দশ বছর আগে প্রথম বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে নামার স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি। সেটা ছিল ২০০২ বিশ্বকাপ।
দশ বছর পর আবার একটা বড় টুর্নামেন্ট। বিশ্বকাপের বদলে এ বার ইউরো। এ বারও তিনি আছেন। আর আছেন অধিনায়কের ‘আর্মব্যান্ড’ সমেত। এবং জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ প্রবল উত্তেজিত। উত্তেজিত দেশ সুইডেনকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব পেয়ে। “একটা বড় টুর্নামেন্টে দেশকে নেতৃত্ব দেব, এর চেয়ে ভাল আর কী হতে পারত?” সোমবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ইউরো অভিযান শুরু করার আগে বলে ফেলেছেন এ সি মিলানের লম্বা চুলের স্ট্রাইকার। ফুটবল কেরিয়ারে প্রচুর সম্মান পেয়েছেন, ক্লাবের হয়ে গোল করেছেন বহু। এ বার ক্লাব নয়, দেশ। তিনি অধিনায়ক। ইব্রাহিমোভিচের কাছে যার চেয়ে বড় ‘মোটিভেশন’ আর কিছু নেই। বলছেন, “খুব গর্ব হচ্ছে। দেশকে নিজের পছন্দ মতো একটা পদ্ধতি ধরে নেতৃত্ব দেওয়াটা খুব বড় ব্যাপার। দায়িত্বও থাকে প্রচুর।”
চলতি বছরে এ সি মিলানের হয়ে ২৮টি গোল আছে ইব্রাহিমোভিচের। ইউরোর যোগ্যতা অর্জন পর্বে সুইডেনের হয়ে খেলেছেন আটটি ম্যাচ। গোল করেছেন পাঁচটি। “আমরা দেখিয়ে দিয়েছি আমাদের দলে এমন প্লেয়ার প্রচুর যারা কি না গোল করে ম্যাচের ভাগ্য ঠিক করে দিতে পারে,” বলেছেন তিনি। সঙ্গে যোগ করেছেন, “আমরা নির্দিষ্ট জায়গা ধরে খেলি না। বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারি। আর তাতে কোনও অসুবিধায় আমাদের পড়তে হয় না।”
শুধু স্ট্রাইকার নয়, উইথড্রয়াল ফরোয়ার্ড হিসেবেও খেলার অভিজ্ঞতা আছে, আর তাতে সাফল্যও এসেছে। |
আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে স্ট্রাইকারের বদলে একটু নীচ থেকে খেলেছিলেন ইব্রাহিমোভিচ। পরিণামগোল করেছেন। করিয়েওছেন। সুইডেন জেতে ৩-২। যা নিয়ে ৩১ বছর বয়সী সুইড অধিনায়ক বলছেন, “ন’নম্বর আর দশ নম্বরের মধ্যে আমরা একটা ভারসাম্য খুঁজে বার করতে চাইছিলাম। পরের দিকে আমি অবশ্য দশ নম্বর জার্সিতেই খেলেছি। যেটা কাজ দিয়েছে।”
গ্রুপ ‘বি’-র মতো ‘মৃত্যু গ্রুপ’-এর তকমা না পেলেও খুব সহজ গ্রুপে নেই সুইডেন। ইউক্রেন আছে, ইংল্যান্ড আছে। আছে ফ্রান্সও। কিন্তু কোনও প্রতিপক্ষকেই বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন না ইব্রাহিমোভিচ। বলছেন, “গ্রুপের চারটে দলই সমান শক্তির। জানি না গ্রুপে কেউ ফেভারিট আছে কি না। তবে ম্যাচগুলো উত্তেজক হবে। সব ক’টা ম্যাচই ভাল হবে, এটুকু বলতে পারি। পরিচ্ছন্ন ফুটবল খেলতে হবে আমাদের।’’
কোনও একটা ম্যাচকে নির্দিষ্ট করে মরণ-বাঁচন ম্যাচ বলে ধরছেন না। কিন্তু ইব্রাহিমোভিচের মনে হচ্ছে, গোটা টুর্নামেন্টে টিমের মেজাজটা ঠিক করে দিতে পারে প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স। বলছেন, “ভাল শুরুটা খুব দরকার। যদি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শুরুটা ভাল করতে পারি, আত্মবিশ্বাসটা আপনাআপনিই চলে আসবে।”
সুইডদের আত্মবিশ্বাসের পারদটা আরও চড়তে পারে সমর্থকদের উৎসাহের কথা শুনলে। সোমবারের ম্যাচে দেশের হয়ে গলা ফাটাতে মাঠে হাজির থাকছেন বারো হাজার সুইড-সমর্থক। ইংল্যান্ড ম্যাচের দিন সংখ্যাটা দেড়গুণ ছোঁবে। আঠারো হাজার। নব্বই মিনিট ধরে যাঁদের তীব্র চিৎকার কাজে দেবে বলে মনে করছেন ইব্রাহিমোভিচ। বলছেন, “মাঠে টিম বেকায়দায় পড়ে, সমর্থকরাই খেলার মান দশ-কুড়ি শতাংশ উন্নত করে দিতে পারেন।” |