প্রায় এক বছর বাদে শনিবার বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজি-তে আবার পা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে কোনও সাংবাদিক-আলোকচিত্রী নেই। বরং বলা যায় তাঁদের নজর এড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রীর আজকের সফর।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই তিনি কালীঘাট-মহাকরণের নির্দিষ্ট রুট ভেঙে আচমকা চলে যাচ্ছিলেন সরকারি হাসপাতালে। কখনও উত্তর, কখনও দক্ষিণে। গত বছরের মে মাসে সেই সময়েই এক দিন বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজি-র হাল দেখতে ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে সে দিন সংবাদমাধ্যমের বহু লোক, টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান। হাসপাতালের ভিতরে অত বাইরের লোক দেখে আপত্তি জানিয়েছিলেন হাসপাতালের তদানীন্তন ডিরেক্টর চিকিৎসক শ্যামাপদ গড়াই। জানিয়েছিলেন, হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্মে অসুবিধা হচ্ছে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। শ্যামাপদবাবুর অপসারণের পরে দীর্ঘদিন বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজি-র ডিরেক্টরের পদ খালি ছিল। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক অসিত সেনাপতি-ই এত দিন অস্থায়ী ডিরেক্টরের পদ সামলাচ্ছিলেন। সম্প্রতি তাঁকেই স্থায়ী ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে।
সেই ঘটনার পরে আবার শনিবার ওই হাসপাতালে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গত বার মুখ্যমন্ত্রীর সেই ‘ঘটনাবহুল’ পরিদর্শনের পরে প্রধানত তাঁরই উদ্যোগে একটি ব্রেন অ্যাঞ্জিওগ্রাফি মেশিন হাসপাতালে বসানো হয়েছে। এ দিন দুপুর দু’টোয় হাসপাতালে ওই মেশিনটিরই উদ্বোধন করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু, তিনি এ বারেও কাউকে কিছু না জানিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যান সকাল দশটায়। মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও তখনও শুরু হয়নি। চিকিৎসকদের ধারণা, তাঁর অনুষ্ঠান ঘিরে হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটুক, সম্ভবত সেটি চাননি বলেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দিষ্ট সময়ের আগেই চলে আসেন হাসপাতালে। সংবাদমাধ্যমের ভিড় এড়িয়ে হাসপাতাল পরিদর্শনও ছিল তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য।
এ দিন বাঙুর হাসপাতালে ঢুকে কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গে। হাসপাতালের জন্য আর কী কী লাগবে সে কথা জানতে চান চিকিৎসকদের কাছেই। হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স-কর্মীদের হাজিরা ঠিক মতো হচ্ছে কি না, সে বিষয়েও তিনি খোঁজ নেন। বেশ কিছু ক্ষণ হাসপাতালে থেকে তিনি বেরিয়ে পড়েন মহাকরণের পথে। |