পরশমনি সাহিত্য পত্রিকার উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথের জন্ম সার্ধশতবর্ষ পালিত হয়েছে পুরুলিয়া শহরে। সম্প্রতি পুরুলিয়া শহরের হরিপদ সাহিত্য মন্দিরে গানে কবিতায় স্মরণ করা হয়েছে বিশ্বকবিকে। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় শিল্পীরা। বাঁকুড়ার মগরা উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্প্রতি রবীন্দ্র জয়ন্তী পালিত হল। ওই স্কুলের শিক্ষক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় জানান, অনুষ্ঠানে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা রবীন্দ্র নাট্য, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানের আগে প্রভাতফেরি হয়। অনষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল, আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের নৃত্য ও গান। রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করল নড়রা রবীন্দ্র জয়ন্তী উৎসব কমিটি ও ভোরাই সাহিত্য গোষ্ঠী। সম্প্রতি বাঁকুড়ার নড়রা এলাকার হরিমেলায় স্থানীয় শিল্পীরা রবীন্দ্র সংগীত, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তি করেন।
|
ভাস্কর, চিত্রশিল্পী রামকিঙ্কর বেজ, বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলাম ও সাংবাদিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তী পালন করল বাঁকুড়ার ‘অঙ্কুর অ্যাকাদেমি’। রবিবার বাঁকুড়ার কায়স্থ পাড়ায় ওই অ্যাকাদেমির হল ঘরের সামনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অ্যাকাদেমির সম্পাদক শান্তব্রত সেন জানান, অনুষ্ঠানে অ্যাকাদেমির শিল্পীদের পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পীরাও যোগ দিয়েছিলেন।
|
সম্প্রতি পুরুলিয়ার জামতড়িয়াতে ‘জন্মভূমি উন্নয়ন মঞ্চ’ নামক একটি সাঁওতালি সংস্থার উদ্যোগে সারাদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। মঞ্চের সম্পাদক সুব্রত বাস্কে বলেন, “এলাকার কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধিত করা হয়েছে। সাঁওতালি ও বাংলা কবিতা আবৃত্তি ও সঙ্গীত প্রতিযোগিতা হয়েছে।”
|
রবিবার বিষ্ণুপুরের নজরুল চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে কে এম উচ্চ বিদ্যালয় ও যদুভট্ট মঞ্চে গান নিয়ে কর্মশালা, সম্মানজ্ঞাপন এবং শাস্ত্রীয় সংগীতের একটি অনুষ্ঠান হয়ে গেল। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী সঞ্জয় চক্রবর্তী, বিষ্ণুপুর রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুজিত গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ।
|
|
শনিবার সন্ধ্যায় বোলপুরের গীতাঞ্জলীতে কলকাতার অন্বেষা শিল্পী গোষ্ঠী নাচ,
গান ও আবৃত্তির মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।
তথ্য: মহেন্দ্র জেনা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী। |
|
জেলায় মনোগ্রাহী কবিতা উৎসব ইদানীং হয় না বললেই চলে। কিন্তু গত শনিবার সিউড়ি জিলা পরিষদ সভাকক্ষে প্রায় ৮৬ জন কবিতাপ্রেমী মানুষের উপস্থিতিতে এক মনোজ্ঞ কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত হল। উপলক্ষ্য গোপাল চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘আহ্বাণ’ লিটল ম্যাগাজিনের বিশেষ কবিতা সংখ্যা প্রকাশ। সুশান্ত রাহার নিপুণ সঞ্চালনায় একুশ জন কবি এই উৎসবে নিজেদের কবিতা পাঠ করেন। এঁদের মধ্যে আশিসকুমার মুখোপাধ্যায়, প্রভাত সাহা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তপন গোস্বামী, কুন্তল মুখোপাধ্যায়-র মতো কবিদের কবিতা উপস্থিত শ্রোতাদের হৃদয়গ্রাহী হয়েছে। তবে বিশেষ ভাবে নাড়া দিয়েছেন পুরুলিয়ার কবি অভিমন্যু মাহাত। আজকের দিনে আদিবাসী সম্প্রদায়কে ঘিরে বাইরের পৃথিবীর একটা অংশের মনে নানা অবিশ্বাস ও সন্দেহের বাজাবরণ তৈরি হয়েছে। সেই বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি কবির সমালোচনা শ্রোতাদের মনে ধাক্কা দিয়েছে। তিনি লিখেছেন—
“মাহাত মানেই কী মাওইস্ট?
তাহলে আমরা তির ধনুক নিয়ে
বন্ধ ব্যর্থ করেছিলাম কেন?
...মাওবাদীদের হাতে নিহত হয়েছেন
সবচেয়ে বেশি মাহাত পদবীওয়ালা ব্যক্তিরাই
...মাই নেম ইজ মাহাত, আই অ্যাম নট মাওইস্ট।”
|
জেলায় সম্প্রতি এক অন্যরকম বাউল উৎসবের স্বাদ পাওয়া গেল। উদ্যোক্তা ছিলেন বীরভূমেরই বাউল নিতাই দাস। তাঁর সিউড়ির কাছে কড়িধ্যা কালীপুরের বাউল আশ্রমেই গত ৮-১০ জুন তিনদিন ধরে অহর্নিশি ওই বাউল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। উৎসবের নাম ছিল ‘বর্ষার আগমনী’। যোগ দিয়েছিলেন বীরভূম ছাড়াও মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, নদিয়া ও কলকাতার যাদবপুর প্রভৃতি জায়গার ৫৫ জন প্রখ্যাত বাউল। তাঁরা গত শুক্রবার সকাল থেকে রবিবার সারারাত জুড়ে মনোরম বাউল গান পরিবেশন করলেন। উৎসবটি পরিবেশিতও হল দারুণ অভিনব কায়দায়। নিপাট ঘরোয়া পরিবেশে সহজ আয়োজনে অন্য মেজাজে শুরু হয়েছিল উৎসব। ছিল না মাইক বা বিদ্যুতের আলো। রাতে হ্যারিকেনের আলোতেই চলল গান। তবে এই বাউল উৎসবের মূল অভিনবত্ব ছিল এর আঙ্গিকে। তরজার ঢঙে বাউলেরা একের পর এক বাউল গানে মুগ্ধ করে তুললেন। একদিকে বীরভূমের বাউল তারক দাস শুরু করলেন-- ‘ভীষণ দাবদাহে রোদের মায়ামেয়ই’। পাল্টা গাইলেন বর্ধমানের বাউল অনাথবন্ধু ঘোষ। বৃষ্টি ডাকলেন গানে-- ‘এসো এসো বর্ষা রানি’। তেমনই মুর্শিদাবাদের বাউল নিমাই দাস যখন গাইলেন, ‘নদীতে নামতে কি তারো ভয়/ বাঁকা নদীর তুফান থামিয়েছে’; তখন পাল্টা ধরলেন নিমাইয়ের গুরু শ্যামসুন্দর দাস-- ‘বাঁকা নদী ভয় করি না/ আমরা তার সাঁতার জানি, ডুবলে সেথায় পানি’। এ ভাবে তরজার আঙ্গিকে বাউল গান এই প্রথম বলে দাবি করেছেন উদ্যোক্তা নিতাই দাস।
|
তথ্য: অরুণ মুখোপাধ্যায়।
ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। |