|
|
|
|
|
|
বাড়তি কোনও লাভ হয় না |
ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়
ডিরেক্টর এবং সি ই ও, ইনথিঙ্ক এডুটেক
(মতামত ব্যক্তিগত) |
একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় প্রায়ই: এম বি এ পড়তে চাইলে বি বি এ পড়া থাকলে কি লাভ হয় কোনও?’ আমাদের দেশে এম বি এ মূলত দু’বছরের প্রোগ্রাম। এই দু’বছরের মাঝখানে একটা দু’-তিন মাসের ইন্টার্নশিপও থাকে। আমার মতে, ম্যানেজমেন্ট-এর বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করার জন্য দু’টো বছর যথেষ্ট সময়। তার জন্য বি বি এ-র তিন বছর, এম বি এ-র দু’বছর মোট পাঁচ বছর ধরে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পড়ার কোনও যুক্তি নেই।
স্নাতক স্তরে ম্যানেজমেন্ট পড়ার চলটা ব্রিটেন, আমেরিকা ইত্যাদি দেশে বেশি। আমাদের সঙ্গে এই সব দেশের একটা বড় তফাত এই যে ম্যানেজমেন্ট-এ স্নাতক হয়েই চাকরি শুরু করার ভাল সুযোগ আছে ওই সব দেশে। সাধারণত ছাত্ররা ওদেশে কর্মজীবন শুরু করে ফেলে ব্যাচেলর ডিগ্রির পরেই আর তার পর তিন থেকে পাঁচ বছর পর ফিরে আসে এম বি এ পড়তে, তাদের ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য। এই ট্রেন্ডটাকে খানিকটা অনুসরণ করে আমাদের দেশে বি বি এ জাতীয় প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এই পর্যায়ে চাকরির সুযোগ এখনও খুবই কম।
এই পর্যায়ের চাকরি কম হওয়ার আর একটা বড় কারণ ভারতে এম বি এ ইনস্টিটিউটের প্রাচুর্য। আর এই সব প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-সংখ্যাও এত বেশি যে প্রায় যে-কোনও বাণিজ্য-সংক্রান্ত কাজের জন্য এম বি এ করা ছেলে পাওয়া যায়, মাসিক দশ হাজার টাকা মাইনেতেও। তার ফলে বি বি এ করে চাকরি পাওয়ার সুযোগ তেমন থাকেই না, কল সেন্টার বা বিমা ছাড়া। এই শেষের দুটি ক্ষেত্রে কাজের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করাই যথেষ্ট, কিন্তু সেখানে চাকরি পাচ্ছে বি বি এ-রা। আর এমন বহু কাজ যেখানে বি বি এ যোগ্যতাই যথেষ্ট, সেখানে চাকরি পাচ্ছে এম বি এ-রা।
আরও একটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে। ম্যানেজমেন্ট কোনও সংস্থার মূল ব্যবসার ক্ষেত্র নয় ম্যানেজমেন্ট হল যে কোনও ক্ষেত্রে ব্যবসার দিকটা ঠিক ভাবে পরিচালনা করার দক্ষতা। তাই স্নাতকোত্তর স্তরে যখন কেউ এম বি এ পড়তে আসে তখন বি বি এ পড়ে আসার থেকে কোনও একটা বিশেষ ক্ষেত্রে পড়াশোনা করে এলে সেটা অনেক বেশি কার্যকর হয়। অর্থাৎ ধরা যাক, ইঞ্জিনিয়ারিং (বি ই বা বি টেক), অ্যাকাউন্টিং বা কমার্স (বি কম), ইকনমিক্স (বি এসসি) ইত্যাদি পড়ে কেউ এম বি এ করল। চাকরির ক্ষেত্রে নিয়োগকারী সংস্থা কিন্তু এই সব প্রার্থীর কাছ থেকে একই সঙ্গে দু’টো বিষয়ে দক্ষতা পেয়ে যেতে পারে ম্যানেজমেন্ট এবং তার স্নাতক স্তরের বিষয়। সুতরাং এক ধাপ এগিয়ে থাকে এই প্রার্থীরা। বিভিন্ন সংস্থায় যাঁরা মানব সম্পদ বিভাগ দেখেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বললে কিন্তু এই মতটিই শোনা যায়। |
|
|
|
|
|
|