হাসপাতালে ঢোকার মুখে বাহারি গাছ লাগানো টবের সারি। চকচক করছে ওয়ার্ডের মেঝে। সদ্য পরিষ্কার করা হয়েছে প্রতিটি বাথরুম। নার্সদের ব্যবহারও যেন পাল্টে গিয়েছে আজ। সব দেখে শুনে তো হতবাক রোগীর বাড়ির লোকজন। আজ চেনা হাসপাতালের হল টা কী!
শনিবার নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পরিষেবা খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল। হাসপাতাল সাজিয়ে গুছিয়েও অবশ্য শেষ রক্ষা হল না। প্রতিটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান সুব্রত মৈত্রের নেতৃত্বে আসা ওই প্রতিনিধিরা।
ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা থেকে থাবারের গুণগত মানসবেতেই ফাঁকি। ডিউটি রোস্টার থেকে অপারেশন থিয়েটারসব বিষয়েই ত্রুটি রয়েছে বলে পরিদর্শন শেষে জানালেন প্রতিনিধিরা।
হাসপাতাল পরিদর্শনের খবর আগে থেকে জানা ছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। ফলে সকাল থেকেই চলছে সাজানো-গোছানো। তবে পরিষেবার ত্রুটি নজরে পড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের।
হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে প্রথমেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের ডিউটি রোস্টার নিয়ে আপত্তি তোলেন এক আধিকারিক। আপত্তি ওঠে হাসপাতালের বারান্দায় ভর্তি ওষুধ কোম্পানির বিজ্ঞাপন নিয়েও। চোখে পড়ে বেসরকারি বিভিন্ন ল্যাবের ফোন নম্বরও। আধিকারিকদের নির্দেশে দ্রুত মোছা হয় নম্বর। ছিঁড়ে ফেলা হয় বিজ্ঞাপনও। হাসপাতালের ওষুধের খাতাপত্র দেখে তো মাথায় হাত আধিকারিকদের। হাসপাতালের ডিসপেন্সরিতে এমন কিছু ওষুধ মেলে যা আদৌ স্বাস্থ্য দফতর স্বীকৃত নয়। একাধিক ওষুধের সরবরাহ হাসপাতালে নেই। প্রশ্ন উঠলেও সদুত্তর দিতে পারেননি আধিকারিকেরা।
পরিদর্শনের মাঝে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ঘিরে ধরেন রোগীর আত্মীয়েরা। জানাতে শুরু করেন অভাব অভিযোগের কথা। ওই আধিকারিকেরা তাঁদের নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করতে বলেন।
পরিদর্শন শেষে সুব্রতবাবু বলেন, “রাজ্যে কোথাওই স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল ভাল নয়। নবদ্বীপও ব্যতিক্রম নয়। অনেক অভিযোগ রয়েছে এখানেও। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর কী করতে পারে দেখছি।” তিনি আরও বলেন, “পরিচ্ছন্নতা, খাবারের মান, বিশেষ শিশু কেয়ার ইউনিট নিয়ে নানা সমস্যা রয়েছে। পরিষেবায় ঘাটতি রয়েছে। আমরা সব কিছু নিয়েই পদক্ষেপের সুপারিশ করব।” |