দক্ষিণ কলকাতা
গড়িমসির বাজার
অবশেষে শুরু
টকে থাকা বাজার নির্মাণের প্রকল্প ফের চালু করল কলকাতা পুরসভা। দক্ষিণ কলকাতায় শরৎ বসু রোডের উপর ল্যান্সডাউন বাজারের একাংশের কাজ আগে হলেও বাকি অংশের কাজ থমকে ছিল। সম্প্রতি পুরসভা এবং বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে সেই বাজারের বাকি অংশের কাজ খুব শীঘ্র শুরু হবে বলে পুরসভা-সূত্রে জানা গিয়েছে।
১৯৯৭-এ বাম পুরবোর্ড ল্যান্সডাউন বাজারে প্রথম কাজ শুরু করে পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মডেলে। কিন্তু বাজারের আড়াইশোর মতো বিক্রেতাকে বাজারের পাশে বিনয় বসু রোডে স্থানান্তরিত করা হলেও কাজের কাজ কিছু এগোয়নি। এর মধ্যে মাছ-মাংসের দোকানই বেশি ছিল। কিন্তু যে বেসরকারি সংস্থা বাজারটি এক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ করে দোকানদারদের হাতে তুলে দেবে বলেছিল, তারা প্রায় ন’বছর লাগিয়েছিল বাজারটি তৈরি করতে। পরে অবশ্য স্থায়ী দোকান তৈরি হলে মাছ-মাংসের দোকানগুলিকে সেখানে জায়গা দেওয়া হয়।
এর পরে গত বাম পুরবোর্ড আবার ৩৭টি দোকানকে স্থানান্তরিত করে কিছু অংশের কাজ শুরু করে। কিন্তু সেখানেও বছরের পর বছর সময় গড়িয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে, বার বার প্রতিশ্রুতি ভেঙে সময়ের ‘অপব্যয়ে’ বাজার তৈরির কাজে গতি কমে যায়। সম্প্রতি পুরসভা আবার বাকি বাজারের কাজ শুরু করতে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থাকে অনুমতি দিয়েছে বলে জানালেন মেয়র পারিষদ (উদ্যান ও বাজার) দেবাশিস কুমার।
শরৎ বসু রোডের উপর ল্যান্সডাউন বাজারের মোট জায়গা সাড়ে সাত বিঘা। রাস্তার দু’ধার মিলিয়ে এখন বাজারটি তিনটি ব্লকে বিভক্ত। দোকানসংখ্যাও প্রায় সাড়ে পাঁচশো। ইতিমধ্যেই ২৫০টি দোকানকে মূল বাজারের পিছনে স্থায়ী ভাবে নতুন বাড়িতে এবং ৩৭ জনকে পুরনো বাজারের ভিতরেই অস্থায়ী ভাবে জায়গা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরে কাজ আর এগোয়নি।
পুরসভার বাজার বিভাগ থেকে জানা গেল, নতুন ভবন-তিনটির একটি দশ তলা (জি প্লাস নাইন) এবং বাকি দুটি ছ’তলা (জি প্লাস ফাইভ) হবে। তবে এ বারে আর স্থানান্তরিত না করে দোকানগুলি বন্ধ করে বাজার তৈরি করা হবে। তার জন্য বিক্রেতাদের যে ক্ষতি হবে, তাও পূরণ করে দেওয়ার কথা ভেবেছে পুরসভা। পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান ও বাজার) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থাকে বলা হয়েছে বাজার ভাঙার সময় থেকে বাজার তৈরি করে দোকানদারদের হাতে ঠিক কবে তুলে দেওয়া হবে তা আইনি পদ্ধতিতে লিখে দিতে হবে। কারণ এর আগে সংস্থাগুলি যে সময়সীমার মধ্যে বাজার তৈরি করে দেবে বলেছিল, তার মধ্যে সম্পূর্ণ করে উঠতে পারেনি।”
এ দিকে ল্যান্সডাউন বাজার সমিতির কার্যকরী সম্পাদক অনিল সরকার বলেন, “বাজারটি তৈরি করবে বলে পুরসভার কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ১৯৮৬-তে বাজারটি লিজ নেয়। বাজারটি সম্পূর্ণ করার কথা ছিল ১৯৯২-এ। কিন্তু বাজার তৈরির কাজ শুরুই হয় ১৯৯৭-এর ২৪ ডিসেম্বর। তার পরেও চলতে থাকে গড়িমসি। ফলে আজও বাজার অসম্পূর্ণ। তবে আমরা বাজার সমিতির পক্ষ থেকে বাজার তৈরিতে কোনও বাধা দিই নি, দেবও না।” তিনি আরও বলেন, “ইতিমধ্যে বাজার তৈরি শুরু হয়েছে। আমাদের সঙ্গে পুরসভা খুব শীঘ্রই আলোচনায় বসবে এ ব্যাপারে। আমরা চাই বাজারটি নতুন করে তৈরি করে দোকানদারদের পুরনো জায়গাতেই দোকান দেওয়া হোক। তার পরে বাকি তলায় কী হবে না হবে তা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না।” এ প্রসঙ্গে দেবাশিসবাবু বলেন, “আগে বাজার তৈরি হোক, তার পরে ও সব নিয়ে ভাবব।”

ছবি : শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.