উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
পানিহাটি
এ ভাবেই বাস
রা গ্রীষ্মেও বাড়ির চার পাশ জল আর ঝোপঝাড়ে ভরা। অভিযোগ, বর্ষায় এক মাসের উপরে জলবন্দি থাকতে হয়। প্রতি দিন মশা, মাছি আর দুর্গন্ধে জেরবার হন বাসিন্দারা। এমনই অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন পানিহাটি পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামাশ্রীপল্লি, সূর্য সেননগর ও গৌরাঙ্গনগরের বাসিন্দারা। যদিও পুরসভার দাবি, উন্নয়ন হয়েছে। দ্রুত বাকি সমস্যারও সমাধান করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই অঞ্চল এমনিতেই নিচু। এখন প্রায় দু’হাজার মানুষ বাস করেন। অধিকাংশই শ্রমজীবী। কিছু পাকাবাড়ি। অধিকাংশই দরমার বাড়ি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই অঞ্চলে কোনও উন্নয়ন হয়নি। অন্য এলাকার জল এসে জমে থাকছে। নিকাশি না-থাকায় জল সরছে না। ঝোপঝাড় আর কচুরিপানায় চার পাশ ভরে গিয়েছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, জল জমে থাকার কারণে মশা, মাছি ও নানা পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়ছে। রয়েছে সাপের উপদ্রবও। বেশ কিছু বাড়িতে ঢোকার রাস্তা নেই। কেউ পুরসভার তৈরি করা ফুটখানেক চওড়া গার্ডওয়ালের উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। কেউ বাঁশের সাঁকো তৈরি করে নিয়েছেন। কেউ আবার খোয়া ভরা বস্তা ফেলে কোনও রকমে যাতায়াত করেন। কিছু মানুষকে কয়েক ফুট জলের মধ্য দিয়েই বাড়ি যেতে হয়।
নিকাশির অভাবে দুর্গন্ধে নাকাল হতে হয় বাসিন্দাদের। পুরসভা কিছু রাস্তা তৈরি করলেও অধিকাংশ বাসিন্দাই তার সুবিধা পান না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্য ওয়ার্ডের উন্নয়ন হলেও, এই ওয়ার্ড বঞ্চিত থেকে গিয়েছে। গ্রীষ্মেই দূষিত জল জমে রয়েছে। বর্ষায় প্রাণান্তকর অবস্থা হয়। গৌরাঙ্গনগরের বাসিন্দা নারায়ণ বসাক বলেন, “প্রতি বছর বর্ষায় খারাপ অবস্থা হয়। নোংরা জল ঘরে ঢুকে যায়।” আর এক বাসিন্দা দীপা বিশ্বাসের কথায়: “যাতায়াতে এতই সমস্যা যে কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে খুবই অসুবিধা হয়। সাপ ঘরে ঢুকে পড়ে। সব মিলিয়ে নরকযন্ত্রণা পোহাতে হয়।”
স্থানীয় কাউন্সিলর সিপিএমের সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় বলেন, “কয়েক বছর আগে আরও খারাপ অবস্থা ছিল। গত কয়েক বছরে বেশ কিছু রাস্তা আর পাকা নর্দমা তৈরি করা হয়েছে। বহু কাজ বাকি আছে। অর্থাভাবে করা যাচ্ছে না। নিচু এলাকা বলে উন্নয়নের কাজ যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। বস্তি উন্নয়নের অর্থ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কাজও এগনো যাচ্ছে না। বর্ষায় ভোগান্তি কমাতে আলোচনা চলছে।”
পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএমের চারণ চক্রবর্তী বলেন, “নিচু এলাকা হওয়ায় ওই এলাকার উন্নয়ন সহজ নয়, খরচসাপেক্ষও বটে। তবু অনেক কাজ হয়েছে। কিছু কাজ অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে। বিইউএসপি প্রকল্পের টাকা দু’বছর ধরে আসছে না। ওই টাকা এলে অনেকটাই কাজ করা যাবে।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.