দক্ষিণ কলকাতা
অভাব বিশেষজ্ঞের
শুধুই রেফার
কমানিক গ্রামের এক যুবকের দুর্ঘটনায় মাথা ফেটে যায়। অভিযোগ, হাসপাতালে নিয়ে এলে শুধু ড্রেসিং আর সেলাই করে তাকে রেফার করে দেওয়া হয়। কারণ, হাসপাতালে সিটি স্ক্যান নেই। তাঁকে নিয়ে যেতে হয় কয়েক কিলোমিটার দূরে বাঙ্গুর হাসপাতালে।
সম্প্রতি কালিতলা এলাকার এক বাসিন্দা বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বাড়ির লোক তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অভিযোগ, সেই সময় হাসপাতালে কোনও প্রবীণ চিকিৎসক ছিলেন না। জুনিয়র ডাক্তাররা কোনও রকমে স্টম্যাক ওয়াশ করে পাঠিয়ে দেন বাঙ্গুর হাসপাতালে।
উপরের ছবিটি লক্ষ্মীবালা দত্ত গ্রামীণ হাসপাতালের। এটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির একমাত্র গ্রামীণ হাসপাতাল। অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই হাসপাতালে শুধু প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু হয়, বাঙ্গুর কিংবা বিদ্যাসাগর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বছর খানেক আগেও এই হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছিলেন। হাসপাতালে এই মুহূর্তে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। দু’জন স্থায়ী চিকিৎসক আর কয়েক জন চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসকে নিয়ে কোনওরকমে হাসপাতালটি চলছে। তবে প্রতি দিনই সকাল ন’টা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত আউটডোর চলে। আউটডোরে প্রতি দিন গড়ে ৩০০ জন রোগীর চিকিৎসা হয়। এক রোগীর মা গীতা সরকার বলেন, “বছর খানেক আগেও ভালো চিকিৎসা পাওয়া যেত। এখন জটিল কিছু হলেই বাঙ্গুরে নিয়ে যেতে হয়।”
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখানে ৩০টি শয্যা রয়েছে। কিন্তু কোনও বিভাগেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। তাই জটিলতা হলেই বাঙ্গুরে রেফার করে দেওয়া হয়। শুধু জ্বর, পেট খারাপ কিংবা মহিলাদের নর্মাল ডেলিভারি ছাড়া কাউকে ভর্তি নেওয়া হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডাক্তার বলেন, “কোনও জটিলতা দেখা দিলে আমরা ঝুঁকি নিই না। বাঙ্গুরে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।”
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং অ্যানাস্থেসিস্ট না থাকায় হাসপাতালে কোনও রকম অস্ত্রোপচার করা হয় না। তবে পিপিপি মডেলে হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে ইসিজি, এক্স-রে, আলট্রাসোনোগ্রাফির ব্যবস্থাও। যদিও হাসপাতালের এক কর্মী জানান, প্রসূতি মায়েদের জন্য এবং শিশুদের জন্য সব রকম টিকার ব্যবস্থা থাকলেও মাঝেমধ্যে টিকার অভাব হয়।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের জনসংযোগ আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, “এই মুহূর্তে চাহিদার তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক কম। ফলে বিভিন্ন হাসপাতালে আমরা চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক দিতে পারছি না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই চাহিদা মেটানোর চেষ্টা চলছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্বাস্থ্য আধিকারিকের থেকে হাসপাতালটির বর্তমান পরিস্থিতির খোঁজ নেব।”

ছবি : শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.