নজরদারি ও উদ্যোগের অভাবে হেলায় নষ্ট হতে বসেছে আস্ত একটি কাজু বাগান। ফি বছর পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে কয়েক কুইন্টাল কাজু। চোরাশিকারিদের দাপটে রাতের অন্ধকারে চুরি হয়ে যাচ্ছে কাজু বাদামের গাছ। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে তপন ব্লকের পাহাড়পুর গ্রামে রয়েছে জেলার একমাত্র কাজু বাগান। ১৯৯৪ সালে ওই এলাকায় প্রায় ২৪ বিঘা সরকারি জমিতে কাজু বাদামের গাছ লাগায় বন দফতর। সেই সময় বাগানে একজন অস্থায়ী পাহারাদার রেখে ১৯ হাজার কাজু গাছের চারা লাগানো হয়েছিল। এরপর তিন বছরের মাথায় গাছে ফল আসতে শুরু করলে এলাকার বাসিন্দাদের অনুরোধে তৎকালিন বন দফতর ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জার বিমল হোম বালুরঘাটে একটি কাজু প্রসেসিং ইউনিট গড়ার উদ্যোগ নেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনি অন্যত্র বদলি হওয়ায় ওই উদ্যোগে ভাঁটা পড়ে যায়। পাহাড়পুর এলাকার বাসিন্দা দীনেশ হেমব্রম, জয়দেব ওরাও, বিজয় কুজুরেরা বলেন, “প্রথম দিকে কাজু গাছ লাগানোর পর বন দফতর কাজু চাষে অনেকটা উৎসাহী ছিল। এমন কী পাহাড়পুরের পাশে অভিরামপুর এলাকাতেও কাজু চাষ শুরু করেছিল। সে সময় ওই দুটি বাগান থেকে কাজু ফল বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিল বন দফতর। বাগানে মোতায়েন রেখেছিল পাহারাদার। কিন্তু আজ এসব অতীত। বর্তমানে কাঠ চোরেদের দৌরাত্ম্যে কাজু গাছ সাফ হয়ে যাচ্ছে। ফল পাকার আগেই চুরি হচ্ছে কাজু।” উদ্যান পালন দফতর সূত্রের খবর, সঠিক নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষনের মাধ্যমে ওই দুটি কাজু বাগান থেকে বছরে কমপক্ষে ৩০ কুইন্টাল কাজু উৎপাদন সম্ভব। তা থেকে বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর আদিবাসী অধ্যুষিত ওই এলাকার বাসিন্দারা ফের কাজু চাষের দাবিতে সরব হয়েছেন। তাদের মতে এলাকায় এক বিকল্প চাষের মাধ্যমে আলাদা এক অর্থনীতি গড়ে উঠলে গ্রামের চেহারা পাল্টে যেত। বালুরঘাটের বনবিভাগের রেঞ্জার দিবাকর আচার্য এই প্রকল্পে তাদের ব্যর্থতা স্বীকার করে বলেন, “ওই দুটি কাজু বাগানকে ঘিরে ইউনিট গড়ে তোলা গেলে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যেত।” আগামীতে যাতে মুখ থুবরে পড়ে থাকা কাজু বাদামের এই প্রকল্পটি চালু করা যায়। সে ব্যাপারে তিনি উদ্যোগী হবেন বলে জানিয়েছেন। |