নন্দীগ্রামের জেলাতেই ‘সমস্যা’
শুভেন্দুর সংস্থার বিরুদ্ধেই এ বার ক্ষোভ জমি নিয়ে
মি-জটে পড়েছে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ)। ‘সমস্যায়’ পর্ষদের চেয়ারম্যান, তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।
ঘটনাচক্রে বিরোধী থাকাকালীন শুভেন্দুর নেতৃত্বেই জমি-রাজনীতিভিত্তিক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল নন্দীগ্রামে। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই এইচডিএ-ই নন্দীগ্রামে জমি-অধিগ্রহণের নোটিস দিয়েছিল। বাকিটা ইতিহাস। রাজ্যে পালাবদলের পরে পর্ষদের মাথায় এসেছেন তৃণমূলের যুবনেতা শুভেন্দু। এ বার তাঁর আমলের এইচডিএ ‘ট্রমা-সেন্টার’ গড়তে গিয়ে জমিদাতাদের বাধার মুখোমুখি।
এক সময়ে রামকৃষ্ণ দাস নামে স্থানীয় যে তৃণমূল নেতা জমির ‘ন্যায্য ক্ষতিপূরণ’-এর দাবিতে লক্ষ্মণ শেঠের এইচডিএ-কে কাজে নামতে দেননি, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি’তে পঞ্চায়েত প্রধান হয়ে তিনিও এখন স্থানীয় জমিদাতাদের ক্ষোভের মুখে। তাঁরা সরাসরি শুভেন্দুর সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন। শুভেন্দু অবশ্য বলেছেন, “ওই জমি অনেক আগেই অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছিল। ওখানে ট্রমা সেন্টার হবেই। স্থানীয় কিছু সমস্যা পঞ্চায়েতই সমাধান করবে।”
ঘটনাস্থল মহিষাদল ব্লকের কাপাসএড়্যা। ২০০১ সালে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের কাপাসএড়্যা মোড়ের বামুনিয়া মৌজার উওর ও দক্ষিণ দিকে প্রায় ৪৭.৬২ একর জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল।
জমি-জট কাটাতে বৈঠক। ছবি: আরিফ ইকবাল খান
২০০৪-’০৬ সালের মধ্যে ভূমি-দফতরের মাধ্যমে এইচডিএ জমি অধিগ্রহণ করে। সেই সময় ডেসিমেল পিছু দাম মিলেছিল ৪২০০ টাকা করে।
জমিদাতাদের অভিযোগ, তাঁরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাননি। ২০০৮ সালে লক্ষ্মণ শেঠ চেয়ারম্যান থাকাকালীন ওই জমিতে এইচডিএ শিল্প গড়ার চেষ্টা করলে বাধা দেন জমিদাতারা। সে সময়ে জমিদাতাদের পাশে দাঁড়ায় তৃণমূল। সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তৃণমূল নেতা রামকৃষ্ণ দাসই এখন স্থানীয় ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। ওই জমির উত্তর দিকের ২ একরে এখন ‘ট্রমা-সেন্টার’ গড়ায় উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দুর নিয়ন্ত্রণাধীন এইচডিএ। জমিদাতারা এ বার সে উদ্যোগেও বাধা দিচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, উন্নয়নমূলক কাজে আপত্তি নেই। তবে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ (ডেসিমেল পিছু অন্তত ১৫ হাজার টাকা) দিতে হবে। ওই জমির পাশেই একটি বেসরকারি শিল্পগোষ্ঠী ডেসিমেল প্রতি প্রায় ১২ হাজার টাকা দর দিয়ে বছর কয়েকের মধ্যেই জমি কিনেছে বলেও জানিয়েছেন জমিদাতারা।
মঙ্গলবারই জমিদাতাদের বাধায় ওই জমিতে মাটি ফেলার কাজ থমকে গিয়েছিল। বুধবার রামকৃষ্ণবাবু জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু দু’ঘণ্টার বৈঠকেও সমাধানসূত্র না মেলায় আপাতত ঝুলেই রইল ট্রমা-সেন্টারের কাজ। জমিদাতা পরিবারের পক্ষে বিকাশচন্দ্র সামন্ত, দীপেন্দ্রনাথ মণ্ডলের বক্তব্য, “এইচডিএ চেয়ারম্যান শুভেন্দুবাবুকে আমাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে হবে। জমি-অধিগ্রহণের সময়ের বাজারদরে ক্ষতিপূরণ চাই। পুনর্বাসনেরও ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে কাজ করতে দেব না।” অধিগৃহীত জমি নিজেদের দখলে রেখে চাষবাস চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন বিকাশবাবুরা।
এ দিনের বৈঠকে রফাসূত্র না মেলায় হতাশ পঞ্চায়েত প্রধান রামকৃষ্ণবাবুর বক্তব্য, “আমি ওঁদের অনেক ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। ওঁরা বলছেন, শুভেন্দুবাবুকে আলোচনায় বসতে হবে। আমি সাংসদকে সব জানাব।” এইচডিএ-র মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক পি উলাগানাথনের বক্তব্য, “ওঁদের কী দাবি রয়েছে, সেটা আমাকে জানাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিচার-বিবেচনা করে দেখা যেতে পারে। তবে কাজ তো করতে দিতে হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.