লাগাতার লোডশেডিংয়ে নাজেহাল ক্যানিং
কে গরম, তার সঙ্গে লোডশেডিংয়ের দাপটে নাজেহাল অবস্থা ক্যানিং মহকুমার অধিকাংশ এলাকার বাসিন্দাদের। সপ্তাহ খানেক ধরে দিনে কয়েক দফায় অন্তত ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুতের অভাবে কাটাতে হচ্ছে মহকুমার অধিকাংশ বাসিন্দাদের। এক বার লোডশেডিং হলে প্রায় দু’ঘণ্টা বাদে বিদ্যুৎ আসছে। এর ফলে, বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা যেমন সমস্যায় পড়ছেন, তেমনই বিভিন্ন কল-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সমস্যার কথা একাধিকবার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার মহকুমা অফিসে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।
সুন্দরবনের ‘প্রবেশদ্বার’ ক্যানিং মহকুমার অনেক এলাকাতেই এখনও চিরাচরিত বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। বহু মানুষ সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন। ক্যানিং-১, ক্যানিং-২, গোসাবা এবং বাসন্তী ব্লকের কিছু কিছু এলাকায় অবশ্য গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। মূলত, সেই সব এলাকার বাসিন্দারাই লোডশেডিংয়ের দাপটে ভুগছেন। সমস্যার পিছনে ওই সব এলাকার অনেক জায়গাতেই ‘হুকিং’ বড় কারণ বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ-কর্তারা। ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, দীর্ঘ ক্ষণ লোডশেডিংয়ের পরে বিদ্যুৎ এলে তার ‘ভোল্টেজ’ এত কম থাকছে যে ফ্রিজ, টিভি কিছুই চলছে না। অল্প আলোয় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অভিযোগ, অন্ধকারের সুযোগে অপরাধমূলক কাজকর্মও বাড়ছে। তার উপরে গত কয়েক দিনের ঝড়বৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকায় উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ছিঁড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের তার। সেই সব জায়গায় মেরামতির কাজ ঢিমেতালে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
লোডশেডিংয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন ছোট কল-কারখানার মালিকেরা। বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হতে চলেছে ছোট ছোট কারখানা, কুটির শিল্প। বেশির ভাগ সময়ে বিকেলের পর থেকে বিদ্যুৎ থাকছে না। যন্ত্র না চলায় ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। ক্যানিং বাজারের এক গ্রিল কারখানার মালিক রামকৃষ্ণ দে বলেন, “বিদ্যুতের খামখেয়ালিপনার জন্য ব্যবসায় সমস্যা হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে কোনও কাজ করা যাচ্ছে না। অথচ, শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে যেতে হচ্ছে।” ক্যানিংয়ের এক চাউমিন কারখানার মালিক বিনয় মণ্ডল বলেন, “আমার কারখানায় ৩০ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেন। কিন্তু দিনে ৩-৪ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের জন্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অথচ, শ্রমিকদের বসিয়ে মজুরি দিতে হচ্ছে। দিনের পর দিন এ ভাবে তো চলতে পারে না।” বিভিন্ন কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলছে। ক্যানিংয়ের ট্যাংরাখালি কলেজের ছাত্রী মনিরা পরভিন বলেন, “একে তো প্রচণ্ড গরম তার উপর সন্ধ্যায় নিয়ম করে বেশ কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। কলেজে পরীক্ষা চলছে। পড়াশোনা তো শিকেয় ওঠার উপক্রম হয়েছে।”
পরিস্থিতির উন্নতি কবে হবে, সে ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেনি রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। সংস্থার মুখপাত্র বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। স্থানীয় কিছু সমস্যার জন্য বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।”

বিদ্যুতের দাবিতে পথ অবরোধ
ট্রান্সফরমার মেরামত ও বিদ্যুতের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার দু’দফায় প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বাসিন্দারা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বামনঘাটা বাজারের কাছে বাসন্তী হাইওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, একে প্রচণ্ড গরম। তার উপর কয়েকদিন ধরেই এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। যদি বা মাঝেমধ্যে আসছে তাও লো-ভোল্টেজ। বার বার বিদ্যুৎ দফতরে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এ দিন অবরোধের জেরে যান চলাচল আটকে গেলে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। কিন্তু বিকেলের মধ্যে বিকল ট্রান্সফরমার মেরামত না হওয়ায় ফের পথ অবরোধে নামেন বাসিন্দারা। পরে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা নতুন ট্রান্সফরমার নিয়ে গেলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ডিসিএলের মুখপাত্র বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকায় একটি ১১ কেভির ট্রান্সফরমার বসানোর কথা ছিল। সেইমতো বুধবার নতুন ট্রান্সফরমার পাঠানো হয়েছে। একটা ভুল বোঝাবুঝির জন্যই গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। তবে সমস্ত মিটে গিয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.