|
|
|
|
জিতেও অস্বস্তি |
তৃণমূলের পুরপ্রধান নামলেন তিন নম্বরে |
আনন্দ মণ্ডল • পাঁশকুড়া |
হলদিয়ায় বিপর্যয়ের মধ্যেই ‘পরিবর্তনের আঁতুরঘর’ পূর্ব মেদিনীপুরে শাসকদল তৃণমূলের খানিক মুখরক্ষা করল পাঁশকুড়া। ২০০৭ থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে পুরবোর্ড চালাচ্ছিল তৃণমূলই। এ বার পুরভোটের মুখে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা ভেস্তে যায় তাদের। দু’দলই আলাদা লড়েছে। এবং সেই লড়াইয়ে শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে কংগ্রেসকে। তৃণমূল কিন্তু ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টিতে জিতে একক ভাবেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে (যেখানে গত বার জোট জিতেছিল ১০টি ওয়ার্ডে)। জোট ভাঙলেও নন্দীগ্রামের জেলায় তৃণমূল একলা চলার ক্ষেত্রে যে এখনও ‘দড়’, পাঁশকুড়ার ফলই তা প্রমাণ করছে। অন্য দিকে, বামফ্রন্ট গত বারের ৭ থেকে কমে মাত্র ৫টি ওয়ার্ডে সীমাবদ্ধ রইল।
হলদিয়ার ফলকেও অবশ্য জেলায় তৃণমূলের সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারী ‘বিপর্যয়’ বলে মানতে চাননি। তিনি বরং মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০০৭-এর পুরনির্বাচনে হলদিয়ায় তাঁদের প্রাপ্তি ছিল ৭টি ওয়ার্ড। এ বার বেড়ে হয়েছে ১১। বামেরাই বরং ১৯ থেকে কমে ১৫ হয়েছে। যদিও তিনি বলেননি, গত বছরের বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে হলদিয়াতে ১৫টি ওয়ার্ডে ‘লিড’ ছিল তৃণমূলেরই। ১১টি ওয়ার্ডে বামেদের। অর্থাৎ সঙ্কটে ছিল বামেরাই। লক্ষ্মণ শেঠের জেলবন্দি হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বামেদের সঙ্কট আরও বাড়বে বলে আশা করেছিলেন তাঁরা। গত শুক্রবার প্রচারের শেষ বেলাতেও ‘বিরোধীহীন’ হলদিয়া পুরবোর্ড গড়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন শুভেন্দুই। সেই তিনিই মঙ্গলবার হলদিয়ার বিপর্যয়কে লঘু করতে চেয়ে বরং পাঁশকুড়ার ফলকেই নন্দীগ্রামের জেলায় দলের ‘জয়ের ধারা অব্যাহত’ থাকার ‘প্রমাণ’ হিসাবে দাবি করেছেন।
কিন্তু লুকনো যাচ্ছে না তৃণমূল পুরপ্রধানের ভোটে হেরে যাওয়ার বিড়ম্বনা। পাঁশকুড়া পুরবোর্ড চালানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থতার প্রভূত অভিযোগ মাথায় নিয়েই হারতে হয়েছে পুরপ্রধান আব্দুল হাকিম খানকে। এমনকী নিজের ওয়ার্ডে (১১ নং) তিন নম্বরে শেষ করেছেন তৃণমূলের পুরপ্রধান! এই ওয়ার্ডে জিতেছেন সিপিআই প্রার্থী সুধাংশু শাসমল। দু’নম্বরে কংগ্রেস প্রার্থী নিতাই কাউ।পুরপ্রধানের এই হারের পাশাপাশি এ বার পুরপ্রধান পদের অন্যতম দাবিদার ‘ডাকাবুকো’ আনিসুর রহমানের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৮৯৬ ভোটে জয়ও অন্য প্রশ্ন তুলছে। এক সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে সিপিএমের ইচ্ছে মতো ভোট নিয়ন্ত্রণের ‘ফর্মুলা’ নিজের ওয়ার্ডে ‘ফলিত প্রয়োগ’ করেছেন প্রাক্তন এই ডিওয়াইএফআই নেতাএমন অভিযোগ বাতাসে ভাসছে। ভোট শেষে রবিবার বিকেলেই সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহি বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগ ছিল ১৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়েও। বিদায়ী পুরবোর্ডে বিরোধী দলনেতা তথা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী নকুল চাউলিয়া অভিযোগ করেছিলেন, অন্তত ১৫০ বাম-সমর্থককে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। নকুলবাবুকে হারতে হয়েছে মাত্র ৩৯ ভোটে। তৃণমূল নেতারা অবশ্য ভোটে ‘বাধা’র বা ‘ইচ্ছে মতো ভোটের’ অভিযোগ মানছেন না। তা বলে কি সত্যিই অস্বস্তি যাচ্ছে? |
|
|
|
|
|