জ্যৈষ্ঠ্য মাসের সংক্রান্তিতে নদিয়া জেলার আড়ংঘাটায় যুগলকিশোরের বিশেষ উৎসবে মন্দির প্রাঙ্গণে এক মাসের মেলা বসে। এক সময় আড়ংঘাটা চূর্ণি নদীর পাড়ে জঙ্গলাকীর্ণ স্থান ছিল। যুগলকিশোরের মন্দিরকে ঘিরে ধীরে ধীরে জনপদ গড়ে ওঠে। তখন যাতায়াতের রাস্তা ছিল জলপথে চূর্ণি নদী আর হাঁটা পথে পশ্চিমে বীরনগর। আরও পশ্চিমে গঙ্গার তীরে ফুলিয়া গ্রাম। পরবর্তী কালে ইংরেজ আমলে রেলপথ চালু হলে আড়ংঘাটা স্টেশন স্থাপিত হয়। নদিয়া জেলার বিশিষ্ট গবেষক প্রয়াত মোহিত রায় নদিয়া জেলার পুরাকীর্তি বইতে আড়ংঘাটার যুগলকিশোর মেলা ও মন্দিরের সবিশেষ বর্ণনা দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এক মহন্ত বৃন্দাবন থেকে কৃষ্ণের মূর্তি এনে বর্ধমান জেলায় গঙ্গার তীরে সমুদ্রগড়ে বসবাস করতেন। বর্গির হাঙ্গামা শুরু হলে মহন্ত গঙ্গা পার হয়ে চূর্ণি নদীর পূর্ব পাড়ে এই জায়গায় এসে কৃষ্ণমূর্তির নিত্যপূজা শুরু করেন। |
এ কথা নদিয়া রাজ কৃষ্ণচন্দ্রের গোচরে এলে তিনি কৃষ্ণকে একা না রেখে তাঁর সঙ্গে রাধারানির একটি ধাতুমূর্তি জুড়ে দেন। একত্রে দুই মূর্তির নামকরণ হয় যুগলকিশোর। পুজোর জন্য দেড়শো বিঘা জমি দেন। গড়ে ওঠে মন্দির।
পাঁচকুঠুরির দালান মন্দিরটি উঁচু ভিতের ওপর স্থাপিত। যুগলকিশোর মাঝখানে বড় সিংহাসনের ওপর দণ্ডায়মান। এ হল মধ্যযুগের বৈষ্ণব আন্দোলনের ফসল। মন্দিরের বাইরে দু’পাশে থাম বরাবর দশাবতারের কাজ রয়েছে যা বাংলার লোকচিত্রকলার সমৃদ্ধির কথা স্মরণ করায়। চার কোণে রয়েছে তুলসীমঞ্চ। মন্দির চত্বরে বাঁধানো বকুল গাছকে ঘিরে বেড়ে উঠেছে তুলসী গাছ। এখানেই মেলার সময় সাধুসন্তরা জড়ো হয়। রাতে বাউলের আসর বসে।
দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থী মেলায় এসে রাত্রিবাস করে পর দিন ঘরে ফেরে। যুগল দর্শনে মহিলারা অনাথিনী হন না এই বিশ্বাসে ছুটে আসে সবাই। যে টানে এই মেলায় এসেছিলেন সর্বজয়া। তারও আগে ভক্ত হরিদাস। পরমার্থ লাভের আশায় আজও ছুটে আসে মানুষ।
বিধান বিশ্বাস। কলকাতা-৫৫
|
গঙ্গাবক্ষে পারাপারের জন্য ভুটভুটি নামক যন্ত্রচালিত নৌকা চলে। এদের বেশিরভাগেরই লাইসেন্স নেই। চালকদেরও প্রশিক্ষণ থাকে না। থাকে না কোনও আপৎকালীন ব্যবস্থা। নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা হয়। তাই দুর্ঘটনা নিয়মিত হতে থাকে। এক কথায় এই সব ভুটভুটিওয়ালারা মানুষের জীবনকে বাজি রেখে ব্যবসা করে চলেছেন। এই সব যানের মাঝখানে থাকে সাইকেল, মোটরসাইকেল, তিনচাকার রিকশা রাখার ব্যবস্থা। কানায় কানায় ভর্তি হওয়ার পর নৌকো ছাড়া হয়। এই সমস্যা সর্বত্রই। এর কি কোনও প্রতিকার হবে না?
অময় চক্রবতী। কান্দি, মুর্শিদাবাদ
|