বরযাত্রী বোঝাই গাড়ির সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে আট জনের। শুক্রবার রাতে বালুরঘাটের পতিরাম বিএসএফ ফাঁড়ির কাছে রাজ্য সড়কে ঘটনাটি ঘটে। বালুরঘাটের চকভাতশালা গ্রামের দুই ভাইয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল একই দিনে। রাত ১০টা নাগাদ বরযাত্রীরা রওনা হন। দুর্ঘটনায় পড়ে বড় ভাই রবি ওঁরাও-এর গাড়ি। গুরুতর জখম হয়েছেন তিনি। ঘটনাস্থলেই মারা যান রবিবাবুর ছোট ভাই সুমিত ওঁরাও (১২)-সহ ৮ বরযাত্রী।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় মৃত দীপিকা পাহান (৭), সুমন পাহান (১২), বিশ্বনাথ পাহান (১৪), রাজু পাহান (১৭),শক্তিরাম পাহান (১৮) বালুরঘাটের ভাটপাড়া অঞ্চলের শিবরামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাপসী ওঁরাও (২০) এবং পুতুল ওঁরাও-এর (২৪) বাড়ি চকভাতশালা গ্রামে। গুরুতর জখম ২৭ যাত্রীকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। |
হাসপাতালে আহতেরা। ছবি: অমিত মোহন্ত। |
দুর্ঘটনার পরেই ক্ষিপ্ত জনতা রাস্তায় অস্থায়ী লোহার ডিভাইডার বসানোর অভিযোগ তুলে বালুরঘাটের পতিরাম বিএসএফ ফাঁড়িতে হামলার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে তাদেরও মারধর করা হয়। এরপরেই চেনা ঢঙে শুরু হয়ে যায় পথ অবরোধ। মারধরে জখম ওই ফাঁড়ির সাব ইন্সপেক্টর কৃষ্ণ বেরা বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি। শেষে বিরাট পুলিশ বাহিনী এলাকায় যায়। ঘাতক ট্রাকের চালককে গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “একটি অস্থায়ী ডিভাইডারের কাছে ট্রাক এবং বরযাত্রীর গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রাক চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
রবি ওঁরাও-এর বিয়ে ঠিক হয় গঙ্গারামপুরের ফুলবাড়িতে এবং বিশ্বনাথের চোদ্দমাইল এলাকায়। রাত দশটা নাগাদ তিনটি পণ্যবাহী গাড়িতে করে বরযাত্রীরা রওনা হন। রবিবাবুর গাড়িটি দুর্ঘনায় পড়ে। ছোট ভাই বিশ্বনাথ বলেন, “খবর পেয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে আসি। ওই গাড়িতে দাদা-সহ ৩৪ জন ছিলেন। ছোট ভাইটা নেই। কী হয়ে গেল ভাবতে পারছি না।” শনিবার সকালে যান কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী এবং জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী। কারামন্ত্রী বলেন, “আহতদের চিকিৎসা বাবদ সমস্ত খরচ রোগীকল্যাণ সমিতি বহন করবে। আহতদের সিটি স্ক্যান-সহ বাইরে থেকে আনা সমস্ত ওষুধপত্রের খরচ স্বাস্থ্য দফতর থেকে বহন করবে।” |