|
|
|
|
জীবন ফিরে পেল ৬৪০ গ্রামের শিশু |
জয়তী রাহা • কলকাতা |
চিকিৎসকদের মতে, সদ্যোজাতের ওজন হওয়া উচিত ২.৫ কেজি। ওর ওজন ছিল ৬৪০ গ্রাম। জন্মের পরে কান্না তো দূর, সাড়ই ছিল না তার। পরিজনেরা হাল ছাড়লেও চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন চিকিৎসকেরা। একটি বেসরকারি হাসপাতালে আড়াই মাস লড়াইয়ের পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল সেই শিশু। এখন তার ওজন এক কেজি একশো গ্রাম। চিকিৎসকদের আশ্বাস, নিয়ম মেনে চললে স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটবে তার।
রাজ্যে মা ও সদ্যোজাতের মৃত্যুহার কমাতে গোড়া থেকেই বদ্ধপরিকর মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কম ওজনের শিশুর জন্মই যে রাজ্যে নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে পারছে না, তা জেনে প্রতিকারের জন্য টাস্ক ফোর্স গড়েছেন তিনি। সাড়ে ছ’শোরও কম ওজনের শিশুকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোর নজিরে আশাবাদী সেই টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরাও। চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “এটা বড় সাফল্য। ৬৫০ গ্রাম ওজন হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘রেয়ার লো বার্থ ওয়েট’ বলে।” |
|
মায়ের কোলে সেই শিশুকন্যা। —নিজস্ব চিত্র। |
২৩শে মার্চ শহরের এক নার্সিংহোমে সাড়ে সাত মাসের মাথায় কন্যা সন্তান প্রসব করেন আসানসোলের নিয়ামতপুরের বাসিন্দা ফাল্গুনী সরকার। জন্মের পরপরই শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ্-এ। সেখানেই চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ, মায়া মুখোপাধ্যায়, অরুণালোক ভট্টাচার্য ও জয়দীপ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে চলে দীর্ঘ লড়াই। অপূর্ববাবু বলেন, “স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সামান্য বিচ্যুতি ঘটলেই চিকিৎসকদের দিকে আঙুল ওঠে। এই সাফল্য নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য।”
চিকিৎসক মায়া মুখোপাধ্যায় বলেন, “সাড়ে সাত মাসের তুলনায় ওর ওজন যথেষ্ট কম ছিল। একে চিকিৎসার পরিভাষায় প্রি টার্ম ইন্ট্রা ইউটেরাইন গ্রোথ রিটার্ডেশন বলে। এই শিশুদের ফুসফুসের সমস্যা হয়। শ্বাসকষ্ট হয়। এই শিশুটিরও শ্বাস আটকে আসত। বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে শ্বাসপ্রশ্বাস চলত। প্রথম মাসে হিমোগ্লোবিন ৭-এ নেমে আসে। যেখানে থাকা উচিত ১৩ থেকে ১৪।” চিকিৎসকদের মতে, মায়ের হাইপার টেনশন থাকলে বাচ্চার ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয়।
শিশুটির বাবা, পেশায় আইনজীবী সৌরভবাবুর কথায়, “ওকে বাঁচাতেই হবে, এই জেদ নিয়ে এসেছিলাম। এখন খুব ভাল লাগছে।”
সম্প্রতি চিকিৎসক সজল দত্তের তত্ত্বাবধানে আরও একটি সাফল্য এসেছে শহরে। আলিপুরের এক নার্সিংহোমে ভদ্রেশ্বরের নিয়োগী দম্পতির ৭২০ গ্রাম ওজনের শিশু কন্যাও আপাতত সুস্থ। সাড়ে সাত মাসের মাথায় জন্ম হয় তারও। |
|
|
|
|
|