দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে অবৈধ সম্পর্কের জেরে স্ত্রী এবং প্রেমিক খুনের অভিযোগে ধৃত স্বামীকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠাল আদালত। সোমবার সকালে স্থানীয় লক্ষ্মীতলা এলাকার পাট খেত থেকে গলার নলি কাটা অবস্থায় ওই দুজনের মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতরা হলেন বন্ধনী কারিগর (৪০) এবং গুনু রায় (৩৫)। পুলিশ তদন্তে নেমে নিহত মহিলার স্বামী সুরেশ কারিগরকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার বালুরঘাটের সিজেএম আদালতে তাকে হাজির করা হয়। সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মজুমদার বলেন, “নিহত ওই দুজনের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে। পাট খেতে মহিলার সঙ্গে ওই যুবকের ঘনিষ্ঠতা দেখে তাদের খুন করা হয় বলে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে। এই হত্যাকান্ডে নিহত মহিলার স্বামী সুরেশ কারিগর জড়িত বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পেয়েছে।” জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ জানান, ওই জোড়া খুনের ঘটনায় আর কে যুক্ত তা জানতে ধৃত ব্যক্তিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতার বাড়ি স্থানীয় আজমতপুর এলাকায়। নিহত যুবক পাশের রামচন্দ্রপুর অঞ্চলের গাঁও গঙ্গারামপুর এলাকার বাসিন্দা। বন্ধনী দেবীর ছেলে ও মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। গুনুরও স্ত্রী ও পুত্র বর্তমান। এলাকার প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, গাঁও গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা, পেশায় রাজমিস্ত্রী বিবাহিত গোনু রায়ের সঙ্গে ৬ মাস আগে বন্ধনী দেবী পালিয়ে গিয়েছিলেন। কিছুদিন হল ওই মহিলা গ্রামে ফিরে আসেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে সালিশি সভা হয়। সালিশিতে স্ত্রীকে শাসনে রাখতে স্বামী সুরেশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ায় বন্ধনীকে সংসারে ফিরিয়ে নেন স্বামী সুরেশ। এরপরেও গুনু ও বন্ধনীর মধ্যে অবৈধ প্রণয় সম্পর্ক চলতে থাকে বলে অভিযোগ। এদিন খুনের অভিযোগ অস্বীকার করে ধৃত সুরেশ করিগর বলেন, “রবিবার দুপুরে ১০০ দিনের মাটি কাটার কাজ সেরে বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী নেই। পুত্রবধূর কাছে জানতে পারি ওষুধ আনতে সে বাইরে গিয়েছে। রাতে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাইনি।” নিহত গুনু রায়ের স্ত্রী ছবি দেবী পুলিশকে জানান, রবিবার সকালে খাওয়া দাওয়া করে কাজ আছে বলে তাঁর স্বামী বেরিয়ে যান। পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুজন সন্ধ্যায় লক্ষীতলার পাট খেতে মিলিত হয়েছিলেন। তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে খুন করা হয়। মৃতদেহের পাশ থেকে খুনে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি পুলিশ উদ্ধার করেছে। |