পুকুরের মালিকানা নিয়ে বিবাদকে কেন্দ্র করে সরকারি দফতরের সামনেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। সোমবার বিকেলে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের সামনে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়িত দুই প্রতিবেশীই বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের চোপাল এলাকার বাসিন্দা। সংঘর্ষে জখম হয়েছেন ৫ জন। এদের মধ্যে ৩ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতাল থেকে মালদহে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুকুরের দখল নিয়ে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রঙও। এক তৃণমূল নেতার নেতৃত্বে তাঁদের কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। পরিকল্পিত ভাবে কাঁচের বোতল দিয়ে মেরে ৩ কংগ্রেস কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, তাদের দুই সমর্থককে কংগ্রেসিরা মারধর করেছে। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “পুকুরের মালিকানা নিয়ে বিবাদের জেরে দুই প্রতিবেশীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দু’পক্ষই মারধরের অভিযোগ করেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চোপাল এলাকায় ৪৪ শতকের একটি পুকুর নিয়ে দুই প্রতিবেশী জাবেদ আলমের পরিবারের সঙ্গে শেখ সফিরুদ্দিনের দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছে। সফিরুদ্দিন এলাকায় তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। অন্যদিকে, জাবেদ আলম সক্রিয় কংগ্রেস কর্মী। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। আদালত জাবেদ আলমের পক্ষে রায় দিয়েছে। ওই রায় শেখ সফিরুদ্দিন মানতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। এরপর সফিরুদ্দিন জাবেদ আলমকে প্রস্তাব দেন যে বিএলএলআরও দফতরে গিয়ে রায়ের কপি দেখানো হোক। এরপরই দুই প্রতিবেশীই আত্মীয়স্বজন নিয়ে ওই দিন বিএলআরও দফতরে হাজির হন। সফিরুদ্দিন সেখানে সঙ্গে নিয়ে যান তার শ্যালক তৃণমূল কর্মী আনওয়ারুল হককে। সেখানেই দুপক্ষের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। আনওয়ারুল হকের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। ব্যাগে রাখা কাঁচের বোতল দিয়ে জাবেদ আলম, তার দুই ভাই মনসুর আলম ও আবু হাসানের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বিমানবিহারী বসাকের অভিযোগ, “পুকুরটি কংগ্রেস কর্মী জাবেদ আলম ও তাঁর পরিবারের। তৃণমূল গায়ের জোরে দখল করতে চাইছে।” ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, “ওই এলাকায় কংগ্রেস পায়ের তলায় মাটি হারাচ্ছে। তাই মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। ওরাই আমাদের কর্মীদের উপর প্রথমে হামলা চালায়। কর্মীরা আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে মারামারি হয়। আনওয়ারুল হকের বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।” |