নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যের আর্থিক স্বাস্থ্য ফেরাতে এ বার বিভিন্ন প্রকল্পে সরাসরি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সাহায্য চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই লক্ষ্যেই মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে গৃহীত হল ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) সংক্রান্ত রাজ্য নীতি’।
নতুন সরকার কোন কোন ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে কাজ করার অনুমতি দেবে, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই প্রস্তাবে। সরকারের পর্যটন, শিল্প-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, সেচ, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরী-সহ ১৮টি দফতরের ক্ষেত্রে এই পিপিপি নীতি কার্যকর করা হবে। মহাকরণ সূত্রে খবর, পরিকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ ডাকার আগে তা বিস্তারিত খতিয়ে দেখবে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি। মুখ্যসচিব ছাড়াও ওই কমিটিতে থাকবেন অর্থ, শিল্প-বাণিজ্য, পঞ্চায়েত, সেচ এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবরা। ওই কমিটির সিলমোহর পাওয়ার পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটি। তারাই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
এ দিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশ করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সরকারি দফতর এত দিন বিক্ষিপ্ত ভাবে ‘পিপিপি মডেল’-এ কিছু কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ‘চিরাচরিত উৎস থেকে (অর্থাৎ সরকারি বরাদ্দ থেকে) উন্নয়নের বিভিন্ন কাজ চালানোর সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ায় বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের মদত নিতেই হচ্ছিল’। কিন্তু এ নিয়ে সরকারের সামগ্রিক কোনও নীতি না থাকায় নানাবিধ বিতর্ক তৈরির সম্ভাবনা ছিল। সে কারণেই নতুন এই নীতি নিতে চলেছে রাজ্য। প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের কাজে সামিল হওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা যাতে পান, সে-জন্যই নতুন এই নীতি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিভিন্ন প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা তৈরির জন্য অর্থ দফতরে ‘পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ নামে একটি তহবিল গড়ে তোলা হবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির ঋণ-সাহায্যও থাকবে ওই তহবিলে। অর্থ দফতরের তত্ত্বাবধানে ওই পরিকাঠামো তহবিলের টাকায় বিভিন্ন দফতর পিপিপি মডেলে যে-সব প্রকল্প রূপায়ণ করতে চায়, সেগুলির সবিস্তার নকশা তৈরি করা হবে। তার কার্যকারিতা, পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পরে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হবে। |