কোনও পদে এক জনের জায়গায় অন্য কেউ এলে আগেকার সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেওয়াটা সুস্থ চিন্তার পরিচায়ক নয় বলে মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট।
আদালতের বক্তব্য, একটি পদে আজ যিনি আছেন, বিভিন্ন কারণে কাল তিনি থাকবেন না। এটাই নিয়ম। তাই ব্যক্তি বদল হলেও বিনা কারণে আগের পদাধিকারীর নেওয়া কোনও সিদ্ধান্ত বদলে দেওয়ার বিষয়টি আদালত সমর্থন করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত। নতুন পরীক্ষা নিয়ামক এক ছাত্রকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত বদলে দিয়েছিলেন। বিচারপতি মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন, আগেকার পরীক্ষা নিয়ামকের সিদ্ধান্ত অনুসারেই আবেদনকারী ছাত্রকে পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে।
অনির্বাণ মজুমদার নামে কল্যাণী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্র জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পান। কিন্তু দ্বিতীয় সেমেস্টারে তিনি পদার্থবিদ্যায় প্রয়োজনীয় ন্যূনতম নম্বর পাননি। নিয়ম অনুযায়ী চতুর্থ সেমেস্টারের মধ্যে তাঁকে ফের পরীক্ষা দিয়ে কম নম্বর পাওয়া বিষয়টিতে উত্তীর্ণ হতে হবে। পুনরায় পরীক্ষায় বসার জন্য অনির্বাণ নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করেন। রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক তাঁকে ওই বকেয়া পরীক্ষার আবেদনপত্র পূরণ করে নির্দিষ্ট ফি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। তার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক-পদে বদল হয়। নতুন পরীক্ষা নিয়ামক এসে জানিয়ে দেন, অনির্বাণ বকেয়া পরীক্ষার আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন না, তার জন্য ফি-ও জমা দিতে পারবেন না। অগত্যা ছাত্রটি হাইকোর্টে মামলা করেন।
আবেদনকারীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, ৮ জুন, শুক্রবারেই চতুর্থ সেমেস্টার পরীক্ষা শুরু হবে। এক জন পরীক্ষা নিয়ামক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবিধি অনুযায়ী আবেদনকারীকে বকেয়া পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছিলেন। নতুন নিয়ামক এসেই তা খারিজ করে দেন। সুব্রতবাবু বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার বদল হয়। নতুন সরকার এসে কখনওই আগের সরকারের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিতে পারে না। একই ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক বদল হলে নতুন পদাধিকারী আগের সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারেন না।
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, পদাধিকারী বদল হলে আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে সায় দিতে পারে না আদালত। এ ক্ষেত্রেও দিচ্ছে না। আবেদনকারী ছাত্রটি যাতে চতুর্থ সেমেস্টার এবং আগের বকেয়া পরীক্ষায় বসতে পারেন, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন বিচারপতি। |