অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত এবং ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত প্রস্তাবিত কাওয়াখালি উপনগরী প্রকল্পের কাজ করতে দেবেন না বলে সরব হলেন জমিহারাদের একাংশ। শনিবার শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তরফে জমিতে পাঁচিল দেওয়ার কাজ করতে গেলে ফের তাঁরা বাধা দেন। দফতরের আধিকারিকদের সাফ জানিয়ে দেন জমি ফেরৎ অথবা ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণ না মেলা পর্যন্ত কাজ করতে দেবেন না তাঁরা। বাধা পেয়ে ফিরে যান এসজেডিএ’র লোকজন। এই পরিস্থিতিতে ওই জমির মালিকদের নিয়ে সোমবার বৈঠক ডাকা হয়েছে। এসজেডিএ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও।
এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “এলাকায় শিবির করে জমিহারাদের অভাব অভিযোগ শুনে তা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে বঞ্চিত না হন তা দেখা হবে বলেও জানানো হয়েছে। জমি ফেরত ও ক্ষতিপূরণের প্যাকেজের বন্দোবস্ত করার পাশাপাশি কাজ শুরু করা হবে আলোচনা হয়। তার পরেও বামেদের কিছু লোকজন এলাকার উন্নয়ন কাজ করতে বাধা দিতে চাইছেন বলে খবর পেয়েছি। সোমবার তাদের আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে।” জমিহারাদের অপর অংশ তথা থিকনিকাটা কাওয়াখালি ল্যান্ড ওনার্স ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এবং কাওয়াখালি পোড়াঝাড় ভূমিরক্ষা কমিটির কর্মকর্তারা রুদ্রবাবুর সঙ্গে সহমত পোষণ করে কাজ শুরু করতে দেওয়ার পক্ষে। তা নিয়ে বর্তমানে আন্দোলনকারী জমির মালিকদের সঙ্গে তাঁদের মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করতে গেলে জমিহারাদের একাংশ বাধা দেন। তার পরেও শুক্রবার ফের এসজেডিএ’র ঠিকাদাররা গিয়ে পাঁচিল দেওয়ার জন্য খোঁড়াখুড়ির কাজ করেন। জমিহারাদের কয়েকজন নিষেধ করলেও তা উপেক্ষা করে কাজ করা হয় বলে অভিযোগ। এ দিনও দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে পাঁচিল দিতে ঠিকাদারের লোকজন কাজ করতে গেলে ফের বাধা দেয় জমিহারাদের একাংশ। এমনকী আগের দিনের খোঁড়াখুড়ি মাটি দিয়ে ভরাট করে দেন তাঁরা।
জমিহারাদের পক্ষে পীযূষ চৌধুরী বলেন, “অনেকে জমি দিতে অনিচ্ছুক। অনেকে প্যাকেজের সুযোগ সুবিধা পাননি। অনেকে জমি অধিগ্রহণের চেক পাননি। শিবির করে এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ মুখে বলছেন অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দেওয়া হবে। জমিহারারা ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ পাবেন। অথচ তা কার্যকর না করেই কাজ শুরু করতে চাইছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্যা না মিটিয়ে কাজ শুরু করতে গেলে আমরা বাধা দেব।” আন্দোলনকারীদের অন্যতম তথা তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গ কৃষি জমি জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটির সভাপতি কুড়ানু দেব সিংহ জানান, আশ্বাস দিলেই হবে না। জমিহারাদের সকলের সমস্যা না মিটিয়ে কাজ শুরু করতে দেওয়ার পক্ষে তারা কখনই ছিলেন না। কুড়ানুবাবুদের অভিযোগ, থিকনিকাটা কাওয়াখালি ল্যান্ড ওনার্স ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এবং কাওয়াখালি পোড়াঝাড় ভূমিরক্ষা কমিটির কর্মকর্তা বিরুদ্ধেও। তিনি বলেন, “ভূমিহারাদের অনেকে যাঁরা এক সময় আমাদের পাশে ছিলেন তাঁরা সুযোগ সুবিধা আদায় করে এখন এসজেডিএ সুরে কথা বলছেন।” |