বাড়ি যাবে বলে স্কুলের পাঁচিল টপকে পালিয়েছিল তিন ছাত্রী। চাপড়া থেকে বাস ধরে সোজা কৃষ্ণনগর পৌঁছেও গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণনগরের চ্যালেঞ্জ মোড়ে ওই কিন জনকে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চাপড়ার মেরি ইমাকুলেট স্কুলের ওই তিন ছাত্রী পঞ্চম শ্রেণির শ্যামলী মুর্মু, সপ্তম শ্রেণির মল্লিকা হেমব্রম ও তৃতীয় শ্রেণির লিপিকা হেমব্রম বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা। গত সোমবারই তাদের চাপড়ার ওই আবাসিক স্কুলে পৌঁছে দেন অভিভাবকেরা। কিন্তু নতুন স্কুলে মন টিকছিল না মল্লিকাদের। শেষে শনিবার দুপুরে স্কুলের গাছ বেয়ে উঠে পাঁচিল টপকে সোজা রাস্তায় নেমে পড়ে তিন জনই। বাসে করে চলে আসে কৃষ্ণনগরেও। কিন্তু সেখান থেকে কী করে বাড়ি ফিরবে বুঝতে পারছিল না তারা। রাস্তায় তিন জন বালিকাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। খবর দেওয়া হয় কোতোয়ালি থানায়। পুলিশ তিন ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের পরিচয় জানতে পারে। সেই রাতেই যোগাযোগ করা হয় ওদের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে। তিন ছাত্রীকে তুলে দেওয়া হয় জেলার চাইল্ড লাইনের হাতে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এলসিয়ান বলেন, “স্কুলের দরজা বন্ধ ছিল। কিন্তু ওই তিনটি মেয়ে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা চাপড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছি।”
রবিবার সকাল বর্ধমান থেকে চলে আসেন ওই ছাত্রীদের বাড়ির লোকজন। মেমারির ভন্ডুল গ্রামের ওই দুই পরিবারই অত্যন্ত দুঃস্থ। কোনও রকমে দিনমজুরি করে সংসার চালান। মেয়েদের পড়ানোর সামর্থ্য নেই। তাই আবাসনে রেখে পড়াশোনা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। মল্লিকার মা কল্পনা হেমব্রম বলেন, “নতুন পরিবেশে ওরা মানিয়ে নিতে পারছিল না। বাড়িতে রেখে পড়ানোর মত ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই মেয়েদের এখানে ভর্তি করে দিয়েছিলাম। বাড়ির জন্য মন কেমন করছিল বলেই ওরা পালিয়ে গিয়েছিল।” পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই তিন ছাত্রী এখনও চাইল্ড লাইনের কাছেই রয়েছে। আইন মেনেই ওদের বাবা-মার কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। |