অর্থাৎ দক্ষিণবঙ্গে পৌঁছতে বর্ষাকে লম্বা রাস্তা পেরোতে হবে। আর মৌসুমি বায়ু নিকটবর্তী না-হলে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে প্রাক-বর্ষার বৃষ্টিও শুরু হবে না। মুর্শিদাবাদ-নদিয়া-উত্তর ২৪ পরগনার কোথাও কোথাও বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে বিক্ষিপ্ত, হাল্কা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও আলিপুরের আশঙ্কা, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে তাপপ্রবাহে বিরতি পড়বে না। আবহবিদদের অনুমান, আপাতত কলকাতা ও আশপাশে তাপমাত্রা একই থাকবে। অস্বস্তিও থাকবে তুঙ্গে।
বস্তুত কলকাতায় এ দিন অস্বস্তি-সূচক নতুন রেকর্ড গড়ে ৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে। মরসুমে প্রথম তাপপ্রবাহের আঁচও এ দিন টের পেয়েছেন কলকাতাবাসী। অথচ মঙ্গলবার তো কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.১ ডিগ্রির বেশি ওঠেনি! অর্থাৎ সোমবারের চেয়ে কম! তা হলে সোমবার না-হয়ে মঙ্গলবার তাপপ্রবাহ বইল কেন?
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের ব্যাখ্যা: গ্রীষ্মে কোনও জায়গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সে দিনের স্বাভাবিক সর্বোচ্চর চেয়ে ৫ ডিগ্রি বা বেশি বেড়ে গেলে তাকে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বলে। মাসে পাঁচ দিন অন্তর স্বাভাবিক সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বদলে যায়। সোমবার যেমন কলকাতার স্বাভাবিক সর্বোচ্চ ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ৩৫ ডিগ্রি। সেই নিরিখে এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিক সর্বোচ্চের ৫ ডিগ্রি উপরে। অর্থাৎ তাপপ্রবাহ।
তুঙ্গ অস্বস্তির প্রতিফলন পড়েছে বিদ্যুতের চাহিদাতেও। সিইএসসি-সূত্রের দাবি, এ দিন দুপুর তিনটেয় কলকাতায় বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়ায় ১৯০৪ মেগাওয়াট, যা নতুন রেকর্ড। সংস্থা-সূত্রের বক্তব্য: গত এক মাসে সিইএসসি-এলাকায় অন্তত ৪০ হাজার নতুন বাতানুকূল যন্ত্র বসেছে। ফলে চাহিদা হয়েছে লাগামছাড়া। বণ্টন কোম্পানি এ দিন সিইএসসি’র জন্য ৭৩৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে, যা এ মাসের রেকর্ড। তবে জোগানে ঘাটতি না-থাকলেও বাড়তি চাহিদার দরুণ বিভিন্ন এলাকায় ‘ফিউজ’ উড়ে যে বিভ্রাট ঘটছে, তা-ও মেনে নিয়েছে সিইএসসি। দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের বেশ কিছু অঞ্চল এ দিন স্থানীয় বিভ্রাটে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎবিহীন থাকে। সংস্থার আশ্বাস, বৃষ্টি পড়লেই সমস্যা কমবে।
|