দুর্নীতিতে নাম জড়ালে বিতাড়ন, হুঁশিয়ারি অরূপের
সাম্প্রতিক কালে হাওড়ার বালিতে কয়েকটি গোলমালের ঘটনা ও দুর্নীতিতে দলীয় কর্মীদের একাংশ যে জড়িত, তা প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়। তবে সেই কর্মীরা ‘সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী’ থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলেই তাঁর অনুমান। বালি বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় তৃণমূলের এক কর্মিসভায় রবিবার অরূপবাবু স্পষ্টই বলেন, “বালির কিছু তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। মনে হচ্ছে, ওই কর্মীরা সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী থেকেই আমাদের দলে যোগ দিয়েছে।”
কারণ ব্যাখ্যা করে তাঁর দাবি, “বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কাজে যে সব লোকের নাম শোনা যাচ্ছে, এদের নাম আগে কখনও শোনা যায়নি। সবাই একেবারে নতুন।”
বালিতে বেশ কিছু দিন ধরেই নানা গোলমালের ঘটনা ঘটছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজ্যের প্রধান শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠছে। সরকারের এক বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এর আগেও অরূপবাবু এই বিষয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের ‘সতর্ক’ করেছিলেন। তিনি এ দিনও দলীয় কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলে তা নিয়ে তদন্ত হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তিনি দলের যত বড় পদেই থাকুন না কেন, তাঁকে দল থেকে বিতাড়িত করা হবে।” বস্তুত, আরও এক ধাপ এগিয়ে মন্ত্রী বলেন, “প্রয়োজনে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে গ্রেফতার করতেও বলা হবে।”
প্রসঙ্গত, বালি এলাকাতেই নিহত এক পরিবেশ-কর্মীর স্ত্রী সম্প্রতি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন ওই ঘটনার সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে। তাঁর অভিযোগ, ওই ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্যের এক মন্ত্রীও জড়িত। এই ধরনের ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে অরূপবাবুর হুঁশিয়ারি অন্য মাত্রা পাচ্ছে।
দলে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বকে যে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, তা এ দিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অরূপবাবু। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, দলের কেউ প্রোমোটারির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে না। দলনেত্রীর ওই নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে অরূপবাবু বলেন, “প্রোমোটারি বা কোনও বাসিন্দার ব্যক্তিগত সমস্যার মতো অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে কোনও কর্মী বা নেতা যদি হস্তক্ষেপ করেন, তা বরদাস্ত করা হবে না।”
অরূপবাবু যেখানে দলীয় কর্মীদের অনুশাসনে বাঁধার চেষ্টা করেছেন, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে দলের অপর নেতা ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁর সাম্প্রতিক ‘উগ্র সিপিএম-বিরোধিতা’র পথেই হেঁটেছেন। বসিরহাটে এ দিন দলের মহিলা প্রতিনিধি সম্মেলনে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যা-ই করুন, সিপিএমের কুখ্যাতদের মুখ দেখবেন না! তা হলে আপনার দিনটাই খারাপ যাবে। কাজে বেরিয়ে হোঁচট খাবেন! তাই ওদের বাংলা থেকে দূর করুন।” সিপিএমের মজিদ মাস্টার, বুল্টন, বাবু মাস্টারের সঙ্গে অমিতাভ নন্দীর মতো নেতাদের এক আসনে রেখে ‘খুনি’ ও ‘পাপ’ আখ্যা দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাকে পাপমুক্ত করতে হবে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনই হবে তার উপযুক্ত সময়।” প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদককে কটাক্ষ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “হাসনাবাদের গৌতম দেব অর্ধেক ন্যাড়া হয়ে দমদমে গিয়ে পুরো ন্যাড়া হলেন! তাই ওঁদের মতো নেতাদের দিয়ে আর চলবে না। মানুষ ওঁদের মুখ দেখতে চাইছে না।”
প্রসঙ্গত, শনিবারই স্বরূপনগরে দলীয় সম্মেলনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য মন্তব্য করেছিলেন, এ বার তাঁরা ত্রিমুখী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করবেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিন জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “প্রদীপবাবু সব গুলিয়ে ফেলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে নির্বাচন করে সাফল্য পাওয়ার পরে ওদের বড় বড় কথা মানায় না! মুখে না-বলে এক বার যাচাই করেই দেখা যাক না কারা শক্তিশালী” তাঁর মন্তব্য, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে কংগ্রেস, সিপিএম-কে মাইক্রোস্কোপে দেখতে হবে। তাই কংগ্রেস নেতারা কী বলছেন, তা নিয়ে দল বিচলিত নয়।”

(সহ প্রতিবেদন: নির্মল বসু)



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.