শিশু-শ্রম দূর করার প্রয়াস
ংবাদ মাধ্যম ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করেছে শিলিগুড়ি পুরসভা ও পুলিশ-প্রশাসন। এ বার তাঁদের সহযোগিতা নিয়েই শহরে শিশু শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করতে উদ্যোগী হবে শ্রম দফতর। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি সার্কিট হাউজে শ্রম দফতরের উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় এই ব্যাপারে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সভায় এসজেডিএ’র পক্ষ থেকে শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া এলাকায় শিশুদের জন্য একটি সরকারি হোম তৈরির কথা ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। নয়া ট্রেড লাইসেন্স কিংবা নবিকরণের সময়ে শিশু শ্রমিক নিয়োগ করা হবে না বলে মুচলেকা দিতে হবে বলে মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত আশ্বাস দেন। ফেডারেশন অব চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গলের (ফোসিন) পক্ষ থেকে সদস্যদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান শিশু শ্রম বিরোধী পোস্টার লাগানোর কথা ঘোষণা করা হয়। উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম কমিশনার মহম্মদ রিজওয়ান জানিয়েছেন, আগামী ছ’মাসের মধ্যে অন্তত পাঁচশো শিশু শ্রমিককে উদ্ধার করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এই কাজে সরকারি স্তরের সমস্ত সংস্থা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে সাহায্য করবে” এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান বলেন, “দার্জিলিং জেলাতেই শিশুদের জন্য কোনও সরকারি হোম নেই। মূলত জমির অভাবে এতদিন ওই কাজ আটকে ছিল। এসজেডিএ-র পক্ষ থেকে হোম তৈরি করে দেওয়া হবে। কী ভাবে ওই হোম চালানো হবে সেটা সকলে মিলে ঠিক করা হবে।” মেয়র জানান, শিশু শ্রম বন্ধে তাঁরাও ধাপে ধাপে এগোতে চান। তিনি বলেন, “পরিকল্পনা করে এগোতে চাই। প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স নবিকরণের সময়ে শিশু শ্রমিক নিয়োগ না-করার ব্যাপারে মুচলেকা আদায় করা যায় কি না আলোচনা করব। তার পরে ধাপে ধাপে এগোব।” শ্রম দফতরের হিসেব অনুসারে, শিশু পাচার থেকে শুরু করে শিশু শ্রমের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে শিলিগুড়ি। পরিকাঠামোর অভাবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি পাচার হওয়া শিশুদের উদ্ধার করার পরে হোম না-থাকায় পুনর্বাসনের সমস্যায় পড়ছে। আবার সরকারি ভাবে শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় কত শিশু শ্রমিক রয়েছে তার কোনও পরিসংখ্যান নেই। এই পরিস্থিতিতে কর্মসূচি তৈরির জন্যই কর্মশালা হয়। যুগ্ম শ্রম কমিশনার বলেন, “শহরে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। তাহলে শিশু শ্রম, পাচার কেন বন্ধ করা যাবে না?” এ দিনের কর্মশালায় যোগ দেওয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শিশু শ্রম বন্ধে সরকারি উদ্যোগ নিয়ে নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয়। ওয়ার্ল্ড ভিশন সংস্থার বেঞ্জামিন খাসৌসা বলেন, “যাঁরা শিশু শ্রমিক নিয়োগ করেন তাঁদেরও সচেতন করা জরুরি। বিষয়টিতে সরকারি স্তরে গুরুত্বই দেওয়া হয় না।” দার্জিলিং লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার অভিযোগ করেন, প্রতিদিনই শিশুদের কাজের লোভ দেখিয়ে পাচার করা হয়। শিশু শ্রম বিরোধী যে আইন রয়েছে তাতে অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে না। কালিম্পঙে শিশু শ্রম রোধে কাজ করছেন বাল সুরক্ষা অভিযান সংস্থার সিস্টার সুদেষ্ণা থাপা। তাঁর অভিযোগ, শিশু শ্রমিক উদ্ধার করার পরে জেনারেল ডায়েরি নেওয়া হয়। মামলা করা হয় না। দার্জিলিং শহরে শিশু শ্রম রোধের কাজে নিয়োজিত অনুজা ঘোলে প্রস্তাব দেন, যে দোকানে শিশু শ্রমিক নিয়োগ করা হয় তার মালিককে সচেতন করা দরকার। দার্জিলিং জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান মৃণাল ঘোষ মনে করেন, ভুলত্রুটি নিয়ে মাথা না-ঘামিয়ে কী ভাবে এগোনো সম্ভব তা নিয়েই ভাবা দরকার। ফোসিন সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “শিলিগুড়িতে আমাদের সদস্যদের প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি শিশু শ্রমিক। তবে সব প্রতিষ্ঠানে যাতে শিশু শ্রম বিরোধী পোস্টার বা স্টিকার লাগানো যায় সেই ব্যাপারে উদ্যোগী হব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.