নেওয়া হোক। এই নির্দেশ রাজ্য দিতে পারে না। কারণ, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নীতির পরিপন্থী। |