বন্ধ করে দেওয়া হল হরিয়ানার সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হোম ‘আপনা ঘর’। মাসখানেক আগেই ওই হোমের শিশু এবং মহিলা সদস্যদের উপর লাগাতার যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে যায় হরিয়ানা পুলিশের কিছু উচ্চপদস্থ কর্তার নামও। শনিবার সেই হোম বন্ধের নির্দেশিকাই জারি করল হরিয়ানা সরকার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মার্চের গোড়ার দিকে, ‘আপনা ঘরের’ তিন জন মেয়ে হোম থেকে পালিয়ে দিল্লি পৌঁছয়। সেখানে শিশু কল্যাণ কমিটির সামনে নিজেদের দুর্দশার কথা বলে তারা। মূলত তাদের বয়ানের উপর ভিত্তি করেই আচমকা জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের(এনসিপিসিআর) সদস্যরা হোমে হানা দিয়ে উদ্ধার করে প্রায় ১২০ জন শিশু এবং মহিলাকে। জানা যায়, গত পাঁচ বছর ধরে হোমের সদস্য ওই শিশু এবং মহিলাদের উপর চলেছে নারকীয় শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন। অভিযোগ ওঠে লাগাতার যৌন নির্যাতনেরও। এমনকী, প্রায়ই এই সদস্যদের বেগার শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করার কথাও জানা যায়। অভিযোগকারীদের দাবি, তাঁদের এই সব সহ্য করতে বাধ্য করতেন হোমেরই ইন-চার্জ যশবন্তী দেবী। হোমের সদস্য এক মহিলার দাবি, তাঁর ছেলেকে বিনা অনুমতিতেই বিক্রি করেছেন যশবন্তী। এই রকম আরও উদাহরণ রয়েছে।
এনসিপিআরের তল্লাশির পরে জানা যায়, হোমের বহু সদস্য নিখোঁজ। পুলিশের ধারণা, নিয়ম না মেনে সেই সদস্যদের সন্তানহীন দম্পতিদের হাতে তুলে দিয়েছেন হোম কর্তৃপক্ষ। হোমের বাকি সদস্যদের একাংশের মতে, অনেক সময়েই উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার এবং গণমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গেও যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে তাঁদের বাধ্য করতেন যশবন্তী দেবী। এমনকী, এই অত্যাচার থেকে রেহাই মেলেনি শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধীদেরও। এর পরে যৌন ব্যবসা চালানোর অভিযোগও উঠছে হোম কতৃর্পক্ষের বিরুদ্ধে। গত মাসেই গ্রেফতার করা হয় যশবন্তী দেবীকে। হরিয়ানা পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল রঞ্জিভ এস দালাল এ দিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, পুরো ঘটনাটির তদন্ত করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, রোহতকের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, আটকে রাখা, বেগার শ্রমের অভিযোগ আনা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, এই ঘটনায় যদি কোনও উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাও দোষী প্রমাণিত হন, তিনিও রেহাই পাবেন না। |