এক থেকে তিন, আশাবাদী বিজেপি
রাজ্যের ছয় পুরসভার ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে নিজেদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির ব্যাপারে আশাবাদী হচ্ছে বিজেপি।
ছয় পুরসভার মধ্যে কুপার্সে বিজেপি লড়েনি। বাকি পাঁচ পুরসভায় লড়ে তারা পেয়েছে তিনটি আসন। ধূপগুড়ির ৮, দুর্গাপুরের ১৩ এবং নলহাটির ৯ নম্বর ওয়ার্ড। তার মধ্যে ধূপগুড়ির ৮ নম্বর ওয়ার্ড গত বারও বিজেপি-র হাতে ছিল। কিন্তু বাকি দু’টি তারা এ বার দখল করেছে। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, ছ’টি পুরসভার মধ্যে তিনটি পুরসভায় একটি করে আসন পাওয়া খুব বড় সাফল্য নয়। তবুও এই ফল ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। কারণ, আসনের নিরিখে তাঁরা এক থেকে তিন হয়েছেন। আর প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হারের হিসাবে তাঁদের লাভ হয়েছে যথেষ্ট। এই দুই দিক বিশ্লেষণ করে বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, তৃণমূলের জনপ্রিয়তা ‘নিম্নগামী’ হতে শুরু করেছে এবং বামফ্রন্ট তাদের হৃত জনপ্রিয়তা ‘পুনরুদ্ধার’ করতে পারছে না। সুতরাং, এই শূন্যস্থান পূরণের সুযোগ এখন তাঁদের সামনে।
ধূপগুড়ির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর কৃষ্ণদেব রায়ই এ বার ফের দলের প্রার্থী হন। তিনি ১৬৪ ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়েছেন। গত বার তিনি জিতেছিলেন ৯৩ ভোটে। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ জানান, ধূপগুড়িতে তাঁদের ভোট আগের বার ছিল এক শতাংশ। এ বার বেড়ে হয়েছে আট শতাংশ। ওই পুরসভার ১১টি ওয়ার্ডে বিজেপি তৃতীয় এবং কংগ্রেস চতুর্থ স্থানে রয়েছে বলেও জানান রাহুল।
নলহাটিতে জয়ী বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে মিছিল। মঙ্গলবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
দুর্গাপুর পুরসভায় বিজেপি ১০ বছর আগে ২০০২ সালে একটি ওয়ার্ডে জিতেছিল। ২০০৭-এ আরএসপি তা তাদের থেকে ছিনিয়ে নেয়। এ বারও সেই ওয়ার্ডে তারাই জিতেছে। কিন্তু এ বার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড সিপিএমের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। রাহুল জানান, দুর্গাপুরে আগে তাঁদের ভোট ছিল ১.১২ শতাংশ। এ বার সেটা বেড়ে হয়েছে ৪.৩৮ শতাংশ। বিজেপি-র জেতা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিহার থেকে আসা বাসিন্দার সংখ্যা বেশি। গত পুরভোটে সেখানে কংগ্রেস এবং তৃণমূল প্রার্থী না দেওয়ায় কার্যত ‘একের বিরুদ্ধে এক’ লড়াইয়ে বিজেপি-কে প্রায় ১৩০০ ভোটে হারিয়েছিল সিপিএম। এ বার বিজেপি সেখানে যাঁকে দাঁড় করায়, সেই মনোজকুমার সিংহ রাজনীতির লোকই নন। পেশায় কেব্ল অপারেটর। বিজেপি তাঁর হয়ে তেমন প্রচারও করেনি। কংগ্রেস এবং তৃণমূল মিলে প্রায় ১৭০০ ভোট কেটেছে। চতুর্মুখী লড়াইয়ে সিপিএমকে ৩৩১ ভোটে হারিয়ে জিতেছেন মনোজবাবু।
বীরভূমের নলহাটি পুরসভায় বিজেপি এ বারই খাতা খুলল। সেখানে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীকে ২৭১ ভোটে হারিয়েছেন বিজেপি-র পূর্ণিমা ঘোষ। যাঁর স্বামী বিজেপি কর্মী গোপাল ঘোষ এলাকায় ‘পরোপকারী’ বলে পরিচিত। ওই ওয়ার্ডটি ছিল কংগ্রেসের হাতে। কিন্তু আগের কংগ্রেস কাউন্সিলর মাঝপথে পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝার সঙ্গে দল পরিবর্তন করে তৃণমূলে চলে যান। শেষমেশ অবশ্য তিনি তৃণমূলের সঙ্গও ছেড়েছেন। তাঁর জায়গায় এ বার অন্য প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু এই ‘টানাপোড়েনে’র খেসারত তাদের দিতে হয়েছে। ওই ওয়ার্ডে কংগ্রেস পেয়েছে ২৪২টি ভোট। অর্থাৎ জোট হলেও তারা পূর্ণিমাদেবীকে হারাতে পারত না। রাহুল জানান, নলহাটিতে তাঁদের ভোট শূন্য থেকে এ বার পাঁচ শতাংশে পৌঁছেছে। পাঁশকুড়া এবং হলদিয়াতেও প্রায় শূন্য থেকে শুরু করে এ বার বিজেপি ৫.৩৫% ও ৩.৫% ভোট পেয়েছে।
রাহুলের বক্তব্য, “এই ভোট থেকে পরিষ্কার, সিপিএম এবং কংগ্রেস শেষ। তৃণমূলের জনপ্রিয়তা কোথাও কমছে, কোথাও একই আছে। লাভ যা হচ্ছে, তা একমাত্র বিজেপি-র।” রাহুল আরও বলেন, “রাজ্য রাজনীতিতে একটা শূন্যস্থান তৈরি হচ্ছে। ছয় পুরভোটের ফলের এই ধারা বজায় থাকলে আমরাই ওই শূন্যস্থান দখল করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.