প্রস্তুত আগরতলা হাইকোর্টের নয়া ভবন। উমাশঙ্কর রায়চৌধুরী ত্রিপুরার মানুষের দীর্ঘ দিনের আকাঙ্খা পূর্ণ হতে চলেছে। হাইকোর্টের ‘খণ্ডপীঠ’ নয়, আগরতলায় নতুন পূর্ণাঙ্গ হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা হবে শীঘ্রই।
কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য পুনর্গঠন সংক্রান্ত আইনের এক সংশোধনীতে শুক্রবার রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল সই করেছেন। শুক্রবারই বিলটি অনুমোদনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে রাষ্ট্রপতি ভবন। এই সংশোধনী অনুমোদন হওয়ার ফলে ত্রিপুরায় হাইকোর্ট হওয়ার পথে যে আইনি বাধা ছিল তা সরে গেল।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপর আগরতলায় নতুন হাইকোর্টের কাজ শুরু হওয়া, কিছু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। কেন্দ্রীয় সূত্রটি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই কেন্দ্রীয় বিচার মন্ত্রক একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে আগরতলায় হাইকোর্ট স্থাপনের কথাটি আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করবে। শনিবার রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের সরকারি অনুজ্ঞাপত্র, তিন রাজ্যে এসে পৌঁছেছে।
ঘটনায় উচ্ছসিত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, “তিন দশকের লড়াইয়ের পরে, অবশেষে এই সম্মান আদায় করা গেল।”
|
উল্লেখ্য, সংবিধানের ৪০৩ ধারায় প্রতিটি রাজ্যের জন্য একটি হাইকোর্টের সংস্থান থাকলেও রাজ্য পুনর্গঠন আইনের যে ধারায় ত্রিপুরা বা উত্তর-পূর্বের আরও কয়েকটি রাজ্য পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা পেয়েছিল সেখানে উত্তর-পূর্বের সব ক’টি রাজ্যের জন্য গুয়াহাটিতে একটি হাইকোর্টের কথাই বলা ছিল। পরবর্তী ক্ষেত্রে কয়েকটি রাজ্যে গুয়াহাটি হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ তৈরি হলেও পূর্ণাঙ্গ হাইকোর্টের পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের এই রাজ্য পুনর্গঠন আইনটি।
ত্রিপুরার প্রাক্তন অ্যাডভোকেট-জেনারেল নিশীথ অধিকারী রাজ্যের এই দাবির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিলেন।
ত্রিপুরার মানুষের এই দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় আইন-বিচার মন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তিনি দরবারও করেছিলেন। তিনি বলেন, নতুন হাইকোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের নেতৃত্বাধীন ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার ইতিমধ্যেই তৈরি করেছে। রাজ্য পুনর্গঠন আইনের সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে ত্রিপুরার মানুষের দীর্ঘ দিনের এক দাবি স্বীকৃতি পেল।
উল্লেখ্য, এই সংশোধনীর ফলে ত্রিপুরার সঙ্গে সঙ্গে মণিপুরের ইম্ফল ও মেঘালয়ের শিলং-এও পূর্ণাঙ্গ হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার পথ পরিষ্কার হল।
মেঘালয়, মণিপুর, ত্রিপুরা ছাড়াও মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশও নিজস্ব হাইকোর্ট চেয়েছিল। তবে বিস্তর আলাপ আলোচনার পর গত মাসে লোকসভা ও রাজ্যসভায় তিন রাজ্যে স্বতন্ত্র হাইকোর্ট গড়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য পুনর্গঠন আইনে সংশোধনীটি পেশ হয়। সর্বসম্মতিতে তা পাশও হয়ে যায়। রায়ে খুশি মণিপুর, মেঘালয়ও। |