রবিবারও দিনভর একটানা ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তিস্তা, তোর্সা, কালজানি, রায়ডাক, মানসাই, গদাধর-সহ সমস্ত নদীতে জল বেড়েছে। শনিবার রাতে হলুদ সঙ্কেত জারি হয় তিস্তায়। রবিবার সকালে জলঢাকা নদীতেও হলুদ সঙ্কেত জারি হয়েছে। কোচবিহার সদর ও তুফানগঞ্জ মহকুমার প্রায় ১৫টি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। দুর্গতদের জন্য তুফানগঞ্জে তিনটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।
প্রাক বর্ষায় গত কয়েক দিন ধরেই ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি চলছিল। আর শনিবার
থেকে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলার সমতলের পাশাপাশি ভুটান পাহাড়েও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। |
শিলিগুড়ির কাছে ফুলবাড়ির পশ্চিম ধনতলা গ্রামের ২৫টি পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কালজানির জল বাড়ায় আলিপুরদুয়ার শহরের ৯, ১১, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে চর এলাকা থেকে বেশ কিছু পরিবার নদীবাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। সঞ্জয় নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় পাতলাখাওয়ায় ১৫টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। ডুয়ার্সের মাদারিহাট, ফালাকাটা ও ধূপগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকাও জলমগ্ন। ফালাকাটায় মুজনাই নদীতে বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। তুফানগঞ্জের দেওচড়াইয়ের সন্তোষপুরে গদাধর নদী ও বলরামপুরের সরেয়ারপাড়ের কালজানি নদীর বাঁধের একাংশ ভেঙে গিয়েছে। দার্জিলিঙের লেবঙে ধস নেমে একটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। সোমবারও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা করছেন ওই সব এলাকার বাসিন্দারা। টানা বৃষ্টিতে ধসের আশঙ্কা করছেন দার্জিলিঙের বাসিন্দারাও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁরাও তৈরি হচ্ছেন বলে জেলা প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে।
কোচবিহারের সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “টানা বৃষ্টির জেরেই এই পরিস্থিতি। বৃষ্টি না-থামলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।” আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “মহকুমার কয়েকটি গ্রামে জল ঢুকে পড়েছে বলে খবর মিলেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন তৈরি। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার রয়েছে।” |