দক্ষিণ কলকাতা
সমাধান সুদূর
তৃষ্ণা মেটে না
পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট চলছে সোনারপুর-বারুইপুর লাগোয়া অঞ্চলগুলিতে। এ নিয়ে বাসিন্দারা জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখিয়েছেন। মন্ত্রীর গাড়ি ঘেরাও করেছেন। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জন প্রতিনিধিদের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও সমস্যার সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ।
বারুইপুর এবং সোনারপুর সংলগ্ন সাহেবপুর, রায়পুর, প্রান্তিকপল্লি, পাঁচঘড়া, খাড়ুপাঁতালিয়া, ঘোষপুর, ফুলতলা, বেলেগাছি, নবগ্রাম এবং বারুইপুর পুর এলাকার সুবুদ্ধিপুর, সুকান্তপল্লি, দক্ষিণরায়পল্লি, অরবিন্দনগর, নতুনপাড়ার এই সঙ্কট চলছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখানে পরিস্রুত পানীয় জলের সরবরাহ অত্যন্ত অনিয়মিত।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই সব এলাকার কোথাও ছয় মাসের বেশি জলই আসে না। সেখানে বাসিন্দাদের ভরসা গভীর নলকূপ। অভিযোগ, সেই জলও পানের অযোগ্য। যেখানে দিনে তিন বার পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ হওয়ার কথা সেখানে কোথাও দিনে দু’বার কোথাও এক বার জল আসে।
এলাকার বাসিন্দা সুমিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। প্রায় পাঁচ মাস ধরে আমরা পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছি না।” বারুইপুর পুর এলাকার বাসিন্দা অমিত মণ্ডলের কথায়: “পুরসভার অনেক কলেই নিয়মিত জল আসে না।
দীর্ঘ দিন এই সমস্যা চলছে।”
বারুইপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের শক্তি রায়চৌধুরী বলেন, “আমার কাছে কেউ জল না পাওয়ার অভিযোগ করেননি। অভিযোগ জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের তপন নস্করের কথায়: ‘‘এই সব এলাকায় পরিস্রুত জল আসে বজবজের নোদাখালি থেকে। বিগত কয়েক বছরে চাহিদাও ব্যাপক হারে বেড়েছে। ওই প্রকল্পের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।”
তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের পরিস্রুত পানীয় জলের লাইনে প্রচুর বেআইনি সংযোগ রয়েছে। তাই যে এলাকায় জলের প্রয়োজন সেখানে জল পৌঁছতে পারছে না। পানীয় জল চাষ ও বাগানের কাজে যথেচ্ছ অপচয় করা হচ্ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ সূত্রে খবর, তীব্র গরমে নোদাখালি সংলগ্ন গঙ্গার জলের স্তর নেমে যাওয়ায় কিছু কিছু জায়গায় সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কোথাও কোথাও গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বারুইপুরের মহকুমা শাসক আরসাদ হাসান ওয়ার্সি বলেন, “কিছু এলাকায় পানীয় জল নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “যে সব এলাকায় খুব সমস্যা হচ্ছে সেই জায়গায় হ্যান্ড টিউবওয়েল বসিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.